(১৯) বিয়ে

313 2 0
                                    

জুম্মাবার ছুটির দিন। সোফায় হেলান দিয়ে দিশাহারা ডা.মামুন এহসান। হায় দুনিয়াটায় এত অন্ধকার কি করে এল। খবরের কাগজে ঘটনাটা পড়ার পর থেকেই মা অনেক চেষ্টা করেন যোগাযোগ করতে,শেষে ছেলেকে পীড়াপিড়ি করেন,একবার গিয়ে খোজ নিতে। মনে হয়েছিল মা-র সব ব্যাপারে বাড়াবাড়ি। হসপিটালের চাকরি বললেই হুট করে চলে যাওয়া যায় না। শেষে এখানে এসে এমন খবর শুনতে হবে কল্পনাও করেননি ড.মামুন সাহেব। হায় আল্লা মার আশঙ্কা এমন করে সত্যি করে দিলে মেহেরবান?

চাকরি করার দরকার নেই কত করে বলেছিল মা, বাবার আস্কারাতে বাড়ি ছেড়ে আপা এতদুরে চলে এল। কি সুন্দর গানের গলা, চেষ্টা করলেই রেকর্ড করে কত নাম হয়ে যেত এতদিন তা না স্কুলের ম্যাডাম। এতকাণ্ড হয়ে গেছে বাড়িতে একটা খবর পর্যন্ত দেয়নি। তার উপর নুসরাতের কাছে বিয়ের ব্যাপার শুনে একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। আপার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল? আসামীদের ধরতে সাহায্য করেছে ভাল কথা। কিছু টাকা দিলেই হয়।তাই বলে বিয়ে?
–ভাইয়া বিয়ের কথা তুই এখন আম্মুরে বলবি না–আমার কসম।
–আপা একটা পিয়নের মধ্যে তুই কি দেখলি–?
–সে তুই বুঝবি না।
–সে কি ধর্মান্তরিত হতে রাজি হয়েছে?
–না, সে যা তাই থাকতে চায়। সে নিজেরে হিন্দু মনে করে না, মুসলমান হইতেও চায় না।
–এইটা কি সম্ভব?
–কেন সম্ভব না? ফিরোজা বেগমের স্বামী কমল দাশগুপ্তর কথা শুনিস নি? বিশ্বাস কর ভাইয়া তোর আপা এমন কিছু করবে না যাতে তোদের মাথা হেট হয়।

প্যালেস হোটেলে বিয়ে হবে। সামান্য কয়েকজন আমন্ত্রিত। উকিলসাহেব এসে গেছেন, রেজিস্টার সাহেবও। ডিএম সাহেবাই সব ব্যাবস্থা করছেন। বিয়ের সাজে দারুণ লাগছে মন্টি আপাকে যেন বেহেস্তের হুরি। নুসরাত যখন গুলনাহারকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এ ঘরে এল দেখে কেদে ফেললেন ড.মামুন।

–ভাইয়া প্লিজ শান্ত হ, তুই এমুন করলে আমি কি করবো বলতো?

তিনজনে যখন প্যালেস হোটেলে পৌছালো, এগিয়ে এসে অভ্যর্থনা করলেন ডিএম সাহেবা। নুসরাত আলাপ করিয়ে দিল, মন্টি আপার ভাই ড.মামুন এহসান। আর ইনি আমাদের বস জেনিফার আলম সিদ্দিকি। মামুনের চোখ খুজছিল বলদেবকে, কি দিয়ে লোকটা তার আপাকে ভোলালো? বলদেব আজ গুলনাহারের দেওয়া শার্ট প্যান্ট পরেছে। দেখলে মনে হয় যেন কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির এক্সিকিউটিভ। নুসরাত ডেকে আলাপ করিয়ে দিল, ড.মামুন–মন্টি আপার ভাই।আর ইনি বলদেব সোম।

মন যা চায় তুমি তাইWhere stories live. Discover now