এরিক আড়চোখে একবার দেখলো আলিজাকে | চুপচাপ বসে আছে জানালার ধারে একটা চেয়ার নিয়ে | সকাল থেকে একবারও আর কাঁদেনি | মনভার করে আছে একেবারে মেঘলা আকাশের মত | চোখে পানি টলটল করছে যেন আর একটু হলেই চোখের পাতার বাঁধ উপচে অঝোর ধারায় ঝরে পড়বে | এরিকের বেশ খারাপ লাগছে এখন |
আজ সকালে উঠেই আলিজা হাসপাতালে ফেরবার জন্য অস্থির হয়ে যাওয়াতে এরিক হঠাৎ অনেক রেগে গিয়েছিল | অনেকগুলো কথা বলে ফেলেছে সে আলিজাকে রাগের মাথায় | এখন তার বেশ অবাকই লাগছে যে সে কেন এমন করল | এটা একেবারেই উচিত হয়নি | এরিক কখনোই এসব পরিস্থিতিতে সহজে রাগ করেনা | কিন্তু আজ সে কেন যে এমন রেগে গেল হঠাৎ সে নিজেই বুঝে উঠল না |
এরিক ট্রিমিং শেষে গালে আফটারশেভিং বাম লাগাতে লাগাতে বলল, "লিজ তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও | আমি একটা হট শাওয়ার নিয়ে তবে খাবো | দেরি হবে আমার |"
আলিজা ঠোঁটের কোনে একটু হাসি রেখে বলল, "আমি এখন খাবোনা এরিক |"
"কেন ? বললাম তো দেরি আমার অনেক খাওয়ার | তুমি অর্ডার করে নাও |"
"না |"
এরিক ফোনটা তুলে নিয়ে বিরক্তভাবে বলল, "লিজ তুমি কখনোই কথা শোনো না | ব্যাপারটা বিচ্ছিরি | তুমিও আরসব মেয়েদের মত আচরণ করছো | আমার মেয়েদের এসব নখরা বিরক্ত লাগে | রুম সার্ভিসে ফোন করে দিচ্ছি কি খাবে এলে বলে দিও |"
আলিজা অবাক হয়ে এরিকের দিকে একবার তাকাল শুধু | তারপর মাথা নিচু করে ফেলল |
এরিক তার নিজের ব্যবহারে নিজেই বিস্মিত হয়ে গেল | সে এরকম কখনই করেনা কিন্তু আজ কি হল তার ? সে মূলত কথা বলতে গিয়েছিল এলিজার সাথে সকালের ব্যাপারটা নিয়ে স্যরি বলতে | কিন্তু সে কেন যেন দুঃখপ্রকাশের পরিবর্তে আরো কিছু কড়া কথা বলে ফেলল | এরিক দ্রুত বাথরুমে ঢুকে গেল |
এরিক বাথরুম থেকে বেরিয়ে আলিজাকে ডাকতে লাগল | জবাব না পেয়ে বলল, "লিজ রাগ করোনা | আমার সকাল থেকেই মুড অফ |"
আলিজার ফোনটা বাথরুমে ঢোকার আগে এরিক বেডটেবিলের উপর রেখেছিল | সেখানেই আছে, ভাইব্রেশন হচ্ছে |
এরিক ফোনটা তুলে হাতে নিয়ে আলিজাকে উদ্দেশ্য করে বলল, "লিজ তোমার ভাইয়ের ফোন |''
জবাব নেই | এরিক বসার ঘরে দেখল কেউ নেই |
এরিক প্যান্ট্রির দিকে যেতে যেতে বলল, "লিজ তোমার কফি বানানোর দরকার নেই | আমি সার্ভিসে বলে দেব |"
প্যান্ত্রিতে কেউ নেই | এরিক আবারও একটু রেগে গেল | সে তার হাতের তোয়ালেটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে বেডরুমের দিকে গেল | ড্রেসিংরুমে গিয়ে এরিক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল | লিজ চলে গিয়েছে !
এরিক লিভিং রুমের ডাইনিং কর্নারে এসে দেখল এরিকের পছন্দের সব নাশতা পেপারিনি এন্ড পারমেজান গ্রিল্ড স্যান্ডউইচ, হ্যাম এন্ড চিজ মাফিন, স্কচ এগ, রাস্পবেরি এন্ড এপল রোল্ড প্যানকেক আর কফি টেবিলে সাজিয়ে ক্লশ ঢেকে রেখে গিয়েছে | নাশতার সাথে একটা সি-সল্টের বোতল, বোতলটা চাপা দিয়ে একটা কাগজ | এরিক কাগজটা তুলে নিয়ে দেখল তাতে লেখা "থ্যাঙ্ক ইউ এরিক " |