আজকাল খুব অমনোযোগী হয়ে পড়েছে আলিজা | সে নিজেও বিস্মিত হয় নিজের আচরণে | আজ তার আবার ভুল হয়েছে বই সাজাতে গিয়ে | এজন্য প্রফেসর আরোন জেডডিক রুক্ষভাবে বকাঝকা করেছে তাকে | আলিজার চোখে পানি চলে এসেছে একেবারে | সবার সামনেই তার চোখে ছাপিয়ে বড়বড় দুইফোঁটা পানি টপটপ করে মেঝেতে পড়েছে |
আলিজা কেঁদে ফেলবে ভাবেনি প্রফেসর জেডডিক | সে খটখটে গলায় তাকে বলেছে শুধু, "কান্নাকাটি করে লাভ নেই | বইগুলো গুছাও |"
প্রফেসর যেতেই তার সঙ্গে কাজকরা লাইব্রেরির মেয়েটি আর ছেলেটি দৌড়ে এলো | আলিজা চোখ মুছে বই গুছাতে লাগল | আলিজার সহকর্মী ছেলেটির নাম বেক্সটার, ডাকনাম বেক্সি বা বেক্স |
বেক্স এসে আলিজার কাঁধে হাত রেখে বলল, "উঠে এস তুমি | আমি করে দেব |"
বেক্স প্রফেসরের চেয়ারের দিকে চেয়ে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল, "দ্যাট স্ক্রুড আপ জিউইস ডুশব্যাগ ( ঐটা একটা পাগল ইহুদি বদমাস ) ! কেঁদোনা তুমি |''
সহকর্মী মেয়েটিও বলল, "আজ তুমি কোন কাজ করতে পারবে না | আমরা আছি | ওই বুড়োটা তোমাকে ইচ্ছামত খাটিয়ে নেয় |"
ওরা সব বই গুছিয়ে তুলে দিয়ে বলল, "এস আমরা দুপুরের খাবার খেতে যাই |"
তার কথা শুনে অনেকেই এগিয়ে এলো | আলিজা সবচেয়ে অবাক হল যশোয়া ব্রাউনিং কে তাদের সাথে বসতে দেখে | যশোয়া রিচমন্ড স্পাইডারস-এর একজন কোয়ার্টার ব্যাক, এখানে সে অনেক জনপ্রিয় ( রিচমন্ড ইউনিভার্সিটি ফুটবল টিম | আমেরিকান ফুটবল পায়ে নয়, হাতে বল নিয়ে খেলা হয় | আমরা যাকে গতানুগতিক ফুটবল বলি তাকে আমেরিকায় "সকার" বলা হয় ) | তার বান্ধবীও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামি চিয়ারলিডার, নাম বিয়াংকা লেমিংস |
সে বলল, "ওই ইহুদি পাগলটা ! আমি একটা শপথ করে রেখেছি | এনএফএ-তে ( ন্যাশনাল ফুটবল এসোসিয়েশন ) যখন আরবি-এর হয়ে আমি প্রথম রানটা দেবো, তার পরদিনই আমি ওকে গাড়িচাপা দেব | ও বিয়াংকাকে কি বলেছিল জানো ? বলেছিল তোমার মস্তিস্ক খুব ক্ষুদ্র, তুমি যেই স্কার্টটা পরে নাচো সেই স্কার্টের মত ক্ষুদ্র | ভাবতে পারো ?"
এরকম অনেকেই অনেক অভিযোগ করল | অনেক হাসাহাসিও হল | সবাইকে অবাক করে যশোয়া সবাইকে স্মুদি খাওয়ালো |
উঠার সময় সে আলিজাকে বলল, "তুমি যে পোশাকটা পরে থাকো আমার বান্ধবী খুব পছন্দ করে সেটা | আগামী সপ্তাহে আমাদের একটা 'বলিউড' পার্টি আছে | তুমি কি ওকে এই পোশাকটা পরিয়ে দেবে প্লিজ ?"