(১) বলদা

2.2K 3 0
                                    

আসসালামুয়ালাইকুম।

আমি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আপনার সহিত পরিচয় হইয়াছিল,আশাকরি নাদানকে ভুলেন নাই। যাহা হউক পত্র বাহক বলদাকে আপনার নিকট পাঠাইলাম।সে বছর তিনেক আগে রাস্তা বানাইবার কাজে এখানে আসে।এখন রাস্তার কাজ সম্পুর্ণ বলদেব এখন বেকার। তাহার যাইবার কোন জায়গা নাই।লোকটি অতিশয় কাজের এবং পরিশ্রমী।আমি কিছুদিন ইহাকে রাখিয়াছিলাম আর তার খোরাক জোগাইতে পারিতেছিনা।আপনারা শহরের মানুষ হরেক রকম কাজ সেখানে যদি কোন রকম কিছু ব্যবস্থা করিতে পারেন তাহা হইলে লোকটি বাঁচিয়া বর্তিয়া যাইতে পারে। সালাম জানিবেন।যদি অপরাধ হয় নিজগুনে মার্জনা করিবেন।

আরগুরজার
আনিসুর রহমান

চিঠি পড়া শেষ করে মোবারক সাহেব চোখ তুলে পত্রবাহকের দিকে তাকান।২৪/২৫ বছরের জোয়ান গালে রুক্ষ দাড়ি বিশাল বুকের ছাতি আলিশান শরীর ছয়ফুটের মত লম্বা গরুর মত নিরীহ চোখ, নিশ্চিন্ত ভঙ্গী।কাজ-কাম নেই তাও নির্বিকার ভাব। বেপরোয়া ভাবখানা মোবারক সাহেবের অপছন্দ। ইতিমধ্যে বিধবা বোন মানোয়ারা চা দিয়ে গেলেন। অচেনা লোকটিকে দেখে মানোয়ারা কৌতুহলবশতঃ দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে পড়েন।

–তোমার নাম বলদ?
–জ্বি
–নামের মানে জানো?
–জ্বি, ঐটা আমার প্রকৃত নাম না।
–কয়টা নাম তোমার?
–জ্বি আমার নাম বলদেব। সাহেব ভালবেসে আমারে ঐনামে ডাকেন।
–ভাল-বেসে ডাকে ? মোবারক সাহেব অতি কষ্টে হাসি সামলান।
–জ্বি। আমি বলদের মত খাটতে পারি।দুধ দিতে পারি না,খালি খাই।

মানোয়ারার পক্ষে আর হাসি চাপা সম্ভব হয় না।হাসি চাপতে গিয়ে কাশি মেশানো অদ্ভুত শব্দ করল। মোবারক সাহেব বিরক্ত হন।মেয়েদের উচা গলায় হাসা পছন্দ করেন না।

–তুমি কি কাজ জানো?গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করেন।
–জ্বি কোন কাজ জানি না।

বিরক্তি সহকারে মোবারক সাহেব বলেন,তাইলে আসছো কেন?
–প্রধান সাহেব পাঠাইলেন।
–তুমি তো হিন্দু?
–জ্বি।
–মুসলমান বাড়িতে কাজ করতে আপত্তি নাই?
–প্রধান সাহেবও মোছলমান আছিলেন।
–ও।তুমি ল্যাখাপড়া কতদুর করেছো?
–জ্বি মেট্টিক পাশ।
–কি কাম তোমার পছন্দ?
–মেহেরবানি করে যে কাম দিবেন।
–সকালে কিছু খাইছ?
–জ্বে না।
–ক্ষুধা লাগে না?
–চাইপা রাখছি।

মন যা চায় তুমি তাইWhere stories live. Discover now