আজ একটি বিশেষ দিন। সাফায়েতের পরীক্ষার ফলফাল ঘোষণার দিন। তার কঠোর পরিশ্রমের পারম্পার্যের দিন আজ। উদ্বেগে তার চেহারাখানা ঝুলে পড়েছে। এক রুমে বসে আছে সে। দাঁতে নখ খুটছে। মাঝে মাঝে চায়ের কাপে চুমুক ও দিচ্ছে। সাথে অপেক্ষা করছে বান্ধবী আর সরকারী কর্মকর্তার আসার।
অন্যদিকে তারান্নুম আর বাকি সবাই ফলাফল আসার আগেই আধা কেজি গুড়ের নাড়ু নিয়ে এসে হৈহৈ রৈরৈ শুরু করে দিয়েছে। সবাই যার যার কাজ ফেলে ছুটে এসেছে চিলেকোঠার এই ঘরে। মদিনা খালার থেকে আধা দিনের ছুটি চেয়ে নিয়েছে তারান্নুম খুশী ভাগাভাগি করে নিতে। নিতান্তই মদিনা খালা ভালো বলে ছুটি মঞ্জুর করেছেন সবেমাত্র কাজে সংযুক্ত হওয়া কর্মীর। খুশীতে সে আজ শাড়ি পড়েই এসেছে। শাহনাজের অবশ্য আসার এখনো বাকি৷ খুলনা থেকে এসে সাফায়েত আর তারান্নুম খবর পায় শাহনাজের জন্য নাকি পাত্র দেখা হচ্ছে! তার পর থেকে শাহনাজের সাথে আর কারো দেখাই হয়নি। শুধু কথাই হয়েছে। তাও আবার নন্দিনীর!তারান্নুম রান্না করছে আজ। তার সহকারী হয়েছে জহির। দুপুরের খাবার আজ সবাই একই সাথে খাবে এখানে। কষানো মুরগি, শিম আলুর ভাজি, ডাল আর সাদা ভাত! নন্দিনী বসে বসে পায়ে নুপুর ধরছিল। জহির তার উদ্দেশ্য বলে উঠল,
-"এই নন্দি! তুই ব্রাহ্মণ হলি না কেন রে?"
নন্দিনী বিস্ময়কর দৃষ্টি নিয়ে তাকালো।
-"আমি ব্রাহ্মণ হলে কি তুই টিকি গজাতি?"
টিকিতে জহিরকে লাগবে কেমন তা ভেবেই নন্দিনী, তারান্নুম আর পাশে থাকা নাদিম হেসে উঠল। তিনজনের দিকেই জহির তাকিয়ে গলা ঝেড়ে বলল,
-"টিকির কথা বলেছি? তুই ব্রাহ্মণ হলে আমরা তোকে দেখিয়ে দেখিয়ে মুরগি খেতাম। ব্রাহ্মণদের তো আবার মুরগি খাওয়া বারণ।"
নন্দিনী হাই তুলতে তুলতে বলল,
-"ক্ষুধার্ত কুকুরের খাবারের দিকে নজর দিতে নেই! পাপ হয় পাপ। পরে দেখা যাবে কুকুরের মত চেটেই খাচ্ছি।"
হাসতে হাসতে নাদিম বলল,
-"থাম দেখি তোরা। খাবার আগেই পেট ব্যাথা করে দিবি। এই জহির! তুই কেন যেচে গিয়ে গালি খাস নন্দির কাছ থেকে বলতো দেখি?"
-"কুকুর সবই খায়! গালি জুতা যা পারে তাই!" নন্দিনী হাসতে হাসতে বলল।
ESTÁS LEYENDO
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Romanceসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...