#37

37 5 0
                                    

সুবর্ণলতা
- মেহেরুন নেছা হিতৈষী

পর্ব ৩৭

রিম্পির আজ সকাল থেকেই মন মেজাজ ভীষণ খারাপ। শেষ কিছুদিনের ঘটনা তাকে একদমই শান্ত থাকতে দিচ্ছে না।
রিম্পির হাসবেন্ড তুষার অনেকবার চেষ্টা করেছে রিম্পির মন ভালো করার কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। রিম্পি আরো বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। রিম্পি এখন রেডি হচ্ছে একটা জরুরি কাজের উদ্দেশ্যে। যাওয়ার আগে রিম্পি চটপট নিজের দরকারী কিছু জিনিস ব্যাগে ভরে বাসা থেকে বেড়িয়ে এলো।
রিম্পি গাড়িতে উঠতেই তুষার গাড়ি স্টার্ট দিলো।
" একটাবার সুবর্ণাকে জানালে হত না?"
" কি জানাবো অদ্ভুত? " রিম্পি আবারও রেগে গেলো।
" ওই ছেলের সম্পর্কে প্রমাণ ছাড়া কিছু বললে ওই মেয়ে আমার কথা শুনবে ভাবছো? ওরে আমি চিনি না? হারে হারে মজ্জায় মজ্জায় চিনি। সেই স্কুল লাইফ দেখে দেখে আসতেছি আমি ওর এই ছাগলামীগুলা। একটা মানুষ এতটা গাধা কিভাবে হয় আমি ওরে না দেখলে বিশ্বাসও করতে পারতাম না।"
" কিন্তু তবুও ও তো তোমার বান্ধবী রিম্পি।"
" ও আমার বান্ধবী না তুষার। ও আমার নিজের বোনেএ চেয়েও বেশি। আর তার জন্যেই আজকে আমি কাজটা করতেছি৷ অন্য কারো জন্য জীবনেও করতাম না।"
" সৌরভের সাথে কথা বলেছো?"
" বলেছি তবে এই ব্যাপারে কিছু জানাইনি।
ওই ছেলেও আরেক সাধু। কি রে ভাই!  আমার বান্ধবীটা না হয় ছাগল তোর ভালোবাসা বুঝতে পারে না। তাই বলে তুই একটু বুঝবি না যে ও কার পাল্লায় পরলো? যার তার হাতে তুই নিজের ভালোবাসাকে তুলে দিবি? আস্ত ছাগল একটা। "
কথাবার্তার এই পর্যায়ে তুষার হেসে ফেললো। তাতে যেন রিম্পির রাগ আরো বেড়ে গেলো।
" এই তুমি হাসছো কেন?"
" আমার হাসিটাও আবার ছাগলের মতন নাকি? "
" মানে?"
" আজ তুমি ছাগল শব্দটা বেশিই ইউজ করছো, তাও আবার দুজন নিরিহ মানুষকে গালি দেওয়ার জন্য। একটা নিরিহ প্রাণীর সাহায্যে এভাবে অন্য দুইটা নিরিহ প্রাণীকে বকাঝকা করা কি ঠিক?"
তুষার কথাটা শেষ করেই গাড়ি থামিয়ে দিলো।
" নিন ম্যাম, এসে পরেছি। "
রিম্পি রাগে গজগজ করতে করতে গাড়ি থেকে নামলো।
" এত রাগ করে কি কোথাও যাওয়া ঠিক? তুমি তো ঠিকঠাক ভাবে কোনো পয়েন্টই বলতে পারবে না।"
তুষারের এই কথাতে যেন কাজ হলো।
তুষার গাড়িটা পার্ক করতে করতেই রিম্পি নিজেকে শান্ত করে ফেললো।
তুষার ফিরে এসে হাসি মুখ দেখতে পেয়ে রিম্পিকে জড়িয়ে ধরলো।
" দ্যাটস মাই গার্ল। আমি জানি তুমি সব পারো। মাথা ঠান্ডা রেখো কেমন?"
" ঠিক আছে। আর এর মাঝে তুমি যেন কল দাও না। আমি নেমে নিজেই কল করবো।"
তুষারকে রেখে এপার্টমেন্টের ভেতরে ঢুকে পরলো রিম্পি।
এখানে সে এসেছে প্রীতমের সাথে দেখা করতে। ঠিক দেখা না, প্রীতমকে শক্তভাবে কিছু কথা বলতে এবং কিছু বিষয় পরিষ্কার করে জানাতে।
প্রীতম যখন কিছুদিন আগে সুবর্ণার জীবনে আবার ফিরে এসেছিলো, তখনই রিম্পির ভীষণ সন্দেহ হয়েছিলো এই ছেলেকে নিয়ে। রিম্পি কখনোই এই ছেলেকে মন থেকে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য মেনে নিতে পারেনি। এবার সেই কারণ ব্যাখ্যা করার সময় এসে গেছে।

সুবর্ণলতা [Completed✔️]Where stories live. Discover now