"সমু রে , আরে ও সমু ... এবার আয় মা ...সবাই চলে গেছে । "
বাইরে থেকে নিশা ডাকছে । সমৃদ্ধি এখন স্নান করে মাথায় একটা আর শরীরে একটা তোয়ালে পেঁচিয়ে বাথরুম থেকে রুমে এলো ।
নিশার ডাকে ও উত্তর দেয় "তোমরা গিয়ে লাইন দাও আমি আসছি । "
আসলে আজ ওদের হোস্টেল এর রয়াল ডিনার , অন্যদিনের তুলনায় একটু ভালো খাবার দাবার দেয় , ভালো বলতে বেশ ভালই । তাই সবাই একটু আগে আগে যায় খাবার আনতে ।
সমৃদ্ধি গায়ে টাওয়াল জড়ানো অবস্থাতেই প্রথমে ট্রাকসুট পরে । তারপরে মাথার টাওয়েলটা খুলে চুলগুলো ভালো করে মুছে নেয় ।
গায়ের টাওয়েলটা খুলতে যাওয়ার সময় ওর চোখ যায় স্পন্দনের ছবিটা বালিশে হেলান দিয়ে দাঁড় করানো। মনে হচ্ছে যেন ওর দিকেই তাকিয়ে আছে । সমৃদ্ধির গালে লাল আভা ছড়িয়ে পড়ে , স্পন্দনের ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে "খুব শখ না তোমার ? ভাগো..."
এই বলে চাদরটা ছবিটার ওপরে ছুড়ে দিয়ে ছবিটাকে ঢেকে ফেলে । তারপরে গায়ের থেকে টাওয়েলটা সরিয়ে একটা টি শার্ট পরে নেয় । কোনো রকমে চিরুনি করে দৌড়াতে শুরু করে ।
"তুমি এক সেকেন্ড ওয়েট করো আমি চেঞ্জ করে আসি । বাইরে থেকে এলাম তো । "
ল্যাপটপে ভিডিও কল অন করে কথাটা বলে স্পন্দন । সমৃদ্ধি খাওয়া দাওয়া করে এসেই স্পন্দনকে কল করেছে । ওর সাথে একটু কথা বলে নিয়ে রিভিশন করতে বসবে ।
সমৃদ্ধি নীচের ঠোঁটটা আলতো করে কামড়ে বলে "বাইরে যাওয়ার কি দরকার ? এখানে চেঞ্জ করা যায় না ? "
স্পন্দন মুখে হাত দিয়ে ঢং করে বলে "হ...... কি দুষ্টু মেয়ে .. বাড়িতে বাবা দাদা নেই ? আমার বুঝি লজ্জা করে না ? "
সমৃদ্ধি হেসে বলে "বাবা আছে , দাদা নেই । আর আইসে বড় লজ্জাবতী লতা ... । "
স্পন্দন শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বলে ,"এই তুমি এভাবে কথা বলছ যে , তোমার রুমমেটরা নেই ? "
"দিদিদের পরীক্ষা নেই , তাই ওরা খাওয়ার পরে বাইরে হাঁটাহাঁটি করছে । আর রিমি পাশের রুমের এক ফ্রেন্ডের কাছে পড়তে গেছে। "
স্পন্দন "ও" বলে নিজের শরীর থেকে শার্টটা খুলে দেয় , ভেতরের ভেস্টটাও খুলে ফেলেছে , স্পন্দনের সুগঠিত লোমহীন শরীরের দিকে তাকিয়ে আছে , স্পন্দন ওর চোখে চোখ রেখে বলে "এরকম চাহনিতে তাকাবেন না ম্যাডাম ... আমার সহ্যশক্তি খুব একটা বেশি নয়। "
সমৃদ্ধি চোখ নামিয়ে নেয় । স্পন্দন হঠাৎ করে ল্যাপটপের আড়াল হয়ে এক মিনিটের মধ্যে ফুল প্যান্ট চেঞ্জ করে একটা হাঁটু অবধি শর্ট পরে ক্যামেরার সামনে এসে ল্যাপটপের সামনে আয়েশ করে বসে বলে "এবার বলুন.... "
সমৃদ্ধির গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোচ্ছে না । এই ছেলেটা এত attractive কেনো ?
স্পন্দন আবার ডাকে "এইযে.. ম্যাডাম কিছু বলুন... "
সমৃদ্ধি নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে বলে "তুমি এমন কেনো প্রাণ ? "
স্পন্দন বলে "আমি আবার কি করলাম ? "
"খেয়ে দেয়ে কাজ নেই তোমার ? "
স্পন্দন এবার ভাবে ও হয়তো সিরিয়াস কিচ্ছু করে ফেলেছে । ও শান্তভাবে বলে "but ঋদি আমি কি করেছি ? "
সমৃদ্ধি বেশ সিরিয়াস হয়ে বলে "সারাদিন আমার মাথার মধ্যে ঘুরে বেড়ানো ছাড়া কাজ নেই তোমার ?"
স্পন্দন ভ্রু কুঁচকে বলে "What...."
সমৃদ্ধি হেসে ফেলে । স্পন্দন মুচকি হেসে বলে "ভয়ে গেছিলাম আমি ঋদি.. ভাবলাম আমার জন্য হয়তো তোমার কোনো প্রবলেম হয়েছে ... "
তারপরে একটু থেমে বলে "Soo.. মিস ঋদি.... আপনি আমাকে অনেক মিস করছেন তাই তো ... "
সমৃদ্ধি ওপর নিচ মাথা নেড়ে বলে "হুমম...."
স্পন্দনের কন্ঠস্বরে পরিবর্তন আছে , একটু ঘোরলাগা মত শোনাচ্ছে ওর কন্ঠ "আমার presence ফিল করো ? "
"অনেক... "
"মনে হয় , প্রাণ যদি থাকতো আমাকে একটু আদর করে দিত ... "
সমৃদ্ধির মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না , তবে এইটুকু বুঝতে পারছে ওর নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে ।
স্পন্দন রোমান্টিক সুরে বলে "can you feel my touch on the peak of those soft mountains.. "
সমৃদ্ধির ভেতরটা উথালপাথাল করছে। ও বুকের কাছে হাঁটু ভাঁজ করে হাঁটু গুলোকে চেপে ধরে বসে । স্পন্দন বলে "আড়াল করে ফেললে কেনো ? "
সমৃদ্ধি তোতলাতে তোতলাতে বলে "তু তুমি খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পরো... "
স্পন্দন মৃদু হেসে বলে "বেশ ... আমি বুঝতে পারছি । "
সমৃদ্ধি ভ্রু কুঁচকে বলে "কি বুঝলে ? "
"এটাই বুঝলাম যে আরেকটু হলে আপনি পাগল হয়ে যেতেন ... আর আমি তো কাছে নেই যে আপনাকে শান্ত করে দেবো । তাই আমার এখানেই থেমে যাওয়া ভালো .. "
সমৃদ্ধি জিভ দেখিয়ে বলে "উব.. "
"জিভটাকে কামড়ে দেবো কিন্তু ... "
সমৃদ্ধি আবার জিভ দেখিয়ে বলে "অ্যা... "
"দাঁড়াও রে দুষ্টু , একবার সামনে পায় তোমাকে । "
নিশা আর ঋতজা কথা বলতে বলতে রুমে ঢোকে । সমৃদ্ধির দরজার দিকে তাকানো দেখে স্পন্দন বলে "ওরা মনে হয় চলে এসেছে তাই না .. "
সমৃদ্ধি বলে "হুমম.. "
"আচ্ছা বেশ , আমি রাখছি । তুমি পড়াশোনা করে নাও । লাভ ইউ.. "
"I LOVE YOU TOOO"
স্পন্দন ফোন কেটে দেয় ।
