৩১

482 22 5
                                    

#অভিসারক_ও_অভিসারিণী
লেখা #AbiarMaria

#৩১

দেড় ঘন্টা ধরে পুলিশ স্টেশনে বসে আছে। ফারহা অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে৷ মাঝে মাঝেই সে রাগে এটা ওটা বলে ফেলছে। ওর কপালের দুটো রগ ফুলে গেছে রাগে। জামান আগে কখনো ফারহাকে এত রাগতে দেখেনি, তাই আজ সে কিছুটা ভড়কে গেছে। এইখানে রাগার মত অনেক যুক্তিই আছে৷ সবচেয়ে বড় কথা, লোকটা ওকে পুলিশ স্টেশনে এসেও বাজে ভঙ্গি করেছে। ফারহা তক্ষুনি সবার হাত থেকে ছুটে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েছিল। পুলিশ এসে ওদের আটকে দিয়েছে। জামান অনেক কষ্টে ফারহাকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। থেকে থেকেই সে বাংলাতে নিজের অভিধানে থাকা সমস্ত গালি দাঁতে দাঁত চেপে উগড়ে দিচ্ছে।

যেহেতু ফারহার পাসপোর্ট আর ভিসার কাগজ নিয়ে বের হয়নি, তাই পুলিশি নির্দেশে জামান ফারহাকে স্টেশনে রেখে বাসায় যেতে হয়েছে। এর মাঝে ইরফান আর মেহেরজান স্টেশনে ছিল ফারহার কাছে। নাহলে ফারহা কি করত কে জানে! ওর কি নিজের রাগের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই? জামান মুখ বন্ধ করে আছে। রাগ ওরও হচ্ছে, কিন্তু নিউইয়র্ক পুলিশ স্টেশন রাগ দেখানোর যায়গা না। এখানে ওদের বিচার যা পাওয়ার পাবে, কিন্তু উলটা পালটা কাজ করলে পুলিশ ওদেরকেও ঝামেলায় ফেলতে পারে।

বিদেশীরা যখন নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যায়, তখন তাদের সবকিছুই বদলে যায়। কিছু নাগরিক সুযোগ আর নিরাপত্তার বিনিময়ে সরকারী নিয়মের কাছে ওদের নত থাকতে হয় অন্যদের তুলনায়। জামান তাই চুপ করে অফিসারকে দেখছে। ওর বিশ্বাস, এখানে ওরা যথাযোগ্য বিচার পাবে।

অফিসার ওদের সামনে এসে বসে জিজ্ঞাসা করল,
"আপনি জ্যামান?"
"জ্বি"
"উনি কি হয় আপনার?"
"ওয়াইফ"
"আপনি কি ঘটনাস্থলে ছিলেন? উনার সাথে?"
"আমি আসলে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমি বার থেকে বের হতে দেখলাম ওর সাথে লোকটা ধস্তাধস্তি করছে"
"শুরুতে কি হয়েছিল?"
এই প্রশ্নটা অফিসার ফারহাকে করল। ফারহার মুখ থমথমে। জামান ওর হাত চেপে ধরে চোখের ইশারায় শান্তভাবে কথা বলতে বলল। ফারহা বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে শুরু করল।

অভিসারক ও অভিসারিণী Donde viven las historias. Descúbrelo ahora