তৃষার ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়াতে এখন ওর সাথে তেমন কথা হয়ে ওঠে না।আর ওকে দেখতেও এখন বড্ড অন্যরকম লাগে।মেয়েটা কাজের চাপে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় পায় না। যদিও আমার অনেক চিন্তা হয় কিন্তু আমার আসলে করার কিছুই নেই। ও কখনই আমার কথা শুনবে না। আর তাছাড়াও কাজ কে খুব ভালোবাসে। সব সময় বলে কাজ না করলে নাকি ওর ঘুমই আসেনা। আমি সারাদিন একা একা বাসায় থাকি। টুকটাক কাজ করি আর বই পড়ি। এটা ছাড়া আমার কাছে আর কোন কাজ নেই খুব ইচ্ছে করে আগের তৃষাকে ফিরে পেতে। যে সবসময় হাসি ঠাট্টা করবে, সারাদিন ছোটাছুটি করবে, সব পরিবেশ মাতিয়ে রাখবে। কিন্তু এখনকার যে তৃষা কি আমি দেখছি সে যেন একেবারেই অন্য তৃষা। সারাদিন কাজে ডুবে আছে, একটার পর একটা ফাইল ঘাঁটছে, কাজের কথা ছাড়া আর একটা বাড়তি কথা বলছে না আর কেমন যেন নিস্তেজ হয়ে গেছে।
কিছুদিন পর হঠাৎ করে দেখলাম ও প্রতিদিনের মতো অফিসে না গিয়ে সোফায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। যদিও চোখ বন্ধ কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারলাম যে ও জেগে আছে। আমি কোনো কথা না বলে চুপ চাপ দিয়ে ওর মাথা কাছে বসলাম। ও কোন কথা না বলে শুধু একটু সরে গেলো। তারপর হঠাৎ করে আমার হাতটা ওর কপালে রেখে বললো দেখো তো আমার গায়ে জ্বর আছে কিনা। আমি কপালে হাত দিয়ে দেখলাম কপাল একদম ঠান্ডা।
ওকে বললাম, কই কিছু হয়নি তো।
ও বলল, তাহলে আমার এমন লাগছে কেন? মনে হচ্ছে মাথা ভার হয়ে আছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কফি খাবি?
ও বলল, দাও দেখি একটা।
আমি করা করে এক কাপ কফি ওকে বানিয়ে এনে দিলাম। ও একটু একটু করে পুরোটা শেষ করে উঠে বসলো। তারপর একটু আড়মোড়া ভেঙে বলল, বুঝলে বুড়ি আজকে আর অফিসে যাব না।
আমার খুব আনন্দ হচ্ছিল শুনে। কিন্তু তারপর ও স্বাভাবিকভাবে বললাম, কেন?কাজ নেই বুঝি?
ও আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল, তুমি গলার স্বর স্বাভাবিক রেখেছো কিন্তু চোখ থেকে আনন্দ মুছবে কি করে? যাচ্ছি না কারণ ভালো লাগছে না। আজকে সারাদিন তোমাকে নিয়ে ঘুরব।