Hide and seek

382 16 9
                                    

"ঋদি....  যাও স্নান করে নাও ... "
স্পন্দনের হাঁক পেয়ে সমৃদ্ধি টিভি দেখতে দেখতে একবার পেছনে তাকায়।  স্পন্দন একটা টাওয়েল পরে  দাঁড়িয়ে আছে। J ভেজা চুলগুলো আলুথালু হয়ে কপালের  ওপরে ওপরে । সমৃদ্ধি একবার ওকে আপাদ মস্তক দেখে নিয়ে শুকনো ঢোক গেলে। 
স্পন্দন ওর চোখের চাহনি দেখে বলে "আমাকে এইভাবে দেখার অনেক সময় পাবেন ম্যাডাম .. যান স্নান করে নিন । "
"যান স্নান করে নিন  বললেই হবে ? আমাকে হোস্টেল দিয়ে এসো ... আমার কাছে জামাকাপড় আছে নাকি ... স্নান করে কি পরবো আমি ? "
স্পন্দন কোমরে হাত দিয়ে বলে "মানেটা কি ? কাবার্ড ভর্তি জামাকাপড় আছে আমার .. ওগুলোতে হবে না ? বারান্দায় রোদ এসেছে , তাড়াতাড়ি স্নান করে নাও .. মেলে দিলে শুকিয়ে যাবে । যাও দেরী কোরো না । "
সমৃদ্ধি সোফা থেকে নেমে বলে "যাচ্ছি ...."
যাওয়ার সময় স্পন্দনের সামনেসামনি হয় , কারণ স্পন্দন দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল।  সমৃদ্ধি মুখ তুলে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে "এইভাবে দরজা আটকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার কি মানে ? সরো...  আর শোনো , কোমরে হাত দিলে তোমার বাইসেপ্সগুলো বেশি বোঝা যায় বলে কথায় কথায়  কোমরে হাত দেবে না , ঝগড়ুটে কাকিমা লাগে ... "
স্পন্দন ওর কথার আগামাথা বুঝতে না পেরে বলে "কি ? "
কিচ্ছু না সরো তো..  এই বলে স্পন্দনকে ঠেলে সরিয়ে ঘরে ঢুকে যায়।  স্পন্দন ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলে "আমি তো সুস্থ ভেবেছিলাম , এটা কোন পাগল ? "
সমৃদ্ধি আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ খোজার পড়ে একটা চেক শার্ট খুঁজে বের করে।  ওটা নিজের সামনে ধরে দেখে হাইট ঠিকঠাক আছে । ওটা নিয়ে আর একটা টাওয়েল নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায় । স্পন্দন বাড়ির জামাকাপড় পরে কিচেনে ঢুকতে যাবে তখনই দরজায় কলিং বেল বাজে ।
স্পন্দন দরজা খুলতে যায় , দরজা খুলে  কাজের মাসিকে দেখে অবাক ।
"আন্টি তুমি ? তোমাকে তো আমি বলেছিলাম এক সপ্তাহ তোমার ছুটি ... "
"কি করবো ছোটুবাবা.. ম্যাডাম ফোন করে বললেন এক্ষুনি আসতে .. তোমার নাকি অসুবিধা হচ্ছে । তাই আমি তাড়াহুড়ো করে এলাম ...  "
"মা ফোন করেছিল ? "
"হ্যাঁ তো , আমাকে তো বললেন আমি যেনো তোমার কথা না শুনি , বলোতো বাবা তোমার কি কি ধুতে আছে আমি সেগুলো ধুয়ে দিয়ে রান্না বসাবো.. সকালে খেয়েছো কিছু .. "
"আন্টি আমার কিছু ধুতে নেই , তুমি বাড়ি চলে যাও.. "
"মা বলে রাধা কাজে যাওনি কেনো , ছেলে বলে আন্টি বাড়ি চলে যাও.. আমি কি করবো বলোতো ? ম্যাডাম তোমাদের অফিসের ম্যানেজারবাবুকে দিয়ে আমার ছেলের ব্যাংকে আরো এমাসের বেতন ছাড়াও  পাঁচহাজারটাকা পাঠিয়েছেন , আমি ম্যাডামের সাথে নিমকহারামী করতে পারব না । বলোতো বাবা কি করতে হবে ? বিছানা গুছিয়েছ ? নিশ্চয় না .. সরো আমি গুছিয়ে দি ... "
"না.... " স্পন্দনের চিৎকার শুনে রাধা ভয় পেয়ে যায় । আসলে স্পন্দন নিজেই ভয় পেয়ে চিৎকার করেছে ।
"কি হলো এরকম চিৎকার করলে কেনো বাবা .. "
"আন্টি .. তোমাকে আজকে আনার বেডরুমের কোনো কাজ করতে হবে না । তুমি শুধু ড্রইংটা পরিষ্কার করে খাবার কিছু একটা বানিয়ে দাও .. "
রাধা অবাক হয়ে বলে "কেনো ছোটুবাবা.. আমিই তো তোমার ঘর গোছাই.. আজ আবার তুমি আমাকে ঘরে যেতে মানা করছো কেন ? তোমার কি ঘর থেকে কিছু হারিয়েছে ? তুমি কি কিছু খুঁজে পাচ্ছো না ? বিশ্বাস করো বাবা .. এই রাধা তোমার মায়ের জন্য প্রাণ দিয়ে দিতে পারে.. সে তোমার ঘর থেকে কিছু নেয়নি । "
রাধার চোখ ছলছল করে উঠেছে , স্পন্দন বলে "আরে আন্টি ..  তুমি এত overthink করো কেনো ? আমার ঘর থেকে কিছু হারায় নি ।  "
"কি থিন .. "
"আরে ওভার think..  মানে বেশি ভাবা.., শোনো .. আমার ঘরের কিচ্ছু হারায়নি , তুমি বেশি ভেবো না । আমি যেতে বড়ো করছি কারণ আমার একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজ চলছে , জিনিসপত্র এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে , তুমি গোছাতে গেলে জিনিস এদিক ওদিক হয়ে গেলে খুঁজে পাবো না । তাই যেমন আছে সেরকম থাক  । তুমি বাইরের কাজ গুলো করে রান্নাটা করে দাও .. ।  "
রাধা মাথা নেড়ে বলে "আচ্ছা .. তাহলে আমি বাইরেটা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে তোমার খাবারটা করে দি । "
"আচ্ছা ... আর আন্টি আরেকটা কথা.. "
"হ্যাঁ বলো.. "
"বলছি আজ দুজনের খাবার হবে ? "
"দুজনের ? কেউ আসবে ? "
"হ্যাঁ আমার এক বন্ধু আসবে , ফ্রিজে সব আছে তুমি যা ইচ্ছে বানিয়ে দাও .. "
"আচ্ছা ... "

প্রেমিক Where stories live. Discover now