হেমন্তের হেম হেম বাতাসে ছেয়ে গেছে দেশের আনাচ কানাচ। চারিদিকে শুধুই শুষ্ক বাতাস আর পত্র পল্লবের উড্ডয়ন। গাছ গাছালি প্রায় খালি হতে চলেছে। কচি-বুড়ো সবুজ পাতাদের উড্ডয়ন হাঁক ছুড়ে বলছে, 'শোনো শোনো সবাই মন দিয়ে শোনো! নতুন অথিতি আসছে! নতুন এক রূপে সাজবে আবার এই বাংলা!' বাংলার এই ছয় ঋতুর বাহারে মুগ্ধ সারা বিশ্ববাসী। এই ছয় ঋতু দেখা যেনো তাদের জন্য স্বর্ণের তারা দর্শন করার সমতুল্য। অথচ বাংলার মানুষদের কাছে এই ছয় ঋতু হাতের মোয়ার মতো!দিনকাল কাটছে সবার বেশ ব্যস্ততায়। চারটা টিউশনির দু'টো বাধ্য হয়ে ছাড়তে হয়েছে সাফায়েতের। বাকি দু'টো রেখেছে হাতে সময় থাকার কারণে। আর টাকা ও এক বিশেষ প্রয়োজন সেখানে। কখন আবার তাদের মেয়াদ ও শেষ হয়ে আসে বলার যায়না। সহকারী প্রধান শিক্ষক সে অবশ্য এখনো পুরপুরি হয়নি। বছর প্রান্ত হতে এখনো অজস্র সময় হাতে। তাই জয়েন হয়ে কাজ শিখতে হচ্ছে আপাততর জন্য। তারর জন্য মাইনে ও সে বেশ ভালোই পাচ্ছে!
তারান্নুম নিষ্ঠার সাথে পালন করছে তার দর্জি কাজ। বড় বড় কাপড়ের সেলাই ও করে সে এখন। সারাদিন ঘরে বসে থাকাটা ছিল চক্ষুলজ্জার ও ব্যাপার তার জন্য। নন্দিনী বা ওর পরিবার ওরকম কিছু না বললে বা ইঙ্গিত না করলেও, তার নিজের ও তো বিবেক বলে কিছু আছে!
জহির ও কাজের খোঁজ করছে নিয়মিত। তার ইচ্ছা নিজের ব্যবসা শুরু করার। কিন্তু বাবার সামনে প্রস্তাব রাখতে হবে ভেবেই আগে থেকে তার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে। থরথর করে কাঁপে দু'পা। নাদিম দু'চারটা ব্যাংকে ইন্টারিভিউ দিয়েছে। অপেক্ষারত অবস্থায় ঘরের পায়চারি করা ছাড়া হাতে কিছুই করার নেই তার আর। বলে অলস মস্তিষ্ক কিছু না পেয়ে তাই ভাবে যা মন ভাবতে ও চায়না! তার মন ও উড়ে উড়ে চলে যায় ওই মেয়েটার ভাবনায় যার ফুটে গেছে বিয়ের ফুল।
শাহনাজের হাতে আছে অফুরন্ত সময় এখন। বিয়ের বাজার ও করা শেষ প্রায়। পরশু তার হলুদ মাখা, তারপরের দিনই বিয়ে! বিয়ের কথা শুরু হওয়ার আগ থেকেই মা গড়গড় করে বলেছিল, 'তোর এই পড়াশোনা, চাকরী বাকরীর তোয়াক্কা আমরা করিনা। বিয়ে দিবো, সংসার করবি মন দিয়ে! এটকুই জানি।' বিয়ে নামক বন্ধন জন্মের পরপরই একটা মেয়ের কপালে আবিরের মতো লেপ্টে দেয়া হয়। এক কড়া রঙা আবির। যার রঙ মলিন হলেও, সম্পূর্ণরূপে যায়না কখনোই । বিয়ে করতেই হবে এটুকুই জানে সবাই! এরপর টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব বাপু তোমার শুধু। না টিকলে দোষ তোমারই! সমাজের চোখে এই জিনিস হয়ে গেছে একপ্রকার সমোঝতা আর পাত্র পাত্রীর জন্য নিজের স্বপ্ন, আশার বলিদান। ভালো লাগুক আর নাই লাগুক, করতে হবে বাপু!
ESTÁS LEYENDO
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romanceসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...