বস্তুবাদ তত্ত্ব মানে হচ্ছে স্রেফ বস্তুই দুনিয়াতে অস্তিত্বশীল ও বিরাজমান। আর জগতের তামাম ঘটনা (Phenomena) বস্তুগত পরিভাষা ও মালিকানার মদদে ব্যাখ্যা করতে হবে। এর থেকে আন্দাজ করা যায় যে প্রত্যেক বস্তুকে প্রাকৃতিক সূত্রের (Physical Law) গণ্ডির ভিতর দিয়ে মানব-মস্তিষ্ক সমেত চালিত হতে হবে। লেকিন এতে একজন বস্তুবাদী নাস্তিককে পরিতে হয় মহা মসিবতে।
এই জায়গায় এসে একজন নাস্তিকের আর কোনও বুদ্ধিবৃত্তিক যথার্থতা থাকে না, সে তার নিজের চিন্তার উপর যতই একশো তে একশো একিন থাকুক না কেন। কারণ, তার এই শারীরিক দেমাগ আর যাই বা পারুক, ফিজিক্স-কেমিস্ট্রির সরহদ তো গুজার করতে পারে না। সুতরাং, তার কাছে এই খোলাসায় আসার কোন যুক্তি নাই যে তার দেমাগ-মস্তিষ্ক যখন থেকেই ক্রিয়াশীল হয়েছে তখন থেকেই তার বুদ্ধিমত্তা ও বিচারবুদ্ধি সঠিক।
কিভাবে একটি রাসায়নিক অবস্থান (Chemical State) আরেকটা রাসায়নিক অবস্থানে মস্তিষ্কে পরিচালিত হলে যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনিত হওয়া যায়? এর কোন সহি তরিকা নাই। মানব-মস্তিষ্ক আলবৎ অত্যুন্নত, তবে যদি তা প্রাকৃতিক সূত্রে আবদ্ধ হয়, তাহলে তো সেটা মস্তিষ্কের রগ ও উদ্দীপকের (Stimulus) এর উপর ভিত্তি করিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিক্রিয়া দিবে। এর থেকে বোঝা যায় যে পূর্বোল্লিখিত পরিস্থিতিতে হামেশা একই জবাব আসিবে।
তাহলে বোঝা গেল যে একজন নাস্তিকের আসলে এখতিয়ারের আজাদী নাই। হাকীকত, আল্লাহ, আত্মসত্তা, অন্যজন ও অভিজ্ঞতার ব্যাপারে নিজের ফিকরিয়াতের উপর আস্থা রাখার কোন যৌক্তিকতা নাই। এজন্যে বস্তুবাদী নাস্তিকতা হচ্ছে স্ববিরোধী। কারণ তা আপন অবস্থান থেকে নিজের সত্যতার প্রতিরক্ষা বা হেফাজত করিতে অক্ষম। মস্তিষ্ক যদি শুধুমাত্র শারীরিক জরুরত অনুসারে শাসিত হয় তাহলে বস্তুবাদী নাস্তিকতা নিজের সঠিক অবস্থান ধরে রাখিতে পারে না। তখন (বস্তুবাদী নাস্তিকের আকিদা অনুযায়ী) যা হয় তা হচ্ছে মস্তিষ্কের স্নায়ুরসায়ন (চলাচল) পথের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া, যা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উদ্দীপিত (stimulated) হয় এবং সেটা বস্তুগত মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক সূত্রের প্রতি নির্ভর করে সেভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়।
যদি আপনি বস্তুবাদী নাস্তিক হন আর আমার কথার সাথে একমত না হন, তাহলে আমি বলিব, এটাই (একমত না হওয়া) আপনার মস্তিষ্ককে এ প্রতিক্রিয়ার জন্য আদিষ্ট (programmed) হইছে।দেখেন ভাই, এখন যে আপত্তি তোলেন না কেন কোন লাভ নাই। যদি বস্তুবাদী নাস্তিকতা হক হয়, তাহলে আপনার ব্রেন কোন খাস তরিকায় প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য পূর্বাদিষ্ট হইছে যখন আপনার কোন এখতিয়ার আজাদী ছিল না, না ছিল কোন যৌক্তিক বিশ্ববীক্ষা (worldview) দেয়ার মাধ্যম, যেটা দিয়ে অভিজ্ঞতার তফসির করবেন। আপনার এখনও আমার কথা গলত মনে হইতেছে? বেশ, তা তো বলবেনই। কারণ আপনার ব্রেন এভাবেই জবাব দেওয়ার জন্য আদিষ্ট (programmed) হইছে।
(Matt Slick এর Materialism is Self-Refuting নামক প্রবন্ধটি অনূদিত।)
YOU ARE READING
তরজমাশালা
Randomএটি আমার জিন্দেগির নয়া সফর, তবে সফরের সীমা-সরহদ কোথায় গিয়ে ঠেকবে আল্লাহ মালুম। আমার পছন্দসই গল্প বা প্রবন্ধ আরবী, উর্দু, আংরেজি বা ফারসি থেকে তরজমা করে প্রকাশ করব। লিখা পড়ে ভুল-ত্রুটি বা আরও ভালো করার সুপরামর্শ দিতে ইচ্ছা করেন, তাহলে মেহেরবানি করে এ...