বিকেলে ঝুমুরের ঘরে গিয়ে দেখি একটা ছবি হাতে নিয়ে হাসছে।আমি কাছে যেতেই ছবিটা লুকিয়ে ফেলল।আমি জিজ্ঞেস করলাম,"কার ছবি?"
ও মাথা নাড়িয়ে বলল,"বলব নাহ্।"
আমি একটু থেমে আবার জিজ্ঞেস করলাম,"তোর গাধার ছবি?"
ও ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল,"নাহ্,মোটেও না।কি যা তা বলছ!"
আমি বললাম,"তাহলে লুকোনোর কি আছে?"
ও মুখ ঘুরিয়ে বলল,"বলব নাহ্।"
আমি ওর মুখের দিকে খেয়াল করে তাকিয়ে দেখি চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।আমি ওকে বললাম,"থাক্!আর লজ্জা পেতে হবে না।"
ঝুমুর জোরে জোরে মাথা নাড়িয়ে বলল,"লজ্জা কে পাচ্ছে?আমি তো পাচ্ছি না।"
আমি বললাম,"আচ্ছা বুঝলাম।"
ও গম্ভীরভাবে বলল,"বসো।"
আমি চেয়ার টেনে বসতে বসতে বললাম,"তোর রান্না তো অসম্ভব ভালো হয়েছে।"
ওর জবাবের জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার বললাম,"এতো ভালো রান্না কার কাছে শিখেছিস?"
ও হাসিমুখে বলল,"বলব নাহ্।"
আমি হতাশ ভঙ্গিতে বললাম,"এটাও বলবি না?"
ও একটু হেসে তারপর শান্ত হয়ে বলল,"নাহ্।"
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বললাম,"তোর গাধা কি তোর এই গুণের কথা জানে?"
ও লাজুক ভঙ্গিতে বলল,"নাহ্।ও জানে আমি রান্না করতে পারি না।"
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম,"মানে কি?"
ঝুমুর বলল,"মানে আমি ওকে বলেছি আমি রান্না তো দূর,পানিও গরম করতে পারি না।"
আমি জিজ্ঞেস করলাম,"এর কারন?"
ও বলল,"বলব নাহ্।"
আমি চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে বললাম,"তোর গাধার কপালে দুঃখ আছে।"
ঝুমুর অবাক হয়ে বলল,"কেন?"
আমি বললাম,"তুই যে হারে বলব না বলব না করিস!"
ও হেসে বলল,"হুম।এটা ঠিক বলেছ।"রাতে ঝুমুর আমাকে জানালো ও কিছু খাবে না।আমিও খাওয়ানোর কোনো রকম চেষ্টা করলাম না।বনুর বাবা গিয়ে অবশ্য ওকে কয়েক বার বলেছে খেতে।তবে ও ফিরিয়ে দিয়েছে।আমি রাতে খেয়ে বই নিয়ে বসলাম।বই পড়তে পড়তে একসময় মনে হলো আমি যখন হাসান,মানে ঝুমুরের বাবাকে দেখি তখন নিজেকে খুব পূর্ণ মনে হয়।ঝুমুরের মায়েরও নিশ্চয় ঝুমুরকে দেখলেও এই একই অনুভূতি হয়!