#সুবর্ণলতা
- মেহেরুন নেছা হিতৈষীপর্ব ২
★
" যে ছেলেকে নিয়ে তোমার সাথে আমাদের হাজার বার হাজার ভাবে ঝামেলা হয়েছে, তোমাকে হাজারবার বুঝানো হয়েছে তবুও তুমি আমাদের কথা এতটুকুও বুঝতে চাওনি। অথচ আজ যেখানে তোমার মুখ চেয়ে আমরা এই বিয়েতে রাজীও হয়েছি সেখানে কি এমন হলো যে তুমি নিজেই এই বিয়ে ভেঙে দিচ্ছো?"
শাহরিয়ার কবির মেয়ের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললেন। তিনি লক্ষ্য করলেন তার মেয়ের চোখে পানি চিকচিক করছে।
" সুবা মা! মুখ তোলো৷ কোনো সমস্যা হলে আমাদের সাথে শেয়ার করো৷ হঠাৎ কি এমন হলো যে তুমি এমন একটা সিদ্ধান্ত নিলে?" শাহরিয়ার কবির মেয়েকে নিয়ে চিন্তিত।
সুবর্ণা মুখ তুলে তাকালো। তার সামনেই তার বাবা এবং মা বসে আছে। সে খুব ভালো করেই জানে এই বিয়ে ভাঙার জন্যে সে কোনো ধরনের শাস্তি পাবে না। কারণ বাবা মা কেউই একমাত্র মেয়ের বিয়েটা এভাবে হোক চায়নি। নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে মুখ খুললো সুবর্ণা,
" বাবা আসলে আমার আরো সময় চাই। আমি এখনই বিয়ের জন্যে প্রস্তুত নই। মা তুমি বলেছিলে না আমি যেন নিজে কি চাই বুঝতে চেষ্টা করি? মা আমি এখন এই মুহূর্তে এই বিয়েটা চাই না মা। আমি যদি এই বিয়েটা না করি, তোমাদের কি খুব বেশি অসম্মান হবে মা?"
কাশফিয়া রহমান মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন। সুবর্ণাও যেন একলা কোল খুঁজছিলো নিজের চোখের পানিটুকু লুকোনোর জন্যে।
" তোর বাবা কিংবা আমি আমরা কেউই এসব কথা ভাবছি না৷ আমাদের কাছে সবার আগে তোর সুখ। তোর সুখের কথা ভেবেই এতগুলো বছর পরেও ওই ছেলেকে আমরা মেনে নিয়ে তোদের বিয়ের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আজ যেহেতু তুই নিজেই বুঝতে পারছিস কোনটা ভুল আর কোনটা ঠিক, আমরা কেনো বাধা দেবো?"
সুবর্ণা মায়ের কথা শুনে মায়ের দিকে তাকালো। সে জানে বাবা মা তাকে কতটা ভালোবাসে৷
" সেসব ঠিক আছে। কিন্তু প্রীতমের বাবা মায়ের সাথেও তো একটু বসা দরকার। ওরা ব্যাপারটা সহজভাবে নাও নিতে পারে।"
শাহরিয়ার কবির একটু চিন্তিত হলেন।
" বাবা তুমি আংকেলের ফোনে একট কল দাও। কাল সকালে ওনাদের আসতে বলো। আমার ওনাদের সাথেও কিছু কথা আছে। আর প্রীতমকেও নিয়ে আসতে বলো। আমি চাই কথাগুলো ও শুনুক।"