#5

61 3 0
                                    

সুবর্ণলতা
- মেহেরুন নেছা হিতৈষী

পর্ব ৫

"আমি প্রীতম। প্রীতম হক। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বাশার হকের একমাত্র ছেলে আমি। যাকে বলে পরিবারের প্রদীপ। না না আমি আমার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান নই। আমার বড় একটা বোনও আছে। রেহানা হক। কিন্তু তবুও ছোটবেলা থেকেই আমি এত আদরে বড় হয়েছি যে মাঝেমধ্যে মনে হয় আমি বুঝি একাই এবাড়ির সন্তান। অবশ্য এই নিয়ে আমার বোনের কোনো আক্ষেপ আমি কোনোকালেই দেখিনি। বরং আপুও আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে। ছোটবেলা থেকে শাসন কি জিনিস আমি জানি না। ফলাফল আমি ভীষণ জেদি আর একঘেয়ে। একবার মুখ দিয়ে যা বের করবো তা যেভাবেই হোক সম্পূর্ণ করতেই হবে। আমার বাবা মা বোন ছোটবেলা থেকেই আমার প্রতি পাগল। কখনো আমার কোনো চাহিদা অপূর্ণ রাখেনি।
ছোটবেলা থেকে আমার একটাই সমস্যা। আমি অন্ধকার ভীষণ ভয় পাই। আর ভয় পাই একাকিত্ব।
আমি খুব প্রাচুর্যের মাঝে বড় হলেও পারিবারিক শান্তি কি আমি জানি না। মা বাবাকে ভয় পাবে, বাবা মায়ের ঝগড়া হবে, পরিবারে মেয়েদেরকে ছোট করে দেখা হবে, ছেলেদের মাথায় তুলে রাখা হবে এটাই ছিলো আমার কাছে পারিবারিক সাধারণ চিত্র। ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি মা সামনে আমাদের সবার সাথে মিলে থাকলেও আড়ালে সে খুব একা। লুকিয়ে লুকিয়ে অনেকবার মাকে কাঁদতে দেখেছি। আর তাই কিছু বুঝে ওঠার আগে থেকেই আমি একাকিত্ব খুব ভয় পাই। মা ছিলো আমাদের সকলের মাঝে থেকেও ভীষণ একা। যাকে বলে জনতার মাঝেও থাকে নির্জনতা।
মা বাবাকে ভয় পায় এটা আমি জন্মের পর থেকে দেখে আসছি। বাড়ির মেয়েদের সবাই নিচু চোখে দেখবে এটাই আমি আজীবন জেনে এসেছি। আমার জগতটাই ছিলো পুরুষই হবে সমাজ এবং বাড়ির প্রধান। মেয়েরা সেখান উচ্ছিষ্ট মাত্র।
আমার সেই অদ্ভুত জগতে একদিন প্রবেশ ঘটলো খুব সাধারণ একটি মেয়ের। রোগা পাতলা, খাটো, গায়ের রঙ শ্যামলা ভীষণ সাধারণ এক মেয়ে। সুবর্ণাকে আমি প্রথম দেখি ওর বাবার সাথে একটা সুপার মার্কেটে। বাচ্চা একটা মেয়ে নিজের বাবাকে চোখ রাঙাচ্ছে আর বাবা যেন ছোট বাচ্চার মতন নিজের মায়ের সব আবদার পূর্ণ করছে। যা ছিলো আমার চোখে সম্পূর্ণ এক নতুন দৃশ্য।

সুবর্ণলতা [Completed✔️]Tahanan ng mga kuwento. Tumuklas ngayon