জ্ঞান খোদায়ে পাকের বিরাট নিয়ামত। জানোয়ারকে মানুষ, মানুষকে আরও ভালো মানুষ ও মানুষকে খোদাভক্ত বানানোই জ্ঞানের কাজ। এলেম মোতাবেক আমল করার দ্বারা এলেম পরিপূর্ণ হয়। এজন্য জ্ঞান তালাশ ও সে মোতাবেক আমল করার আগ্রহ দিলে পয়দা কর।
১) সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠে অজু করে নামাজ পড়, কোরআন শরীফ তেলওয়াত কর। তারপর হালকা নাশতা সেরে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য তৈয়ার হও। যাওয়ার আগে ভালোভাবে ব্যাগ দেখে নাও। খাতা-কলম, কেতাবাদি ইত্যাদি সব দেখেশুনে নিয়ে যাও। যাওয়ার পথে রাস্তায় কোন সহপাঠীর সাথে মোলাকাত হলে পড়াশোনার আলাপ ছাড়া বেহুদা গল্পে মশগুল হবে না। বয়সে বড়, মুরুব্বী বা কোন উস্তাদের সাথে রাস্তায় দেখা হলে তাদের সালাম দিবে। পড়াশোনায় অমনোযোগী ও খারাপ ছেলেদের সাথে মিশবেনা।
২) সময় মত বিদ্যালয়ে পৌঁছে যাবে। শ্রেণীকক্ষে আদবের সাথে বসে যাবে আর মনে মনে ভাববে যে এখানে কেন এসেছি, এছাড়া অন্য কাজে মন দিবে না, মন দিয়ে পড়বে। উস্তাদ শ্রেণীকক্ষে এলে আদবের সাথে দাঁড়িয়ে সালাম দিবে, ফিসফিস বাতচিত বন্ধ করে উস্তাদের দিকে মনোযোগ দিবে। এদিক-ওদিক মন দিলে সবক বুঝতে পারবে না। তখন সময়ও বেকার যাবে, সবকও ভালোভাবে ইয়াদ হবে না। উস্তাদ শ্রেণীকক্ষ থেকে বের হলে শোরগোল করবেনা। যে পড়া দিয়ে যায় তা পুরা করবে, আর যা করবে তা বাড়ি থেকে ইয়াদ করে আসবে।
৩) উস্তাদের প্রতি আদব বজায় রাখবে। কোন কথা না বুঝে আসলে আদবের সাথে আবার জিজ্ঞেস করবে। উস্তাদের প্রতি সুধারণা রাখবে, তাঁর সাথে ভালো আচরণ করবে। নিজের সহপাঠীদের সাথেও ভাইয়ের মত আচরণ করবে। তাদের ওপর মেহেরবান হও, অহঙ্কার দেখাবে না। অসৎ ছেলেদের কাছে বসবে না। যদি তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাহলে সবুর করবে, নাহয় উস্তাদকে জানাবে।
৪) বিদ্যালয়ের কোন জিনিস বরবাদ করবে না। নিজের কেতাবাদি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি হেফাজত করবে। কেতাবের আদব বজায় রাখবে, তা মাটিতে রেখে পড়বে না, দূর থেকে ঢিল দিবে না। কেতাব দিয়ে কোন কিছু ঢাকার কাজে এস্তেমাল করবে না। কোরআন শরীফের যতই তাজিম করবে ততই খোশনসীব হবে। কিতাবের পরিচ্ছন্নতার প্রতি যত্নশীল হবে, তাতে কিছু লিখবে না। তবে শুরুতে নিজের নাম লিখলে কোন সমস্যা নাই। মলাটের ব্যাপারে যত্নবান হও। হুঁশিয়ারির সঙ্গে কেতাব বাঁধাই করবে, যাতে পহেলা ও আখেরী মলাট আলাদা না হয়ে যায়। মাঝে মাঝে কেতাবাদি রোদে শুকাতে দিবে, যাতে পোকামাকড় হামলা না করে বসে।
৫) পড়াশোনায় মশগুল ব্যক্তির পাশে গোলমাল বা আওয়াজ করবে না। কারও চিঠি এজাজত ছাড়া পড়াটাও ভদ্রতার খেলাফ (হালযমানায় কারও মেসেজ পড়ার ব্যাপারেও একই কথা)। জ্ঞান, মেধা, বুদ্ধিমত্তা ও অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য কেতাবপাঠ অনেক জরুরী জিনিস। উস্তাদের কাছে তো খুবই অল্প ও সীমিত পরিসরে কিছু কেতাব পড়া হয়, যার মাকসাদ হচ্ছে পড়া শেখা। কিন্তু যখন পড়া শেখা হবে তখন জীবনভর অসংখ্য ও অসীম কেতাবের জ্ঞানসাগরে ডুব দেয়া এবং দুহাতের অঞ্জলি ভরা এলেমকে কেতাবাদি পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানসাগর বানিয়ে নেয়া তো মানুষের নিজেরই কাজ। তবে কেতাব পড়ার ক্ষেত্রে উপকারী ও গ্রহণযোগ্য কেতাবাদি নির্বাচন করার ব্যাপারে খেয়াল রাখা জরুরি।
(উপমহাদেশের উর্দু শিক্ষার মশহুর কেতাব ‘উর্দু কি তেসরি কিতাব’ থেকে অনূদিত)
YOU ARE READING
তরজমাশালা
Randomএটি আমার জিন্দেগির নয়া সফর, তবে সফরের সীমা-সরহদ কোথায় গিয়ে ঠেকবে আল্লাহ মালুম। আমার পছন্দসই গল্প বা প্রবন্ধ আরবী, উর্দু, আংরেজি বা ফারসি থেকে তরজমা করে প্রকাশ করব। লিখা পড়ে ভুল-ত্রুটি বা আরও ভালো করার সুপরামর্শ দিতে ইচ্ছা করেন, তাহলে মেহেরবানি করে এ...