Photo Credit: Engin Akyurt
এক পাহাড়ে কিছু আবেদ* থাকতেন। তাদের রিজিক প্রতিদিন কোথা থেকে আসতো তারা নিজেও জানতেন না। একটা রুটি আসতো, যা দিয়ে কোনোমত খিদে নিবারণ হতো আর কিছু শক্তি হাসিল হতো। কোনো একদিন রুটি আসলো না, ওভাবেই রাত গুজার করলেন।
সকালে খিদের জ্বালা বেড়ে গেলো। ঐ পাহাড়ের নিচে খ্রিস্টানদের একটা গ্রাম ছিলো, আবেদ পাহাড় থেকে নেমে খাবারের খোঁজে সে গ্রামে গেলেন। এক বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জান বাঁচানো পরিমাণ খাবার চাইলে বাড়িওয়ালা তিনটি রুটি দেয়। আবেদ তা নিয়ে পাহাড় পথে আগালেন।
বাড়িওয়ালার একটা কুকুর ছিলো, সে আবার ঘেউঘেউ করা শুরু করলো। আবেদ কুকুরটাকে একটা রুটি ছুঁড়ে দিয়ে চলতে থাকলেন। ঐ রুটি শেষ করে আবার আবেদের পিছু নিয়ে এমনভাবে ঘেউঘেউ শুরু করল যেন এখনই কামড় লাগিয়ে দিবে। আবেদ আরেকটা রুটি দিলে কুকুরটা খাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। আবেদ হাঁটতে হাঁটতে পাহাড়ের মাঝখানে এসে পৌঁছে গেছে, এমন সময় কুকুরটা আগের রুটি শেষ করে পুনরায় পিছু নিলে আবেদের হাতে থাকা শেষ সম্বলটাও দিয়ে দিলো। কিন্তু আখেরী রুটিটা খেয়েও ফের আবেদের পিছু নিলে আবেদ ওর দিকে তাকিয়ে বললেন:
"এই বেহায়া! তোর মালিকের থেকে তিনটা রুটি এনেছিলাম, সবগুলোই তো তুই-ই সাবাড় করলি। আরও কি চাস তুই?"
আল্লাহ কুকুরের জবান খুলে দিলেন। কুকুরটা বললো:
"বেহায়া তো বরং তুই রে! শুনে রাখ, আমি এই খ্রিস্টানের দরজায় দুবছর যাবৎ আছি। বহুতদিন এমনও গেছে যে দুই-তিন দিন কোনো খাবার দেয় নাই, তাও অন্য কারও দরজায় আমার মন টানে নাই। আর তোর তো একদিন খাবার বন্ধ না হতেই সবুরহারা হয়ে এক নাসারার বাড়ি এসেছিস রুজির তলবে। এবার বল, কে বেহায়া? আমি নাকি তুই?"
আবেদ এতে খুবই লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয় এবং তারপর থেকে এমন কাজ আর কখনও করেননি।
*আল্লাহর এবাদতগুজার বান্দাদেরকে আরবীতে আবেদ বলা হয়।
('নাফহাতুল ইয়ামান' গ্রন্থ থেকে অনূদিত)
YOU ARE READING
তরজমাশালা
Randomএটি আমার জিন্দেগির নয়া সফর, তবে সফরের সীমা-সরহদ কোথায় গিয়ে ঠেকবে আল্লাহ মালুম। আমার পছন্দসই গল্প বা প্রবন্ধ আরবী, উর্দু, আংরেজি বা ফারসি থেকে তরজমা করে প্রকাশ করব। লিখা পড়ে ভুল-ত্রুটি বা আরও ভালো করার সুপরামর্শ দিতে ইচ্ছা করেন, তাহলে মেহেরবানি করে এ...