কিছু কথা

47 0 0
                                    

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি ভাষার বৈচিত্রতা দিয়ে মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক সায়্যিদুল মুরসালীন, মুহাম্মদ মুস্তফা, আহমাদ মুজতবা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি, মহান আল্লাহ যাঁর প্রতি ভাষার পরিপূর্ণতায় সমৃদ্ধ আসমানী কিতাব আল-কুরআন নাযিল করছেন। আরো বর্ষিত হোক তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি, তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও তামাম উম্মতের প্রতি।

সাহিত্যকর্মের মধ্যে তরজমা একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা, তরজমাকৃত জিনিস এলেমকে সমৃদ্ধ করে, এতে সন্দেহ নেই। এজন্যেই তরজমায় মানুষের আগ্রহ জন্মায়। কিন্তু সার্বিকভাবে এটি আবার একটি জটিল ও মুশকিল জিনিসও বটে।

আমি তরজমা সাহিত্যে দক্ষ নই, সে যোগ্যতা নিয়ে পয়দা হইনি। কিন্তু এতে আমার অনেক যওক-শওক হইছে, পাশাপাশি বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম উম্মতের সাচ্চা ইসলামী ফিকরিয়াত বা ভাবধারার সাথে পরিচিত করানোর জন্যেও তরজমা খুব জরুরী হয়ে দাঁড়াইছে। এক্ষেত্রে আব্বাসী খেলাফতের যমানায় আমাদের সালাফে সালেহীনদের ইউনানী ভাষা থেকে আরবীতে তরজমা আন্দোলনের (Greco-Arab Translation Movement)[১] পালে জোরদার হাওয়া আমাকে আরও উৎসাহ-অনুপ্রেরণা জাগাইছে।

তাই না-কাবিল হওয়া সত্ত্বেও জিন্দেগীতে তরজমা সাহিত্যের এক নয়া সফরে শামিল হইলাম। এটা কোনো কিতাব না, স্রেফ তামরিনের (অনুশীলন) খসড়া মাত্র। তরজমা সাহিত্যে পাকা হওয়ার এক মেহনত মাত্র। আরবী ও উর্দু থেকে (কখনো কখনো মুমকিন হইলে আংরেজি বা ফারসি থেকেও) আমার পছন্দমত গল্প অথবা প্রবন্ধ বাঙলাতে তরজমা করে করে এখানে হেফাজত করার উম্মিদ রাখি ইনশাআল্লাহ।

Wattpad এ লিখার দুটি মাকসাদ।

এক. লিখাগুলো যেমন কাগজেও হেফাজত করতেছি, তেমনি অনলাইনেও যেন হেফাজত থাকে। যেন এক জায়গা থেকে হারালেও আরেক জায়গায় হাযির থাকে আমার জন্য।

দুই. সম্মানিত পাঠকগণ লেখাগুলো পড়ে আমার ভুল-ত্রুটি ধরে দিবেন কিংবা সুপরামর্শ দিবেন, এটার অনেক বড় তামান্না রাখি। বিশ্বসেরা শাসক উমর ইবনে আব্দুল আযিয রহ. বলতেন: আল্লাহ তার ওপর রহম করুন, যিনি আমার দোষ ধরে দেন।

পরিশেষে কায়মনোবাক্যে দুআ করি, আল্লাহ অধমের এসব টুটাফাটা লিখনী যেন কারও হেদায়াতের অসিলা করেন, আমার গুনাহ-খাতা মাফ ফরমান এবং মুসলিম উম্মতের আগের হালতে আবার ফিরে আসার তৌফিক দান করুক। আমিন, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।

ফয়সাল ইকবাল

০৫/১২/১৪৪২ হি.

-----------------------------------------------------------------------------------------

[১] শুধুমাত্র গ্যালনের সব কাজ, এরিস্টটলের ওপর ইউনানি ভাষায় লিখা ব্যাখ্যাগ্রন্থগুলোর আরবি অনুবাদ মিলে মোটা মোটা ৭৪ খণ্ড হয়। এগুলো করা হয়েছিল ৮ম থেকে ১০ম শতকের ভিতরে, আর এটা ইউনানি-আরব অনুবাদ আন্দোলনকালের (Greco-Arabic Translation Movement) ক্ষুদ্র একটা ভগ্নাংশমাত্র। এর থেকেই ধারণা করা যায় যে Greco-Arabic Translation Movement কত বেশি বিস্তৃত ছিল। তবে এ কথাও জেনে রাখা প্রয়োজন যে ইউনানের সবকিছু আমাদের অন্ধ অনুকরণ না করা উচিত, যার খেসারত এই আন্দোলনের ফলেও মুসলিম উম্মতকে দিতে হয়েছে (মুতাজিলা ফেরকা), আল্লাহ আমাদের গোমরাহি থেকে হেফাজত করুক।

তরজমাশালাWhere stories live. Discover now