মহিলা আলিজাকে দেখিয়ে বললেন, "এইডা কে আপা ?"
ফাহমিদা আগ্রহের সাথে বললেন, "আমার মেয়ে, নাম আলিজা |" আলিজা সামান্য হাসলো তার প্রতি |
নাসিমা বলল, "আপনার না শুনলাম ছেলে আসে একটা ?"
"হ্যা | আইলান | ঢাকা ভার্সিটিতে জিওলোজিতে পড়ে |"
"ও | এখনো পড়তেসে ? চাকরি বাকরি হয়নাই কিসু ?"
"না ভাবি | মাস্টার্স শেষ হলেই শুরু করবে চাকরি |"
"ও | আর মাইয়ায় ?"
"ও ? ও ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে |"
"ও কি পাইসে ?"
"এ গ্রেড | জিপিএ হল ৪.৯ |"
"মহিলা একটু তাচ্ছিল্যের সাথে বললেন, "এ পাইসে আপা | ইস ! আরেকটু ভালো কইরা পরতা আম্মু | এহনকর দিনে পেলাস ছাড়া দাম নাই |"
আলিজা হাসলো একটু | তার কেমন অস্থির লাগছে |
মহিলা এবার তাকে প্রশ্ন করলো, "এখন কি করবা ?"
"পড়াশুনা শেষ করবো আন্টি |"
"কোই পড়বা ? তুমি কিসে পাশ করসো ?"
"সায়েন্স নিয়ে |''
"এখন কি পড়বা ? কোন কলেজে ভর্তি হইস ?"
"আমি ঢাকা ভার্সিটিতে আন্টি |"
"ভার্সিটিতে ? ও | ভালো | কি পড়বা অনাছ?"
"জ্বি | মাইক্রোবায়োলজি নিয়ে |" কথাটা বলেই আলিজা বুঝল মহিলা এর বিন্দুবিসর্গও বোঝেনি |
সে বলল, "চাইনচে পরসো ডাক্তারি পরীক্ষা দাও নাই কেন ? দিসিলা ? পাশ হউনাই ?"
"দিয়েছিলাম | পাশ ও করেছি কিন্তু ভর্তি হইনি |"
"কেন ? ও টেকার জন্য ?" বলে সে বলে ফেলল, "আমার মিলুর পরথমবার হইনাই কিন্তু পরেরবারে হইতেই আমি দিয়া দিসি | আপা দিয়া দিতেন কষ্টমষ্ট কইরা |"
"দিতাম তো অবশ্যই ভাবি কিন্তু ওর ভাই দিলোনা | বলল যে একটা বোন বরিশাল মেডিকেলে দেবোনা | ওর বাবাও তেমন রাজিনা | আর ঢাকা ভার্সিটিতে টিকে যেতেই আর কথাই বলেনি ওর ভাই | বলল ভালো বিষয়ে চান্স পেয়েছে আর কোনকিছু না | আসলে নতুন ভালো সাবজেক্ট ........|"
নাসিমা ফাহমিদাকে কথা শেষ করতে না দিয়েই বলে উঠল, "আরে রাখেন আপা ভালো ! যেই হোক মাইয়াদের জইন্য ডাক্তারির চেয়ে ভালো পড়া নাই | আপা কি ভুল করলেন ! মাইয়াডারে ডাক্তারিতে দিতেন | পাশ করলে চাকরি হইলে কত ভালো বিয়া হইতো | আপ্নের চিন্তায় সিলো না |"
মহিলার কথায় বিস্মিত না হতভম্ব হয়ে গেল আলিজা | এরপর আরো অনেক কথা বললেন মহিলা | সবই তার অর্থসম্পদ, বাড়িঘর, টাকা পয়সা, ছেলেমেয়েদের পেশা ও পসার, ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে |