পর্ব ১১

141 9 0
                                    

রাত যায় দিন আসে। আসে মৌসুমের বাহার। বদলায় সময়কাল, আবহাওয়া, আর মানব-মনের স্থিতি-পরিস্থিতি। আছে এখনো সবকিছু আগের মতই। কিন্তু তাও যেনো এসেছে সবকিছুতে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন। দেড়টা বছর কেটে গেছে মাঝে দিয়ে। দেড়টা বছর কম সময় না! সময় নাকি বাতাসের বেগে ছুটে বেড়ায়। আসলেই তাই হয়তো। এইতো মনে হলো সেদিন না মাত্র জোহরা সারোয়ার মারা গেলো এরপর কত ঝড়ঝাপটা গিয়েছে সবার ওপর। শোকের ছায়া ঘুরপাক খাচ্ছিলো শাহেদুল আলম আর উনার দুই কন্যার মাথার ওপর। সব ঝড়ঝাপটা কাটিয়ে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করেছে এখন সবাই।

সাফায়েতের আর থাকা হলোনা এ বাড়িতে। একদিন হয়তো এমন হওয়ার কথা ছিলোই! বেশ ভালোই কথা-কাটাকাটি হয়ে গেছিলো কিছু সময় আগে চাচীজানের সাথে তার। তারপর যে রাগের মাথায় সবকিছু নিয়ে ছেড়ে গেছে, এরপর আর ফেরেনি থাকার জন্য। এখান থেকে একটু দূরেই একটা মেসে উঠেছে। মাঝে মাঝে ঘুরতে আসে। দেখা করে যায়৷ কিন্তু সেটা দোতালা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত! চাচাজান বাইরে থাকলে দেখা হয়। বলতে গেলে চাচীজান ছাড়া বাদবাকি সবার সাথেই এখনো দেখা সাক্ষাৎ হয় তার৷ চাচীজানের সাথে দেখা করা নিয়ে তার কপালে দুশ্চিন্তার কোনো রেখা অবশ্য এখন অব্দি ভেসে উঠেনি। কিন্তু তারান্নুমকে প্রতিটা সময় দেখতে না পাওয়ার কষ্টটা কুঁড়েকুঁড়ে খায় তাকে ভেতর থেকে।সময় এতটাই কেটে গেছে যে তার বিসিএস দেয়ার সময় ও চলে এসেছে। এই বছরই দিয়ে দিবে।

তারান্নুমের সাথে রোজ হয় তার দেখা। কিন্তু তাও সকাল থেকে রাত অব্দি নয়! সেই দেখা সীমিত সময়ের জন্যই। খানিক্ষন রিক্সায় ঘুরাঘুরি করে তারা, এরপর কখনো যায় নদীর ধারে খোলা হাওয়ায় প্রাণ জুড়াতে বা কখনো সর্বজনীন গ্রন্থাগারের পাশের ছোট্ট দোকানগুলোয় খেতে খেতে গল্পগুজব করতে। অনার্সের চাপ ও ভালোই যাচ্ছে তারান্নুমের ওপর। কিন্তু তাও মেয়েটা হেসে খেলে দিন পার করে যায়। ভার্সিটি থেকে ফিরে রান্নাবান্না করে, কখনো আবার একা বসে অনেক কিছুর ভাবনায় বিভোর থাকে। তার বেশীরভাগ ভাবনা জুড়েই বাস করে সাফায়েত। সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় তারান্নুম কিছু বলেনি মুখ ফুটে। কিন্তু খুব কেঁদেছিলো সেই রাত! তার সেই দুঃখময় সময়টায় পাশে ছিলো তার তৃণু।

দুই মঞ্জিলের গল্প(completed ✅)Hikayelerin yaşadığı yer. Şimdi keşfedin