বছরের পর বছর একই ছাদের নীচে দেবের সঙ্গে দিব্যি কাটিয়েছেন গুলনাহার এহসান মন্টি কখনো এমন অবস্থা হয়নি। রাতে ঘুম আসতে চায় না,সারা শরীর মনে অনুভব করেন হাহাকার। এক-একসময় ইচ্ছে করে ঢের হয়েছে চাকরি, সব ছেড়ে ছুড়ে ছুটে যায় দেবের কাছে।পর মুহূর্তে নিজেকে শাসন করেন ভুলে গেলে তোমার প্রতিজ্ঞা? তুচ্ছ কারণে প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গে দেবে? তুচ্ছ কারণ?তা নয়তো কি? শারীরি ক্ষুধা কি এত গুরুত্বপুর্ণ যার জন্য নিজেকে লক্ষ্যচ্যুত করতে হবে? হায় আল্লাহ কি করে বোঝাবেন নিছক শারীরি চাহিদা নয় দেবের স্পর্শে এমন এক অনির্বচনীয় আস্বাদ যা ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না। তাকে দেখা যায় না ছোঁয়া যায় না,অনুভুত হয় মর্মে মর্মে।
মাস তিনেক পর চিঠি এল টিভি থেকে। মন নেচে ওঠে এই উপলক্ষ্যে আবার দুজনের দেখা হবে। এবার দেবকে নিয়ে যাবে। স্কুল কামাই করে রওনা হলেন যাতে ভার্সিটিতে যাবার আগে দেবকে ধরতে পারেন।
দেব একটু সকাল সকাল এসে পড়েছে। ক্লাস শুরু হতে ঘণ্টা খানেক বাকী। ক্যাম্পাসের এক ধারে একটা গাছের নীচে বসে আছে। ক্যাণ্টিনে যেতে পারতো কিন্তু বেশি ভীড় তার অপছন্দ। একটা পিওন এসে বলে গেল ড.এমবি ডাকছেন।
ড.এমবি পুরো নাম সম্ভবত মৌসম বেনজির। দ্বিতীয় পত্রের ক্লাস নেন। মধ্যবয়সী স্বাস্থ্যবতী, ক্লাসে ছাড়া সব সময় চোখ ঢাকা থাকে সানগ্লাসে। চোখ দেখা যায় না বলে মনে হয় কিছুটা রহস্যময়ী। ক্লাসে যখন লেকচার দেন দেখলে মনে হবে দৃষ্টি তার ক্লাসরুম ছাড়িয়ে হারিয়ে গেছে কোন সুদুরে। ওর স্বামী বিদেশে থাকেন তিনিও মস্ত পণ্ডিত মানুষ এরকম শুনেছে।
–ম্যাডাম ডেকেছিলেন?
–ওহ সোম? দেখলাম তুমি ম্লান মুখে গাছের নীচে বসে আছো, কি ব্যাপার?চোখ দেখা না গেলে কথা বলতে অস্বস্তি হয়। দেব দ্বিধা জড়িত কণ্ঠে বলে, আপনি কালো চশমার মধ্যে দিয়ে দেখেছিলেন তাই সম্ভবত ম্লান মনে হয়েছে।
অপ্রত্যাশিত উত্তরে এমবি কিছুটা থমকে গেলেও খিলখিল করে হেসে উঠলেন। হাসলে ম্যামকে বেশ দেখতে লাগে চশমা খুলে সরাসরি তাকিয়ে বলেন, তুমি বেশ কথা বলো। আচ্ছা সোম তোমার দর্শন পড়তে ইচ্ছে হল কেন?
–ম্যাম আমি যা বলবো শুনতে আপনার অদ্ভুত লাগবে।
–তোমার কথা শুনতে ভাল লাগছে, তুমি বলো।
–আমি কোন বিষয়কে স্বয়ং সম্পুর্ণ মনে করিনা। জীবনের একটা অংশমাত্র। জীবন ব্যতীরেকে শিক্ষা অর্থহীন।
YOU ARE READING
মন যা চায় তুমি তাই
General Fictionআমাদের আশেপাশের সমাজের অন্যরকম একটা উপন্যাস। প্রেম ভালোবাসা পরোপকারিতা পরকীয়া সবই পাবেন, সাথে বিশেষ যৌনতার মিশেল। ১৮+ ।