১৭

440 21 2
                                    

#অভিসারক_ও_অভিসারিণী
লেখা- #AbiarMaria

#১৭

ফারহা আতঙ্কিত হয়ে জামানের দিকে চেয়ে আছে। জামান টিসুতে রক্ত দেখে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল। আর ফারহা একা একা বসে আছে। হুট করে এটা কি হলো! ফারহা সামনে ফিরে বসে আছে, টাং করে মাথাটা ধরে গেছে। কই, এর আগে কতজনকে মেরেছে, কত ছেলেকে মেরে নাম মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলেছে, কই, কখনো তো খারাপ লাগে নি!

নীলের সাথে মারামারির কথা মনে পড়ল যাকে ফারহা সবুজ ডাকে। একবার ফারহার চিপ্স খেয়ে ফেলায় মেরে নীলকে ও সোফা থেকে ফেলে দিয়েছিল। নীলও ধ্রুম ধ্রিম করে লাগিয়েছিল, যদিও খুব একটা সুবিধা করতে পারে নি। ওদের বাবা মা আসলে সেদিন বোধহয় দুজন দুজনকে মেরেই ফেলত, অন্তত ফারহা যে নীলকে মেরে ফেলত, এটা নিশ্চিত! নীলের নাক দিয়ে সেদিন দরদর করে রক্ত পড়ছিল। কই, ওর তো খারাপ লাগে নি! তাহলে কি জামান ভাই ভালো মানুষ বলে মুখ ফাটিয়ে এমন খারাপ লাগছে? ফারহা আনমনে কাঁটাচামচ দিয়ে খাবার নাড়ছে। এভাবে হাত ছুড়ে ও সত্যিই জামানকে আঘাত করতে চেয়েছিল। কিন্তু এতটাও না! তাহলে কতটা? আচ্ছা, সারাদিন যে লোকটা এত যন্ত্রণা দিল, তাতে কি সে এই ব্যবহার ডিজার্ভ করে না? জামান ভাইকে মারার জিনিস ফারহার হাত পা সেই সকাল থেকে নিশপিশ করছিল। এখন তাকে মেরে আনন্দ পাওয়ার কথা। তা না হয়ে উলটো হচ্ছে, ওর নিজের উপর রাগ হচ্ছে।

ফারহা একা একা মাথা নাড়ছে আর ভাবছে, মানুষটা যেমনই হোক, ওর সময়টা যেন ভালো কাটে, সেজন্য সারাদিন সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। ঠিকই তো, ওকে দেখলে জামানের আফসোস হবে না? রাগ হবে না? এত বছর পর এসে জামানের গলাতেই ঝুলে পড়ল, রিএকশন যে এমন হবে, তা সে আগেই আঁচ করেছিল। কিন্তু পাভেল তো বারবার বুঝিয়ে বলেছে, ফারহা যেন জামানের এসব কাজে পালটা জবাব দেয়ার চেষ্টা না করে। তাহলে? কেন ওর নিজের রাগ, অভিমান, দুঃখ গুলো একপাশে ফেলে স্বাভাবিক আচরণ করতে পারেছে না?!

চিন্তায় চিন্তায় যখন ও নিজের চুল টেনে ধরেছে, তখন খেয়াল করল জামান সামনে এসে বসেছে। ফারহা আড়চোখে দেখল জামানকে। নাহ, তার ঠোঁটে কাটা নেই। তবে?

অভিসারক ও অভিসারিণী Where stories live. Discover now