ভ্রমণ থেকে দুজনে একসাথে ফিরেছে দিন কতক হতে চলল। কিন্তু ঘোরের ভেতর যেনো এখনো বাস করছে মেয়েটা। হয়তো ভাইয়ের খোঁজ না করলে কখনো জানতেই পারতো না সে কেন চলে গিয়েছিল। ওদিকে সাফায়েত স্বর্গের গগনপ্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারান্নুমের সাথে সময় কাটাতে পেরে। তার কাছে যেন পুরোটাই একটা স্বপ্ন এখনো।
তারান্নুম ও নিজের মতো করে চলছে। ছোট্ট একটা দর্জির দোকানে সেলাই কাজ করতে শুরু করেছে খুলনা থেকে আসার দিন কয়েক পর। পাঁচ ছয় দোকান ঘুরে এই জায়গায় কাজ পায়। মেয়ে কারিগর বলে কেউ রাখতে চায়নি তাকে। এটা এক মহিলার দোকান। মহিলার নাম মদিনা খাতুন! তারান্নুমকে উনার পছন্দ হওয়ায় তিনি রাখতে আর বিলম্ব করলেন না। ওদিকে সাফায়েত অপেক্ষায় আছে তার পরীক্ষার ফলাফলের। চিন্তায় মাথা ভার হয়ে ঘুম হয়না তার। কবে এসব কষ্ট থেকে রেহাই পাবে, কবে একটা ভালো চাকরি জুটবে কপালে এই চিন্তা তার। এই অবস্থায় ও দিব্যি করে যাচ্ছে চার চারটা টিউশনি। আজকাল তো আবার নতুন করে কোচিং শুরু হয়েছে। সেই কোচিং অনেকটা প্রাইভেট টিউটরদের ভাত মেরে দিচ্ছে বললেই চলে। বন্ধুরা তো থাকেই সবসময়। হারুন ও মাঝেসাঝে এসে দেখে যায় তাকে। পুরোনো বন্ধুত্ব বলে কথা।
.
-"খালা তারা না, তারান্নুম।"
-"কি কইলি মাইয়া?"
-"তারান্নুম, তারান্নুম আমার নাম!" চেঁচিয়ে বলল সে খালার কানের পাশে।
মদিনা খালা কথা শুনেও পান মুখে পুরে নিয়ে চিবুতে শুরু করলেন। ছুরতা দিয়ে একের পর এক সুপারি কেটেই যাচ্ছেন তিনি৷ কিছুক্ষণ পর পায়ের কাছে পড়ে থাকা ছোট কলসি নিয়ে তাতে পানের পিক ফেললেন। হেসে তারান্নুমের দিকে চেয়ে বললেন,
-"দেখ মা, আমার বাপ মায় আদর কইরা নাম রাখছে মদিনা খাতুন। এইখানের সব পোলা মাইয়ার মায় বাপ ও রাখছে হেগো নাম৷ হ?"
তারান্নুম মাথা ঝাঁকালো। কর্মরত আরো কিছু মেয়ে কাজ থামিয়ে দুজনের দিকে অধীর আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে।
-"এই মাইয়া পোলাগোর নতুন নাম আমি দেই। নিজের নামডাও মদিনা থেইক্কা মদি খালা রাখলাম৷ সবাই আমারে মদি খালা নামে চেনে। ক্যান করলাম এমনডা? কারণ আমি তাগো খুব ভালা পাই, যেমনডা নিজেরে পাই! নিজের ছাওয়ালগোর থেইকা কম ভাবিনা কাউরে আর হইল আমি অল্প কথার মহিলা। লম্বা কইরা কিছু কইনা হেল্লাইগা সবার নাম ও ছুড ছুড কইরা দিছি। তাত্তাড়ি ডাইকতে সুবিধা হইবো! এইটা আমার আদর করবার তরিকা।"
VOUS LISEZ
দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)
Roman d'amourসময়কাল ২০০০ সনের আশে পাশেই। কিছু সুখবতীদের গল্পের মাঝে ঢাকা পড়ে যায় দুঃখবতীদের গল্পগুলো। দুই দুঃখবতীর আপ্রাণ চেষ্টা এক হওয়ার। কিন্তু হায়, কেউ কি এটুকু ও বুঝেনি যে সমাজ ভালোবাসাকে খুনের মত পাপ বানিয়ে দেয়? যতদিন ঘনায়, ততই কেন দুঃখদের ভেলা চেপে বসে দুঃ...
