পর্ব ১৪

127 6 0
                                    

এতক্ষণ ধরে তারান্নুম শাহেদুল আলমের ব্যাপারে সব কথা তুলে ধরলো বোনের সামনে। সব শুনে বিস্মিত চোখে বোনের দিকে তাকিয়ে তৃণা চেঁচিয়ে বলল,

-"মাথা খারাপ তোর? বাবা তোকে সাফায়েত ভাই থেকে দূরে রাখার জন্য ঘরে বন্দী করে রেখেছে বলে এমন ফালতু কথা বলবি তুই বাবার নামে? তুই তো দেখি আপা সাফায়েত ভাইয়ের জন্য বেহায়াপনার সব সীমাই অতিক্রম করে যাচ্ছিস!"

ছোট ভাই-বোনের মুখ থেকে কোনো ভাইবোনই এমন কুরুচিপূর্ণ ভাষা প্রত্যাশা করেনা। বোনের থেকে 'বেহায়াপনা' উপাধি পেয়ে ও কথাটা তারান্নুম গায়ে মাখল না। চুপ করে হজম করে গেল। কিন্তু এই সময় তার জন্য এটা খুব দরকার যে তৃণা তার বাবার আসল চেহারাটা দেখুক। একজন যত্নবান, অনুরাগী, সদ্বংশীয় ব্যক্তিত্বের পেছনে লুকিয়ে থাকা শয়তানরূপী মুখোশধারী মানুষটার চেহারার খোলাসা হওয়াটা জরুরি। নাহলে যে দিনের পর দিন তার অত্যচারে, অনাদারে বসবাস হবে দুই কন্যার! কিন্তু তৃণাকে বোঝায় কীভাবে সে এই কথা? তৃণা যে মানতে নারাজ!

বোনকে শান্ত স্বরে আবারো বলল,

-"আমার কথার বিশ্বাস কর তৃণু। আমি মিথ্যা বলিনা। অন্তত তোকে না...এক রত্তি ও না।"
-"চুপ কর তো আপা! আর একটা কথা ও বলবিনা তুই।"
-"তৃণু! আমি মিথ্যা বলছিনা। নিজের কানে শুনেছি আমি।"
-"এই প্রেম তোকে অন্ধ করে দিয়েছে আপা।আর বলিস না প্লিজ! তুই যে কি! উফ...নির্লজ্জ আর কাকে বলে!"

তারান্নুম আর সহ্য করতে না পেরে বোনের গালে চড় লাগিয়ে দিলো। সজোরে থাপ্পড় দেয়াতে বেশ ভালোই চোট লাগে তৃণার। থাপ্পড়ের ব্যাথায় ককিয়ে উঠল সে। চোখজোড়া লাল টকটকে হয়ে চোখের সাদাকালো অংশে পানি টলমল করছে তার। কিচ্ছুক্ষণ পর সেন্স ফিরে পেয়ে কাঁপা কাঁপা অস্ফুট স্বরে বলল,

-"তুই-তুই আসলেই ভুল পথে পা বাড়িয়েছিস। বাবা বলেছি-ল তোর থেকে দূরে থাকতে। আজ বুঝেছি কেন বলেছিল। তুই আর তোর বেহায়াপনার ছায়া আমি আমার ওপর পড়তে দেবোনা আপা! তোর কথা আমি বিশ্বাস করবোনা কিছুতেই।"

ধড়াম করে দরজা লাগিয়ে তৃণা প্রস্থান করল। বোনের থেকে এমন ব্যবহার পাবে, এমনটা কখনো আশা করেনি তারান্নুম৷ অসহায়ত্বের কাছে সে হেরে গেছে যেনো আজ। যতদূর চোখ যায় তার ততদূরই সে দেখে খালি অন্ধকার আর অনাশ্রয় । তার কিরণ দরকার। আশার কিরণ৷ কোথায় পাবে সে এই কিরণ? কে হবে তার রক্ষাকারী?  কেউ কি কখনো এগিয়ে আসবে তাকে উদ্ধার করতে এই নরক থেকে?

দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)Hikayelerin yaşadığı yer. Şimdi keşfedin