সুবর্ণলতা
- মেহেরুন নেছা হিতৈষীপর্ব ৩৯ (অন্তিম পর্ব)
★
সুবর্ণা এবং সৌরভ দুজনেই সময়মত অনুষ্ঠানে চলে এসেছে। সুবর্ণা সৌরভের গাড়িতে এসেছে আর তার গাড়িটা গিয়ে ফুলিকে নিয়ে এসেছে।
তারা এখন সবাই মিলে একদম সামনের সিটে বসে আছে।
সুবর্ণার ভীষণ ভালো লাগছিলো সবকিছু। চারিদিকের সাজসজ্জা ঘুরেফিরে দেখছিলো সে।
" নার্ভাস?"
সৌরভের ডাকে সোজা হয়ে বসলো সুবর্ণা।
" উম.. একটু। "
" কেমন লাগছে?"
" ভীষণ ভালো। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না আজকের এত সাজ এত আলো এত গেস্ট সব আমার জন্যে। সবাই আমাকে ভালোবেসে আজ এখানে এসেছে। "
" মন দিয়ে কাজ করে যাও। দেখবে একদিন আরো অনেক দেশ বিদেশের মানুষও তোমাকে এওয়ার্ড দিতে চাইবে।"
স্টেজে একজন মহিলা সবাইকে সালাম জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে দিলো।
সুবর্ণা নড়েচড়ে বসলো।প্রীতম আজ অনেকদিন পর স্কুল লাইফের এক বন্ধুর বাড়িতে গেছে। আগেরদিনই শপিংমলে হঠাৎ দুজনের দেখা হয় আর পরেরদিন বিকেলে ছেলেটা প্রীতমকে চা নাস্তার দাওয়াত করে। ভীষণ জোর করছিলো বলেই প্রীতমের আজ আসা।
প্রীতম বসার ঘরে বসে আছে। ছেলেটা তড়িঘড়ি করে ঘরের টিভি অন করে দিলো।
" কি রে টিভিতে কি?"
" আরে একটা এওয়ার্ড ফাংশন আছে। আমাদের জুনিয়র মেয়েটা, ওইযে কি যেন নাম, ওই মেয়েটা আজ এওয়ার্ড পাবে তো। তোর তো জানার কথা। তোর সাথে তো মেয়েটার বেশ ভালো সম্পর্ক ছিলো।"
প্রীতম ঠিক বুঝতে পারলো না ছেলেটা কার কথা বলছে। চা খেতে খেতে টিভির দিকে তাকিয়েই প্রীতম থমকে গেলো।
" আমাদের আজকের এই সুন্দর সন্ধ্যাটা যার জন্যে, আমরা মঞ্চে ডেকে নেবো তাকে। আমাদের শ্রদ্ধেয় স্যারকে বলবো সম্মাননাটি তুলে দেওয়ার জন্যে। মঞ্চে আসছে মিস সুবর্ণা...."
এই পর্যায়ে প্রীতম দেখলো করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠলো পুরো অনুষ্ঠান। একজন বয়স্ক ভদ্রলোক সুবর্ণাকে একটা ক্রেস্ট তুলে দিলো এবং উত্তরীয় পরিয়ে দিলো।
প্রীতম যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।
" বন্ধু এই অনুষ্ঠান লাইভ হচ্ছে?"
" আরে হ্যাঁ তো। আমিই যেতাম। খুব শখ ছিলো। এখান থেকে দেড় দুই ঘন্টার রাস্তা। তবে গাড়ি নিয়ে টেনে গেলে আরো আগে যাওয়া যাবে।"
প্রীতম আর কথা না বাড়িয়ে দ্রুত বেড়িয়ে পরলো।
" এই কই যাস ভাই? কি রে?"
" অনুষ্ঠানটা কোথায় হচ্ছে এড্রেস মেসেজ কর দ্রুত।"
প্রীতম প্রায় চিৎকার করে কথাটা বলেই গাড়ি স্টার্ট দিলো।