(২৭) উদ্দেশ্যহীন সময়

189 2 0
                                    

বলদেব উঠে পড়ে। আজ আর আম্মুর সাথে দেখা হলনা।সকালে দেখা করলেই হবে। বেসিনে মুখ ধুতে গিয়ে আয়নায় নিজের মুখ দেখতে পেল। কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে প্রতিবিম্বের দিকে। সে কি বদলে যাচ্ছে? কাল যে বলদেব ছিল আজ কি সে আছে? আজ যতটুকু বদলেছে তার জন্য দায়ী কে? সব কিছুর পিছনে মণ্টির সযত্ন প্রয়াস সে কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।মণ্টি না থাকলে আজও তাকে সরকারী অফিসের পিয়ন হয়ে দিন কাটাতে হত। খড়কুটোর মত ভেসে ভেসে চলছিল জেনিফার আলম তাকে দেখালেন নতুন জীবনের দিশা। তার কথাও আজ আর তেমন মনে পড়েনা। একসময় প্রতিদিন দেখা হত কথা হত। জীবন বড় বিচিত্র, পরের সিড়িতে পা রাখতে আগের সিড়ি থেকে পা তুলে নিতেই হবে, না-হলে একই জায়গায় থাকতে হবে স্থির।

কি করছেন এতক্ষন? কাত হয়ে শুয়ে শুয়ে ভাবছেন গুলনাহার। এত সময় লাগে খেতে? চাষার মত কাড়ি কাড়ি খায়, এমন বেহায়া। মনে হল এখন ঢুকলো। মটকা মেরে পড়ে থাকেন গুলনাহার।

বলদেব ঢুকে দেখল মণ্টি শুয়ে আছে বিছানায়, ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি? লাইট জ্বালতে গিয়েও সুইচ থেকে হাত সরিয়ে নিল। অন্ধকারে পোষাক বদলায়। আজকের কথা সব বলবে মণ্টিকে, তার কাছে কোন কথা গোপন করা ঠিক না।

বিছানায় উঠে পাশে শুয়ে আদরের সুরে ডাকে, মণ্টি ঘুমিয়ে পড়লে?
কোন সাড়া পাওয়া গেলনা। বলদেব মনে মনে হাসে, তারপর বলে, জানো ড.এমবি কথা দিয়েছেন আমাকে থিসিস করার সুযোগ দেবেন। আমাকে খুব পছন্দ করেন।

গুলনাহারের গা জ্বলে যায়। এই মহিলার নাম তাহলে মৌসম? বড় মুখ করে আবার তার কথা বলছে?মানুষটাকে মনে হয়েছিল সহজ সরল এখন বুঝতে পারছেন সে সব ভান।

মণ্টির ইচ্ছে সে অধ্যাপনা করুক। এই খবরটা দিলে খুব খুশি হবে ভেবে পাশ ফিরে ডান হাত দিয়ে কাধ ধরে বলে, মীরপুরের একটা কলেজে–। কথা শেষ হবার আগেই এক ঝটকায় বলদেবের হাত সরিয়ে দিয়ে বলেন, গায়ে হাত দিবেন না। মাঝরাতে মাতালের প্রলাপ ভাল লাগতেছে না।
–প্রলাপ না সত্যি–।
–আমাকে কি ঘুমাতে দিবেন? ঝাঝিয়ে ওঠেন গুলনাহার।

মন যা চায় তুমি তাইWhere stories live. Discover now