কোনো বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য শুভ দিন বলে কিছুই থাকেনা! মন যখন বলে এখনই সময়, সেদিনটাই শুভ। কিন্তু সেই আদি যুগ থেকে মেনে চলে আসা নিয়ম শৃঙ্খলা তো বদলায় না। যুগ যুগ ধরে মেনে চলা হয় সেসব। তাই আজ, শুক্রবারের দিনটাই বেছে নিয়েছে দু'জনে বিয়ের মতো একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য। ঘটা করে বিয়ে করার মতো সুযোগ, সামর্থ্য তো একদমই নেই কারুর। তাই ছোটখাটোভাবে মসজিদে আকদ করে কাজি অফিসেই বিয়ে করবে ঠিক করেছে। সাফায়েতের বিয়ে। বন্ধুবান্ধবরা উপস্থিত হবেনা এমনটা মোটেও নয়! নন্দিনীর হাতে মালা আর শাহনাজের হাতে তার নিজের বিয়ের ওড়না। পাশে দাঁড়িয়ে তার স্বামী মুগ্ধ চোখে দেখছে তাকে। একপলক তাকাল সে পাশে থাকা মানুষটার দিকে। ঠোঁটের কোণে আপনাআপনি একটা হাসি ছেয়ে গেছে তার। এই মানুষটাকে নিজের করে নিতে কিছুটা সময় লেগেছে তার। কিন্তু এখন মনেই হয়না যে মানুষটা নতুন কেউ। তারা যেন কত সময় ধরেই চেনে একে অপরকে! বলতে গেলে বেশ সুখেই আছে সে। শ্বশুর গত হয়েছেন বছরখানেক আগেই। শাশুড়ি ও বেশ মর্ডান। তার কোনো কাজে নাক গলায় না। নিজ বয়সী বান্ধবীদের নিয়েই দিন পার করেন। ননদের বিয়ে হয়েছে আরো আগে। দেবর দুজন পড়ে ঢাকার এক নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ে, থাকেও ওখানে।
নন্দিনী আর তারান্নুম হাসল শাহনাজের মুখের দিকে তাকিয়ে। জহির, সাফায়েত আর নাদিমের আসা এখনো বাকি। ওদেরই অপেক্ষা করছে দুজনে। আর তাছাড়া, বর ছাড়া বিয়ে হয় কি? মসজিদ থেকে তারা ফিরে এলেই কাজী অফিসে বিয়ে সম্পন্ন করবে দু'জনে।
-"নাজু শোন, আমরা না একটু ওপাশে যাচ্ছি। ওরা এলেই ডেকে নেব তোকে আর দুলাভাইকে।"
-"সে কি! আমাদের একা ফেলে যাবি তোরা?নন্দিনী আলতো করে শাহনাজের হাতে চিমটি দিল।
-"বেশী কথা বলিস। তুই একা না তো! দুলাভাই আছে। থাক এখানে।" মিষ্টি করে হাসল নন্দিনী।
শাহনাজ আর কিছু বলার সুযোগই পেল না। পাশের মানুষটা তার ওয়াদা রেখেছে। দূর করেনি তার বন্ধুবান্ধব থেকে তাকে। জীবনে বাঁচতে হলে অক্সিজেন আবশ্যকীয়, কিন্তু কিছু প্রাণ জীবনে থাকা বাধ্যতামূলক। নাহলে বেঁচের থাকার অর্থই খুঁজে পাওয়া যায়না! এমন মানুষ তার জীবনে এসেছে ভাবতেও তার বুকটা ভরে উঠে আনন্দে। অন্য কোনো পুরুষ হলে কি নিজের বউকে বিয়ের পর ও বন্ধু বান্ধবের সাথে মিশতে দিতো? হয়তো বা! কিন্তু এই ব্যাপারে সে ভীষণ ভাগ্যবতী। নরম মনের মানুষ বলাই যায় তার স্বামী মহাশয়কে। এই কয় মাসে একবার ও চেঁচিয়ে কথা বলেনি শাহনাজের সাথে। এক সুন্দর স্বপ্নের মতো চলে যাচ্ছে শাহনাজের বিবাহিত জীবনের সূচনা। মনে তার একটাই প্রার্থনা, সমাপ্তিটা যেন এর থেকে ও সুন্দর হয়!
ESTÁS LEYENDO
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romanceসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...