জন্মদিন ঠিকমতোই হলো।অনেক বড় করে অনুষ্ঠান হলো।এখন বেশ রাত হয়েছে।ঝুমুর অনুষ্ঠান শেষ হওয়া মাত্র তার বাবাকে নিয়ে রুমে চলে গেছে।তার নাকি বাবার সাথে "Urgent talk" আছে।এখন বাড়িঘর পরিষ্কারের অংশ শুরু হয়েছে।হঠাৎ খেয়াল হলো আনিকাকে অনেকক্ষণ দেখি না।সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে আনিকাকে খুঁজতে বের হলাম।আনিকাকে খুঁজে পেলাম বাড়ির ছাদে।ছাদের এক জায়গায় মোড়া নিয়ে আনিকা বসে আছে।আমিও একটা মোড়া নিয়ে ওর পাশে বসলাম।
তারপর ওর কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করলাম,"এখানে বসে আছো কেন মা?"
আনিকা আমার দিকে ফিরে একটু হাসল।তারপর মুখ ঘুরিয়ে বলল,"আমার নিজের মার আদর ভালবাসার দরজা আমি নিজে বন্ধ করে দিয়েছি।এখন আপনিই আমার মা।"
আমি কোনো কথা না বলে চুপ করে রইলাম।আনিকা হঠাৎ আমার দিকে ফিরে বলল,"আপনার ছেলের সাথে আমার পরিচয়ের গল্পটা শুনবেন?"
আমি শান্তভাবে বললাম,"বলো।"
আনিকা বলল,"হাসানের সাথে আমার পরিচয় একটা ভার্সিটি লাইব্রেরিতে।আমাদের ভার্সিটি একই।George Washington University.তবে ডিপার্টমেন্ট আলাদা।আপনি শুনছেন মা?"
আমি বললাম,"বলো।"
আনিকা বলল,"আমি একদিন একটা পুরোনো বই নিয়ে লাইব্রেরিতে বসে আছি।হঠাৎ দেখলাম একটা ছেলে আমার এগিয়ে আসছে।
-Excuse me!
-Yes.
-Can you please give me the book which you are reading?
-What!
-Yes,please.
-Are you mentally sick?
-No,actually I want to read this book badly.
-Oh God!
-Please!
-Ok,take this and leave.
-How can I leave?I mean,I have to read this book.
-Holy cow!Fine,I am leaving!
-Ok.
এটা বলেই হাসান বই নিয়ে পড়তে বসে পড়ল।ধন্যবাদ দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করল না।
আমি খানিকটা বিরক্ত হয়ে লাইব্রেরি থেকে বের হলাম।রাগ করে সেদিন ক্লাস মিস করলাম।বাড়ি গিয়ে সকলকে জানালাম যে আমি অসুস্থ।আমেরিকা হলো যান্ত্রিক দেশ।আমার অসুস্থতা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাল না।আমি আবার ভার্সিটি গেলাম আট দিন পর,তাও আবার এমন একটা মানুষের উপর রাগ করে যার সাথে আমার কোনো পরিচয় নেই।অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস মিস করলাম ওই আট দিনে।তাই নোট নিতে আবার সেই লাইব্রেরিতে গেলাম।সেদিনও সেই ছেলেকে দেখলাম আমার দিকে আসতে।তবে সেদিন আর বই পড়তে চাইল না।সাধারন কথাবার্তা হলো,নাম জানা হলো।সে জানালো সে বাংলাদেশী।পড়াশুনার জন্য এখানে এসছে।"