Maa rocked Spandan shocked

400 32 15
                                    

অপরাজিতা বাথরুমে স্নান করছে । স্পন্দন বাইরের সোফায় বসে ভাবছে "এবার আমার কি হবে ? মা রাগ করেছে কেনো সেটাই তো বুঝতে পারছি না , আমি প্রেম করছি  কিন্তু বলিনি তাই রাগ করেছে নাকি এগুলো দেখে ।"
অপরাজিতা স্নান সেরে  মাথায় টাওয়েল জড়িয়ে একটা কুর্তি আর একটা প্লাজো পড়ে বেরিয়ে আসে । মাকে ব্যালকনিতে জামাকাপড় মেলতে যেতে দেখে স্পন্দন বলে "ওই হোই , ব্ল্যাক কুর্তি মে কেয়া কামাল লাগ রেহি হে মেরি মা ... "
অপরাজিতা ছেলেকে একটা ডেড লুক দিয়ে চলে যায় ।
মা ব্যালকনিতে ফিরে আসতেই স্পন্দন দৌড়ে এসে ওর মায়ের হাত ধরে বলে "ও মা , শোনোনা মা ... আমার কথাটা শোনো । "
অপরাজিতা বলে "আমার বোধ হয় শোনার বয়স চলে গিয়েছে , তাই তো আমার ছেলে আমাকে এখন আর কিছু বলার প্রয়োজন বোধ করে না । "
স্পন্দন মনে মনে বলে "এই একটা রোস্টার কি কম ছিল আমার বাড়িতে যে আমি বেছে বেছে আরেকজন রোস্টিং কুইনকে ভালবাসলাম ।   "
অপরাজিতা মাথার টাওয়েলটা খুলে চুল গুলো ভালো করে মোছে, স্পন্দন মায়ের মুখের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে "আমি তোমাদের জামাকাপড় গুলো আলমারিতে তুলে দি ? "
"অত দয়া করার দরকার নেই ,নিজের জামাকাপড়গুলো গুছিয়ে নিন , বাড়ি যাবো আজ । "
স্পন্দন এগিয়ে এসে মায়ের দুই গালে হাত রেখে বলে "ও মা রাগ করছ কেনো মা ? আমি তোমাকে বলতাম তো .... "
"কবে শুনি ? বিয়ে করে চলে আসার পরে ? তোমাকে জন্ম দেওয়ার পরে প্রথম যখন তোমাকে কোলে নি , তখন থেকেই ভাবতাম আমি আমার ছেলের বেস্ট ফ্রেন্ড হব , আমার ছেলে যেনো  আমাকে কিছু বলতে দ্বিধাবোধ না করে এমন একজন মা হবো আমি .. এতদিন তো ভাবতাম আমি হয়তো আমার ছেলের বেস্ট ফ্রেন্ড... কিন্তু আজ ... হু..."
অপরাজিতা ঘরে চলে যায় ,  স্পন্দন মায়ের পিছু পিছু দৌড়ায় ।
মা বিছানায়  বসে আছে , স্পন্দন  একটা চেয়ার টেনে ওর মায়ের সামনাসামনি বসে ওর মায়ের হাতটা ধরে বলে " তুমিই তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড মা , আমি ভেবেছিলাম তুমি ইন্ডিয়া ফিরলে ঋদি না  মানে সমৃদ্ধিকে নিয়ে তোমার সামনে গিয়ে একদম  সারপ্রাইজ দেবো তোমাকে ...  "
অপরাজিতা একটা ভ্রু তুলে বলে "আমার সারপ্রাইজ পাওয়ার আর বাকি আছে , যেই সারপ্রাইজ আমি পেলাম ,জীবনেও ভুলবো না  । এই সমৃদ্ধিটা কে  ? "
"তোমার শাশুরি ..."
"অ্যা... "
"না মানে ওই আর কি , তোমার would be বৌমা , আমার ছেলে হলে আমার ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দেবো তো , তাই একদিন ও তোমার শাশুরিই হবে । "
অপরাজিতা রাগ করবে কি না হাসবে বুঝতে পারে না , শেষে নকল রাগ দেখিয়ে বলে "would be বৌমা , আবার ছেলেও হবে.. এতদূর প্ল্যানিং , বা ভালই ... আমাদের আর কি দরকার ... "
স্পন্দন অস্থির হয়ে বলে "আরে এই দেখো , আবার রাগ করে , আমি তোমাকে হাসানোর জন্য বললাম তো ... "
অপরাজিতা মুখটাকে আরো গম্ভীর করে বলে "হাসি পাচ্ছে না আমার ... "
স্পন্দন মায়ের হাতের ওপরে হাত বুলিয়ে বলে "ও মা শোনোনা... সমৃদ্ধি খুব ভালো মেয়ে মা ... একদম তোমার মত , তাই তো শিমলাতে ওকে দেখার পরে ওর প্রতি আমি দুর্বল হতে থাকি ,ওকে ভীষণ ভাবে ভালোবেসে ফেলেছি মা । বিশ্বাস করো , ওর মতো করে আগে কোনো মেয়েকে এভাবে দেখতে ইচ্ছে করেনি । এইভাবে তোমাকে সামনাসামনি বলছি , এখন যেই ফিলিংসটা দেখতে পাচ্ছ তুমি ফোনা বললে তুমি তো বুঝতে পারতে না তাই তোমাকে বলিনি অপেক্ষা করছিলাম তোমার আসার । "
ছেলের চোখে উপচে পড়া ভালোবাসা দেখতে পায় অপরাজিতা , একদম বাপের মত হয়েছে ছেলেটা চোখের চাহনি দিয়েই মনের সবকিছু এক্সপ্রেস করে ফেলতে পারে । চোখের সামনে কতটা বড় হয় গেলো স্পন্দন , অপরাজিতার ইচ্ছে করে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিতে , কিন্তু না এখন একটু রাগ করার নাটক করতে হবে ।
মুখে গাম্ভীর্য বজায় রেখে বলে " তাহলে শিমলাতে পরিচয়  , নাম সমৃদ্ধি ... তা কি করেন আপনার সমৃদ্ধি ..  "
মা সমৃদ্ধির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে দেখে স্পন্দন উৎসাহিত হয়ে বলে "মেডিক্যাল স্টুডেন্ট , সেকেন্ড ইয়ার... "
অপরাজিতা মনে মনে বলে "বাহ... "
আর মুখে বলে "বাচ্চা তো ...."
"দেখতে বাচ্চা , কিন্তু একদমই বাচ্চা নয় .. "
অপরাজিতা একটা ভ্রু তুলে বলে "মানে ? "
স্পন্দন দুদিকে মাথা নেড়ে বলে "না না কিছু নয় । তুমি ছবি দেখবে ? "
"নাহ...   "
স্পন্দন অস্থির হয়ে বলে "রাগ করছ কেনো মা । "
তারপরে  স্পন্দনের থুতনির নীচে হাত দিয়ে বলে "আমার ছেলে প্রেম করছে আমি মানলাম .., আমাকে বা তার বাবাকে কাউকেই জানায়নি তাও মানলাম ... কিন্তু  এগুলো এখনি করার কি খুব প্রয়োজন ছিল ... "
"আমরা কিচ্ছু করিনি.... We just kissed..…"
অপরাজিতা ভ্রু কুঁচকে তাকালে স্পন্দন বলে "না মানে ওই আর কি... We are so deeply in love যে  আমরা physically এতটা involved হয়ে গেছি বুঝতে পারিনি । "
স্পন্দন ওর মায়ের হাতটা নিজের দুই হাতের মধ্যে নিয়ে বলে "I promise... আমি কক্ষনো ওকে হার্ট করবো না ,কোনোদিন নিজের থেকে দূরে যেতে দেবো না , না কোনোদিন disrespect করেছি না কোনোদিন করবো । I love her মা... খুব ভালবাসি ওকে .. "
অপরাজিতা বলে "আর যদি সে আমার ছেলেকে কষ্ট দেয় তখন, আমি কিন্তু আমার প্রিন্স এর কষ্ট সহ্য করতে পারব না  ...। "
"দেবে না ... তুমি একবার ওর সাথে দেখা করো । তুমি ওর মুখটা দেখেই বুঝবে যে ও কোনোদিন আমাকে কষ্ট দেবে না । "
স্পন্দন একহাতে মায়ের হাত ধরে আরেকহাতে ফোনটা  বের করে নিজের গ্যালারি থেকে সমৃদ্ধির একটা ছবি মায়ের সামনে ধরে বলে "এই দেখো । "
ছবিটার দিকে চোখ আটকে যায় অপরাজিতার , কি মিষ্টি একটা মেয়ে । ছবিটার দিকে তাকিয়ে চোখ তুলে স্পন্দনের দিকে তাকায় সে , মায়ের রিয়েকশন জানার  জন্য উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে।  মেয়েটার মিষ্টি চেহারাটা দেখে অপরাজিতার মুখে নিজে থেকেই একটা স্মাইল চলে আসে , সেটাকে আটকে নিয়ে গম্ভীর হয়ে  বলে "ভালো । তবে তাকে এখনি জানানোর দরকার নেই যে আমরা India ফিরেছি... "
স্পন্দন অবাক হয়ে হয়ে "শুধু ভালো ? "
ছেলের মুখটা দেখে অপরাজিতার হাসি পাচ্ছে , আরেকটু গম্ভীর হয়ে বলে "আর কি বলব । "
স্পন্দন মাথা নেড়ে বলে "বেশ ঠিক আছে , কিন্তু তুমি এসেছ সেটা কেনো জানাবো না ? "
"আমি বললাম তাই , তার আগে আমার কিছু কাজ আছে । "
"সে তোমার যা কাজ আছে করো , কিন্তু বাবাকে এখনি কিছু জানিও না মা ।"
"আমি পাগল নাকি , এখনই তোমার বাবাকে জানাবো..  , এই ক মাসে  ছেলে এত কাণ্ড ঘটিয়ে বসে আছে জানলে তোমার বাবা মাথা ঘুরে পড়ে যাবে । "
স্পন্দন  উঠে নাকে জড়িয়ে ধরে বলে "I love you , I love you , I love my darling...  Love you soooooooooooo much.. "
"হ্যাঁ ঠিক আছে ঠিক আছে , এত তেল দিতে হবে না । এখন কথা আড়াল করা হচ্ছে , দুদিন পরে এই  আদরটাও ভ্যানিশ হয়ে যাবে আমি জানি তো । এখন তো  I love you বলার  মত মানুষ চলে চলে এসেছে জীবনে তাই না ... "
স্পন্দন ভ্যাবাচ্যাকা মুখ করে বলে "যাত্তেরি..."










(ক্রমশ...)

প্রেমিক Where stories live. Discover now