গাড়িতে তারা দু'জন উঠেছে প্রায় মিনিট পনেরো হতে চলল। কতক্ষণ হতে চলল! কিন্তু বাস ছাড়ছেনা। তারান্নুম গালে হাত রেখে চিন্তিত মুখে বলল, 'বাস ছাড়ছেনা কেন সাফায়েত ভাই?'
সাফায়েত অপ্রস্তুত হয়ে হেসে বলল,
-"আসলে আমরা টাইমের একটু আগেই এসে পড়েছি। তাই দেরী হচ্ছে।"
-"আরো পরেই তো আসতে পারতাম তাহলে!"উত্তরের আশা না করে তারান্নুম আবারো বলল।
-"আমাদের খুলনা পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে?"
-"এই ধর দশ বারো ঘন্টা!"
-"তাহলে তো রাত হয়ে যাবে। ভাইয়াকে পাবো কীভাবে আমরা?"
-"তুমি চিন্তা করছো কেন? আমি আছি তো। যেভাবেই হোক খুঁজে বের করব তোমার ভাইকে।"সাফায়েত হাসল তারান্নুমকে দেখে। বাচ্চাদের মতো সে অনর্গল প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। খুশী মনে সাফায়েত ও একে একে উত্তর দিচ্ছে। খুলনা যাওয়ার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু এভাবে আচমকা আজ বলবে আর কাল চলে যেতে পারবে এমনটা তারান্নুম ভাবেনি। আড্ডার ফাঁকে তারান্নুমের ভাইয়ের প্রসঙ্গ আসতেই সে যাওয়ার প্রস্তাব রাখল। বাকি সবাই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত! এদিকে সাফায়েতের পরীক্ষা শেষ বলে বন্ধুগণ তাকে আর তারান্নুমকে ঠেলে খুলনা পাঠাতে উঠেপড়ে লেগে গেল। সবচেয়ে বেশী নন্দিনী। তারান্নুম চাইছিল মেয়েটাকে সঙ্গে করে নিতে। নাহলে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে যাচ্ছে দেখলে যে কেউই বাজে ইঙ্গিত দিবে। কিন্তু নন্দিনীর চাতুর্যতা সীমা ছাড়িয়ে বহুদূর হেঁটেই চলছে।কেউ যাতে সন্দেহ না করে তাই সে নিজের এক সিল্কের শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছে তারান্নুমকে।আজকাল নববিবাহিতা নারীরা সিল্কের দিকে ঝুঁকে পড়ছে বলে! ফুল হাতের ব্লাউজের সাথে আসমানী-বেগুনী রঙের মিশ্রণের চমৎকার এক শাড়ি তার পরনে। দু'হাতে দু'টো সাদা পাথরের বালা।খুব বেশী না হলেও তাকে অনেকটা নতুন বউয়ের মতোই লাগছে। মনে হচ্ছে নব দম্পতি দূরদেশ ভ্রমণে বেড়িয়েছে।
সাফায়েত আর তারান্নুমের সামনেই সিটেই বয়স্ক এক মহিলা বসেছেন। বাসে উঠার সময় তারান্নুমকে দেখে হেসেছিলেন। গাড়ি চললে বেশ আনন্দ লাগে তারান্নুমের৷ সবকিছু যেনো ঝড়ের বেগে ছুটছে তাদের সাথে। খালি রাস্তায় পাখিদের সমেত উড়ছে যেনো প্রতিটি যানবাহন। দিন ছোট হয়ে আসছে। শীত পড়তে শুরু করবে খুব তাড়াতাড়ি। দুপুর নেমে গেছে যেনো মুহূর্তের ভেতরই। রোদের আলোয় ঝলমল করছে বাসের প্রতি কোণা। সামনে থাকা বৃদ্ধা ঘাড় ফিরিয়ে তাকালেন দুজনের দিকে। 'সুন্দরী বৃদ্ধা!' মনে মনে বলল তারান্নুম।
ESTÁS LEYENDO
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romanceসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...