পর্ব ২৮

153 12 4
                                    

দুই মঞ্জিলের গল্প
পর্ব ২৮

লেখাঃ ওয়াসিমা মাহফুজ

ইংরেজিতে খুব সুন্দর একটা উদ্ধৃতি আছে। 'Life is not a bed of roses.' যার অর্থ অনেকটা এমন দাঁড়ায় যে জীবনে যত না আছে সুখের পরিমাণ, তার থেকে বেশীই আছে দুঃখের। সেই সুখ ও পাই আমরা অনেক কষ্টের পর। অনেকের ক্ষেত্রে অবশ্য এই সুখ বাচ্চার হাতের মোয়ার মতো। কেউ কেউ সোনার চামচ নিয়ে জন্ম হয়, আবার কেউ কেউ সহজ পদ্ধতিতেই লাভ করে সেইসব সুখ। সাফায়েতের জীবনটাও ঠিক তেমন। কিন্তু তারতম্য এটাই যে, আজ অব্দি খুব কম সুখই পেয়েছে সে। ঝড় বৃষ্টি তুফানে ভরা জীবন তার। সুখ বলতে গেলে দেখতেও পায়নি সে মা বাবা গত হবার পর থেকে। তবে, তারান্নুম নামের ফুলটার আগমনের পর থেকে সে বুঝতে শিখেছে সুখ কি, মায়া কি! আর এই সুখের মায়া সে মৃত্যু অব্দি ছাড়তে পারবেনা সে। সে চায় এই সুখেই মৃত্যু হোক তার।

-"সব কি নেয়া হয়েছে?" সাফায়েত টাকা দিতে দিতে বলল।
-"সব? ইয়ে মানে মনে পড়ছেনা। আপনার মনে আছে?" ভয়ে ভয়ে বলল তারান্নুম।

সাফায়েত হেসে দিলো মেয়েটার দিকে দেখে। অদ্ভুত লাগল তার।

-"কি হয়েছে?শরীর খারাপ লাগছে? মন খারাপ?"
-"না। খারাপ লাগার মতো কি কিছু হয়েছে?"
-"তাহলে এমন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছো কেন? কথা বলো আমার সাথে।"

চারিদিকে জ্বলছে হাই পাওয়ারের সোডিয়াম লাইট। হলদে আলোদের ভিড়ে তাকে নীল রঙের ধলাঘাড় মাছরাঙা পাখির মতো লাগছে , যার অপর নাম সবুজাব মাছরাঙা। চমৎকার দেখাচ্ছে মেয়েটাকে। মুখে নেই কোনো প্রসাধনী, কিন্তু তার মুখের রাজ্য জয়ের হাসি করে তুলেছে তাকে আরো লাবণ্যময়ী। রাস্তা পার হলে কিছু দূরে একটা বাড়ি। সেই বাড়ির পাশেই এক মহিলা চিতই পিঠা বিক্রি করতে বসেছে। ছোটখাটো ভীড় ওখানে। তারান্নুমকে দাঁড় করিয়ে সাফায়েত সেই মহিলার থেকে বেশ কিছু পিঠা আর চার পাঁচ রকমের ভর্তা নিলো। বাইরে আজ অনেক ঠান্ডা, সাথে আছে বাতাস ও। সেই বাতাসের আঁচ গায়ে লাগতেই ঠাণ্ডা অনুভব করল তারান্নুম। শালখানা ভালোভাবে জড়িয়ে নিলো। ঠোঁটজোড়া আলতো করে কেঁপে কেঁপে উঠছে তার। ঠরঠর করে কাঁপছে সে। ছোটবড় চুলগুলো ও দুলছে হাওয়ায়।

দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)Donde viven las historias. Descúbrelo ahora