পর্ব-২৯

180 9 3
                                    

আমি আস্তে আস্তে সকলের সাথেই কথা বললাম।তবে সবার মধ্যেই খুব আলসেমি।সকলেই কিছুক্ষণ কাজ করছে, আবার কিছুক্ষণ গল্প করছে অথবা কেউ ফোনে কিছু করছে....
সারা দুপুর কাটিয়ে দিলাম এমন করে।তৃষা আমার জন্য লাঞ্চের আয়োজন করে দিয়েছিল, তবে নিজে কিছু খায়নি।আমিও আর ডাকতে যাই নি।বিকেলের দিকে খেয়াল করলাম সবার মধ্যে যেন হঠাৎ চাঞ্চল্য চলে এসেছে।সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে।আমি সত্যিই খুব অবাক হলাম।

ঠিক সেই সময় ঝুমের পিএ হাসান আমাকে বলল, 'অবাক হবেন না দিম্মা, ম্যাম এখন রাউন্ডে বের হবেন।তাই সবাই সিরিয়াস।

হাসানের কথা শেষ হতে না হতেই ঝুম রুম থেকে বেরিয়ে এলো।দেখলাম খুব স্বাভাবিকভাবেই ও সকলের ডেস্কে কাছে গেল।হঠাৎ একজন কমবয়সী মেয়ের হাত থেকে তার মোবাইল নিয়ে তাকে বলল, "বাসায় কি স্বামীর সাথে কথা হয় না.. সারাটা সময় তো তার সাথে চ্যাটিংয়ের দরকার নেই।রাতে তো এমনি দেখা হবে! অন্য কোনো ছেলে হলে কথা ছিল... তা নয়.. স্বামীর সাথে কথা বলছে!
তারপর খুব স্বাভাবিকভাবেই তার ফোনটা নিয়ে ও নিজের কেবিনে চলে গেল।ওর পিএ ও খুব খুশি খুশি মুখ করে ওর পেছন পেছন চলে গেল।

সেই সময় আমি খেয়াল করলাম যেই মেয়েটার ফোন ঝুম নিয়ে গেল সেই মেয়েটা কাঁদছে।আমি ওর কাছে গিয়ে নাম জিজ্ঞেস করলাম।মেয়েটা খুব কষ্ট করে তার নাম বলল স্বর্ণা।আমি আর অপেক্ষা না করে মেয়েটাকে ঝুমের কাছে নিয়ে গেলাম।

কেবিনে ঢুকতেই ঝুম স্বর্ণার দিকে তাকিয়ে বেতের সোফাটায় বসতে বলল।মেয়েটা বসার সাথে সাথেই ঝুম ওর হাতে ফোনটা দিয়ে দোলনায় গিয়ে বসল।আমি বেতের সোফাতে মেয়েটার সামনে বসলাম।
তৃষা তখন খুব আস্তে আস্তে বলতে লাগল, 'ভালোবাসায় আবেগ খুব কম সময়ের জন্যে থাকে... তারপর যেটা থাকে সেটা হলো বিশ্বাস, দায়িত্ব আর ভরসা।
তুমি কি জানো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্পর্কে একজনের অতিরিক্ত আবেগ তাকে সামনের মানুষটার কাছে একদম অসহায় করে দেয়! যেটা একটা সময়ে সম্পর্ককে তিক্ত করে দেয়।আমি চাই না তোমার সাথে তা হোক.....  যাই হোক.... All the best!
তৃষা কিছুক্ষণ চুপ কর থেকে তারপর বলল, Both of you please leave now, I need some space to clear my head.

আমি কিছু না বলে স্বর্ণাকে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।রুম থেকে বের হতেই স্বর্ণা আমাকে বলল, ম্যামের মনে কি কোনো চাপা কষ্ট আছে?
আমি কিছু না বলে অন্যদিকে তাকালাম।
স্বর্ণা আবার বলল, ম্যাম বকলে, চিৎকার করলে ভালো লাগে।ম্যাম এমনভাবে বললে খুব কষ্ট হয় ওনার জন্য।ম্যাম হয়তো অনেক ছোট, কিন্তু সবাই সকলের সমস্যা ওনার সাথে শেয়ার করে শান্তি পায়।উনি অনেক ভালো ভালো কথা বলে সকলের মন ভালো করতে পারে, এটা সবাই পারে না।ওনাকে কষ্টে দেখলে আমাদের সবার কষ্ট হয়।
আমি চুপচাপ ওর কথা শুনে গেলাম।
স্বর্ণা হঠাৎ খুব আস্তে করে বলল, আমি রেহান স্যারের পিএ ছিলাম।
আমি ভুত দেখার মতো চমকে উঠলাম।ও না থেমেই বলতে লাগল, 'স্যার আর ম্যামের মধ্যের সম্পর্ক কেন নষ্ট হয়ে গেছে তা আমি জানি না।তবে তাতে যে স্যারের দোষ ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।তবে ওনারা দুজনেই খুব ভালো মানুষ।ওনারা কখনো এক হবেন না জানি, তবে দুজনকেই দেখলেই মনে হয় একজন অন্যজনের কথা ভেবে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছেন।এটা কিন্তু খুব খারাপ।
এটুকু বলেই ও চুপ করে গেল।আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমাকে কি রেহান পাঠিয়েছে?
স্বর্ণা মাথা নাড়িয়ে বলল, না।স্যার জানেন আমি খুলনা চলে গিয়েছি।
আমি বললাম, When I first saw them, they were just like two beautiful birds who were trying to build their nest by all means... But after some years there was only one bird left to build the nest... So it became too hard for the bird to build that at its own... As a result, the little bird failed and then the another flew away...
আমি রেহানকে কখনো পছন্দ করি নি, তবে ঝুমকে আমি আজ পর্যন্ত কখনো অতটা খুশি দেখি নি যতটা ও রেহানের সাথে ছিল।
স্বর্ণা বলল, আমি কি যাবো?
আমি ইশারায় ওকে যেতে বললাম।ও তারপরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর চলে গেল।
আমিও অন্যদিকে চলে গেলাম।আমি একসময়ে ওয়েটিং রুমে গিয়ে টিভি ছাড়তেই ঝুম রুমে এল।রুমে ঢুকেই বলল, I am exhausted.. Let's get out of here lady...
তারপর হঠাৎই খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, যাওয়ার সময় বসুন্ধরা ঘুরে যাব।আমাকে একটা শাড়ি পছন্দ করে দেবে?
আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম, দেব।
ও বলল, Ok... Then let's go...

প্রিয়Nơi câu chuyện tồn tại. Hãy khám phá bây giờ