Her biggest supporter

334 19 5
                                    

"এক ঘণ্টার জন্য এসেছ , এসে দশমিনিট ধরে মুখ ফুলিয়ে বসে আছো । কি হয়েছে ঋদি ? "
গাড়ির মধ্যে দুজনে গত দশমিনিট ধরে চুপচাপ বসে আছে । সমৃদ্ধি গাড়ির সিটে পা তুলে বসে আছে ।
স্পন্দন আর থাকতে না পেরে বলে "কাল তোমার পরীক্ষা .. আজ তুমি এরকম মুখ করে বসে আছো , কি হয়েছে ? আমাকে বলো । পড়া কমপ্লিট হয়নি ? "
সমৃদ্ধি মাথা নেড়ে বলে "পড়া হয়েছে , রিভিশন করছি আমি । "
"তাহলে কি কারণে মন খারাপ ? হোস্টেল এর কারোর সাথে ঝগড়া হয়েছে ? "
সমৃদ্ধি দুদিকে মাথা নেড়ে বলে "না .... "
স্পন্দন অস্থির হয়ে বলে "কোনো সমস্যা হয়নি , পড়া কমপ্লিট ..  তাহলে অকারণে এরকম মুড অফ করে বসে কে থাকে বলোতো ? "
সমৃদ্ধি মুখ ফুলিয়ে গম্ভীরভাবে  বলে "পরীক্ষার আগের দিন যায় পিরিয়ড হয় সে । "
স্পন্দন সমৃদ্ধির দিকে এবার ভালো করে  তাকায় ।  মেয়েটার মুখটা শুকনো শুকনো লাগছে এতক্ষণ তো লক্ষ্য করেনি ও । তাহলে সেইজন্যেই কি মুড সুইং হচ্ছে ওর ? এইসব ভাবতে ভাবতে ও বলে "খুব পেটে ব্যথা করছে তোমার ? "
সমৃদ্ধি বলে "আমার পেটে ব্যাথা বেশি হয় না , একটু একটু হয় । আর কোমরে আর পিঠে বেশি ব্যথা হয় , বমি বমি পায় কিন্তু বমি হয় না  , বিরক্ত লাগে।  "
স্পন্দন করুন স্বরে  বলে "পরীক্ষার সময় তো এরকম হলে মুশকিল ।  "
সমৃদ্ধি বলে "আমি কি আর এমনি এমনি মাথাগরম করেছি । "
স্পন্দন ওর হাত ধরে বলে "sorry বাবু , আমি বুঝতে পারিনি .. "
"তুমি কি করে বুঝবে , আমি তো তোমাকে বলিনি এর আগে কোনোদিন  । "
"তবুও  এত বড় হয়ে গিয়েছি , তোমার behaviour , মুড এর পরিবর্তন দেখে বোঝা উচিত ছিল আমার । তখন থেকে তোমাকে বিরক্ত করে যাচ্ছি । "
"যাই হোক ছাড়ো , দুটো খবর আছে একটা গুড নিউজ একটা bad news... "
"কি news.."
"প্রথমে গুড টা বলতে হবে , নাহলে bad টা বলা যাবে না । গুড টার সাথে bad টা কানেক্টেড.. "
স্পন্দন মাথা নেড়ে বলে "ok then আগে গুডটা বলো , তারপরে bad টা শুনবো । "
সমৃদ্ধি বলে "তোমাকে বলেছিলাম আমার দিদি ক্যারাটে ব্ল্যাক বেল্ট তোমার মনে আছে ? "
স্পন্দন হেসে হেসে বলে "বাবা , সেই কথা আবার ভোলার মত .... "
"হাসবে না , শোনো ... দিদি ক্যারাটে তে মহারাষ্ট্রকে রিপ্রেজেন্ট করবে ইন্টার স্টেট ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে , কেরালা তে । "
স্পন্দন বলে "wowww..  that's a great news ... Congratulations... "
সমৃদ্ধি মুখ ভার করে বলে "thank you.. "
স্পন্দন অবাক হয়ে বলে "আরে , এত ভালো একটা নিউজ দিয়ে আবার মুখ ভার করে নিলে কেনো ? "
"কারণ এর মাঝেই তো bad নিউজটা  লুকিয়ে । "
"সেটা কি ? "
"এই চ্যাম্পিয়নশিপটা শুরু হবে আমার এক্সাম শেষ হওয়ার আগের দিন থেকে  , আর চলবে একুশদিন পর্যন্ত । তো বাবা মা তো দিদির সাথে কেরালা যাবে , ভেবে ছিলাম পরীক্ষার পরে  বাড়ি যাবো ... আমার মনে হয় বাড়ি যাওয়া হবে না ...   "
স্পন্দন মুচকি হেসে বলে "wow.. এটা তো আমার জন্য very good news..  "
সমৃদ্ধি ওর দিকে তাকিয়ে বলে  "কি বললে তুমি ? "
স্পন্দন দুদিকে মাথা নেড়ে বলে "না , একদম খারাপ নিউজ .. খুব খারাপ নিউজ .. আমার ঋদি পরীক্ষার পরে বাড়ি যাবে ভেবেছিল যেতে পারছে না । খুব খারাপ নিউজ এটা .. "
এই বলে সমৃদ্ধির গালে হাত দিয়ে মনে মনে বলে "মজা পেলাম । "
আর মুখে বলে "কোনো ব্যাপারনা  , বাবা মা যখন ফিরবে তখন বাড়ি থেকে ঘুরে এসো । "
"সেটা হবে না , কারণ অতদিন আমাদের ছুটিই থাকবে না । বাবা বলেছে  দিদিকে কেরালা থেকে নিয়ে ফিরে আসার পর কলকাতায় এসে কদিন থেকে যাবে আমার কাছে । "
"বাহ .. এত প্রবলেম সলভ.. তুমি যেতে পারছো না বাবা মা আসবেন , এর জন্যে মন খারাপ করতে নেই সোনা । "
"পরীক্ষার পরে সবাই বাড়ি যাবে , আমি কি করবো ওই কদিন  ..."
"সেটা তুমি আমার ওপরে ছেড়ে দাও বাবু .. আপাতত বক্সে তোমার জন্য কিচ্ছু আছে দেখো । "
সমৃদ্ধি গাড়ির বক্সটা খুলে দেখে তারমধ্যে একটা কাগজের বাক্স রাখা ,  সেই বক্সটা খুলে দেখে ওর জন্য আটখানা বলপেন  , দুটো পেন্সিল , দুটো ইরাজার, দুটো শার্পনার , একটা ক্যাডবেরী.. আর একটা ছোট চিরকুট রাখা ।
চিরকুটে লেখা "All the best for your exams my love.. "
আনন্দে সমৃদ্ধির চোখে জল চলে আসে , সারা স্কুলজীবন  থেকে এন্ট্রান্স এক্সাম অবধি ওর বাবা নিজের হাতে ওর পেন্সিল বক্স সাজিয়ে দিয়েছে পরীক্ষার আগে । নিজে পেন কিনে এনে দিত ,কলকাতায় আসার পড়ে সেটা আর হয়ে ওঠে না বলে সমৃদ্ধিরও মন খারাপ করে , ওর বাবারও । আজ সকালেই এটা নিয়ে বাবা মেয়ের মধ্যে কথা হয়েছে।  কিন্তু স্পন্দনযে  এইভাবে ওর বাবার মতো ওর পরীক্ষার জন্য পেন কিনে দেবে সেটা ও কোনোদিন ভাবতেও পারেনি , কারণ এই বিষয়ে স্পন্দনের সাথে ওর কথা হয়নি কোনোদিন ।
সমৃদ্ধি ছলছলে চোখে ওর দিকে তাকায় ,স্পন্দন বলে "পেনগুলোকে আমি একটু পুরোনো করে দিয়েছি ...  "
সমৃদ্ধি কিছু বুঝতে না পেরে বলে "মানে.. "
স্পন্দন বলে "নতুন পেনে তো লেখা স্মুথ হয় না , তাই আমি ওই আটটা পেন দিয়ে এটি পেজ ভর্তি করে আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম লিখেছি , তাতে পেনগুলো যদি একটু স্মুথ হয় আপনার লিখতে সুবিধা হবে আরকি ..  "
সমৃদ্ধি প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ে স্পন্দনের বুকে , স্পন্দনের এক গালে পরপর চুমু দিয়েই যায় । স্পন্দন বলে "আরে আরে , একটা গেলেই সব দিয়ে দিলে আরেকটা হিংসে করবে তো । আরেকটু হলে তোমাকে গাড়ীর স্টিয়ারিংয়ে ব্যথা লাগতো বাবু । এমনিতে তোমার শরীরটা ভালো নেই .. "
সমৃদ্ধি ওর গলা ছেড়ে দিয়ে  স্পন্দনের চোখের দিকে তাকায় । স্পন্দন নিস্পলক ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বলে "কি হলো ঋদি ? তোমার চোখে জল কেনো ? "
সমৃদ্ধি কিছু না বলে স্পন্দনের জামার কলার চেপে ধরে স্পন্দনের ঠোঁটে ঠোঁট মিলে দিয়ে স্পদনের নিচের ঠোঁটটাকে নিজের নরম দুই ঠোঁটের মাঝে নিয়ে চুষতে শুরু করে । স্পন্দন চুম্বনরত অবস্থাতেই হাত বাড়িয়ে সুইচ টিপে গাড়ির কালো কাঁচগুলো তুলে দেয় । সমৃদ্ধি পাগলের মত চুষে চলে স্পন্দনের ঠোঁট জিভ..  , স্পন্দনের বসার  পজিশন ঠিক না থাকায় ওর একটু uncomfortable ফিল হচ্ছিল । কিন্তু সমৃদ্ধি স্পন্দনের ঠোঁটের গভীরতায় এতটাই ডুবে গিয়েছিল যে স্পন্দনের  আর ওকে  বাঁধা দিতে ইচ্ছে করছিল না ।

সমৃদ্ধি স্পন্দনকে মুক্ত করে দিতেই স্পন্দন নিজের ঠোঁটে হাত বুলিয়ে বলে "বাপরে এটা কি ছিল , টর্নেডো নাকি হ্যারিকেন ? "
সমৃদ্ধি ওর দিকে তাকিয়ে বলে "অমফান... "
স্পন্দন হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে "এক ঘন্টা হতে চলো প্রায় । তুমি এবার রুমে গিয়ে একটু রেস্ট নাও , রাতে একটু পড়লে পড়বে আর শরীর খারাপ লাগলে পড়তে হবে না।  "
স্পন্দন বক্সটা একটা ব্যাগে পুড়ে দেয় । গাড়ি মাথার ধারেই পার্ক করা ছিল।  দুজনে গাড়ি থেকে নামে , স্পন্দন ওর কপালে চুমু দিয়ে বলে "All the best my dimple girl.. আমি জানি কাল তুমি ফাটিয়ে দেবেই । "
সমৃদ্ধি ব্যাগটা বুকের কাছে জড়িয়ে নিয়ে বলে "এবার তো আমি ফাটিয়ে দেবই । "
স্পন্দন হেসে ওর হাতটা ধরে বলে "চলো তোমাকে গেট অবধি এগিয়ে দি । "।









(ক্রমশ...)



প্রেমিক Where stories live. Discover now