সুবর্ণলতা [Completed✔️]

#11

সুবর্ণলতা
- মেহেরুন নেছা হিতৈষী

পর্ব ১১
★
দেখতে দেখতে প্রায় একমাস কেটে গেছে। শাহরিয়ার কবির এখন একদম সুস্থ। এক্সিডেন্টের পর সপ্তাহখানেক পরেই তাকে বাড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। বউ এবং মেয়ের যত্নে খুব দ্রুত পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। তার এক্সিডেন্টের ব্যাপারে কিছুদিন তদন্ত চলেছে। কিছু মানুষকে সন্দেহও করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকঠাক প্রমাণ আর জোরাজোরির অভাবে কেস তদন্ত বেশিদূর আগায়নি। কাশফিয়া রহমানও খুব বেশি পাত্তা দেননি। নিজের স্বামীকে সুস্থভাবে বাড়িতে আনতে পেরবছেন, তাতেই তিনি ভীষণ খুশি।
সুবর্ণার এখন পুরোদমে ক্লাস চলছে। ক্লাস, পড়াশোনা, বাড়িতে বাবা মা আর সময় পেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রীতমের সাথে কথা বলেই দিন কাটছে সুবর্ণার।
প্রীতমের এখন ক্লাসের তেমন চাপ নেই। কিন্তু সুবর্ণার চাপ বেশি বলেই আপাতত দুজনে দুজনকে কিছুটা কম সময় দিচ্ছে। প্রীতমের জন্মদিনের দুদিন পরেই প্রীতমের সাথে কথা হয় সুবর্ণার। গ্রামে নেটওয়ার্ক ঠিকমতো পাওয়া যায় না বলেই হয়ত সুবর্ণা কলে পায়নি এমনটাই জানিয়েছিলো প্রীতম। সুবর্ণা সেটাই মেনে নিয়েছে। আগ বাড়িয়ে আর বলেনি কেনো তাহলে বারবার কল কেটে দেওয়া হচ্ছিলো। সুবর্ণা জানে প্রীতম কাজটা কখনোই ইচ্ছে করে করবে না। প্রশ্নটা মনের ভেতরে বিঁধে থাকলেও অতটা পাত্তা দেয়নি সুবর্ণা।
সবকিছু ভালোভাবে চললেও ওদের যে বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো এবং শেষ পর্যন্ত বিয়েটা যে হয়নি, এই কথাটা দুই ভার্সিটির অনেকেই জেনে গেছে। এইতো কিছুদিন আগেও সুবর্ণাকে ওদের ক্লাসের এক গ্রুপ ধরেছিলো কেনো ওদের বিয়ে হলো না, ওদের ব্রেকাপ হয়েছে কি না, কেউ কাউকে বিট্রে করছে কি না এসব জানার জন্য। যেনো ওদের লাইফ ওদের ফিউচার নিয়ে ওদের চেয়ে অন্যদের মাথাব্যথাই বেশি। প্রীতমকে এসব বলতেই প্রীতম হেসে উড়িয়ে দিয়েছে। আবার একটু খোঁচা দিয়ে বলেছেও যে কেনো বিয়েটা করলো না। বিয়েটা করলেই তো হত। আবার বিয়ে করতে চায় প্রীতম সেটাও ইনিয়ে বিনিয়ে বলেছে। সুবর্ণার নিজেরও একবার মনে হয়েছিলো এত কথা শোনার চেয়ে বিয়ে করে নেওয়াটাই বুঝি ভালো হত। কিন্তু দিন শেষে সুবর্ণার মা এবং রিম্পি সুবর্ণাকে বুঝিয়েছে। লাফটা হুট করে ডিসিশন নেওয়ার জিনিস না। লাইফে ভাবতে হয়। ভেবে চিনতে পা বাড়াতে হয়। কারণ পা বাড়ানোর আগপর্যন্ত সব ঠিকঠাক। পা বাড়ানোর পর সেখান থেকে পিছিয়ে আসাটা ভীষণ মুশকিল।