ঝুম অনেকদিন হলো ঢাকায় গিয়েছে।আর ঢাকায় গিয়ে যেন ডুব দিয়েছে,কোনো খোঁজ নেই।আমি যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।তাই আর চেষ্টা না করে আমি ওর ফিরে আসার অপেক্ষা করা শুরু করেছি।কিন্তু আজকে কেন যেন মন বলছে ঝুমের খোঁজ পাব।এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে বেলা পড়ে গেছে তা আর খেয়াল নেই।বেলা হয়ে যাচ্ছে দেখে আমি তাড়াতাড়ি উঠে নামাজ পড়ে নিলাম।নামাজ শেষে একটা বই নিয়ে বসাে সাথে সাথে ফোন বেজে উঠল।আমি তাড়াতাড়ি করে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ঝুমেরই ফোন।আমি খুশি হয়ে কলটা রিসিভ করে হ্যালো বলার আগেই মনে হলো ঝুম কাঁদছে।খুব কষ্ট নিয়ে কাঁদছে।
আমি কিছুক্ষণ ওকে নিজেকে সামলে নেয়ার সুযোগ দিলাম।তারপর অনেক চেষ্টা করে ঝুম বলে ডাকলাম।
ফোনের ওপাশ থেকে কান্না মনে হলো আরো বাড়ল।আমি ঝুমকে জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যাপার?
ঝুমুর কাঁদতে কাঁদতেই বলল, আমি দিন দিন এমন কেন হয়ে যাচ্ছি বলো তো?
আমি বললাম, কেমন হয়ে যাচ্ছিস?
ও বলল, আমার সব কিছুর উপর একটুতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।ছোট কোনো ঘটনা নিয়ে আমি মানুষজনকে অনেক বকাবকি করি, কোনো কিছুর প্রতি খুব সহজে আমার আগ্রহ চলে যায়।আমি কেন এমন হয়ে যাচ্ছি দিম্মা?
আমি ওকে বললাম, শান্ত হওয়ার চেষ্টা কর।তারপর বল তো, কি এমন হয়েছে যাতে তোর এমনটা মনে হচ্ছে?
ও বলল, কি হয়েছে তা তোমার জানতে হবে না।কিন্তু এটুকু জানে রাখ যে আমি দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছি!
আমি একটু চুপ থেকে তারপর বললাম, তুই দয়া করে স্বাভাবিক হয়ে আমাকে কি হয়েছে তা খুলে বল।
ও বলল, নাহ্! কি হয়েছে তা তোমার জানতে হবে না।কিন্তু আমি জানি যে আমি খুব খারাপ! পারলে ক্ষমা করে দিও।রাখি....
এটুকু বলেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিল।আমি কল ব্যাক করে দেখলাম ফোন বন্ধ করে দিয়েছে।আমি হাতে ফোন নিয়ে মূর্তির মতো বসে থাকলাম।বার বার মনে হতে লাগল নিশ্চয়ই ঝুম উল্টোপাল্টা কিছু করবে! কিন্তু ওর কান্না শুনে যে অস্থিরতা আমার মধ্যে সবসময় কাজ করে তার তুলনায় আজ আরও বেশি অস্থির লাগতে শুরু করেছে।জানি না কেন হঠাৎই আমার প্রচন্ড ভয় লাগতে লাগল.... প্রচন্ড ভয়।