(৯) অতিথি

306 1 0
                                    

দুলুমিঞা, বলদেব অফিস চলে গেছে সায়েদও বাড়িতে নেই কলেজে। মুমতাজ স্কুল থেকে ছেলেকে আনতে গেছে ফেরার সময় হয়ে এল।একতলায় কেউ নেই। রহিমাবেগম নাতিকে নিয়ে বাড়িতে একা। বলদেবের বাগান দেখছেন ঘুরে ঘুরে।বনুর নজর ফুলের দিকে,হাত বাড়িয়ে ছিড়তে যায়।সারাদিনের ব্যস্ততায় কোন কিছু ভাবার অবকাশ মেলে না।এইসময়টা নানা চিন্তা আসে ভীড় করে। কর্তার বড় আদুরে ছিল টুনটুনি। ইচ্ছা ছিল ল্যাখা পড়া শিখে বিদুষি হবে মেয়ে। সেই জন্য নাম দিয়েছিল ফারজানা। ছোটবেলা থেকেই জিদ্দি,মানায়ে নিতে পারেনা।বিয়ের পর বাড়িটা নিঝুম হয়ে গেল।

কি সুন্দর পরিস্কার করে বাগান করেছে বলা। একেবারে তার সায়েদের মত ধর্ম নিয়ে মাথা ব্যথা নেই।শুনেছেন কোন এক হিন্দু মেয়ের সাথে নাকি খুব ভাব। যতদিন যাচ্ছে বলার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছেন তিনি।আহা! বেচারির মা নাই কথাটা তাকে বেশি করে আপ্লুত করে। যখন আম্মু বলে ডাকে বুকের মধ্যে অনুভব করেন এক অনাস্বাদিত শিহরণ। দুলুমিঞাকে বলেছেন বলাকে এই ঈদে একটা পাঞ্জাবি কিনে দিতে।তার জামাইটা যদি বলার মত হত।

একদিনের কথা মনে পড়ল।অফিসে বেতন হয়েছে ‘আম্মু আম্মু’ করতে করতে একবাক্স মিষ্টি নিয়ে হাতে দিয়ে বলল,আম্মু কতটাকা দিব?
–কিসের টাকা?
–এইখানে থাকি-খাই–।
–তোমার মিষ্টি ফিরায়ে নেও।এ আমার গলা দিয়ে ঢুকবে না।

ঝর ঝর করে কেদে ফেলল পোলাপানের মত।পা জড়িয়ে ধরে বলল,আম্মু আমার গোস্তাকি এবারের মত মাপ করে দেন–।

মনেহয় দাদুভাই আসতেছে।আঁচলে চোখ মুছে নাতিকে কোলে নিয়ে এগিয়ে গেলেন রহিমা বেগম।মুমতাজের হাতে স্কুল ব্যাগ সামনে লাফাতে লাফাতে ঢোকে মনু।সবাই উপরে উঠে গেল।

বেলা গড়াতে থেকে।সুর্য হামা দিয়ে মাথা উপরে।বনুকে নিয়ে মুমতাজ ডুবে গেছে গভীর ঘুমে।দাদিজানের কোলের কাছে শুয়ে মনু,ঘুম আসে না চোখে।গায়ের উপর থেকে দাদিজানের হাত সরিয়ে দিয়ে চুপিচুপি উঠে বসল।পা টিপে টিপে নেমে এল নীচে।মাস্টারসাবের বাগানে ফুল ফুটেছে। গাছের ডালে পাখিরা বসে বিশ্রাম করছে। অবাক চোখ মেলে দেখে কে যেন আসছে? আরে ফুফুজান না?
–আরে ফুফু–।
–তুই এই জঙ্গলে কি করছিস?
–এইটা মাস্টার সাবের বাগান।

মন যা চায় তুমি তাইOù les histoires vivent. Découvrez maintenant