পর্ব ৩

849 41 5
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখনীতে, #AbiarMaria

#৩

আসিফ হকচকিয়ে বাবার দিকে তাকায়।বিষয়টা হজম করতে ওর কষ্ট হচ্ছে।তার মানে রাতে প্রেমের আলাপ করে করে বাবার কানে সব কথা দিয়ে নিজের পায়ে ও নিজেই এতদিন কুড়াল মেরেছে?!

তবুও দমে থাকা যাবে না।আসিফ শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে আবারো নতুন উদ্যমে নিজেকে ডিফেন্ড করতে থাকে,
"আব্বু,আমি ওর সাথে কথা বলেছি।কিন্তু আমি তো বিয়ে করার মতো ওরকম কিছু করিনি!তুমি আমাদের বিয়ে কেন দিচ্ছো?!"
"ওরকম কিছু করিসনি মানে?কসম করে বল ওর হাতও তুই ধরিস নি?"

আসিফ ওর বাবার কথায় ঢোক গিলে শেষবার দেখা করার দিনে চলে গেল।সেদিন প্রিয়ন্তি একটা টিয়া রঙের থ্রিপিস পরে এসেছিল।ওর এক গোছা চুল মুখের উপর ঘুরছিল যেটা ও সরাচ্ছিল না।আসিফ তখন প্রিয়ন্তির হাত চেপে ধরে। হাত চেপে ধরেই সে শান্ত হয়নি,রীতিমতো হাত কচলাকচলি শুরু করেছিল।প্রিয়ন্তি যখন বিরক্ত হয়ে হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলো,তখন আসিফ দুই হাত দিয়ে ওর এক হাত চেপে ধরে কচলাকচলি করছিল।বাবার কথা শুনে ওর এহেন পাপের কথা মনে পড়ে যায়।কিন্তু বাবার সামনে স্বীকার করা যাবে না। আবার অস্বীকারও করতে পারছে না।তাই কথা ঘুরিয়ে নিল।

"আব্বু,এইটা শাস্তি হচ্ছে আমার উপর। আমি মাত্র আঠারো বছরে পা রাখলাম।এখনই বিয়ে করব?!"
"কারো আঠারোতে বিয়ের বয়স হয়,কারো আটাশে,আর কারো আটত্রিশে।তোর আঠারোতেই বিয়ের বয়স হইছে।পেকে ঝুনা ঝুনা হয়ে গেছিস তুই।এইবার আমার ঘুম বরবাদ না করে ঘরে যা তুই!"
ইসমাইল সাহেব আসিফের কানের কাছে চিৎকার করলেন।তার ছেলে ধীরে ধীরে পিছিয়ে দ্রুত ঘুরেই নিজের ঘরে দৌড়।ইসমাইল সাহেব বিরক্ত হয়ে ছেলের চলে যাওয়া দেখেন।বিড়বিড় করে বলেন,
"প্রেমের সময় নাচতে নাচতে চলে যায়।আর এখন বিয়ের কথা বলাতে একেবারে ভেজা বিলাই সাজতে আসছে!ন্যাকামির আর যায়গা পায় না,হুহ!"

পরদিন সকাল সকাল আসিফ নাস্তার টেবিলে হাজির।সাধারণত কলেজ বন্ধ থাকলে এই ছেলেকে ঘুম থেকে তোলাই যায় না।আজ তাকে তাই এত আগে টেবিলে দেখে রাফিদা খাতুন ভাবেন,ছেলের বুঝি সুমতি হলো!তিনি সবার জন্য নাস্তা বাড়তে শুরু করেন।১০টার দিকে আসিফ হন্তদন্ত হয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেয়।ইসমাইল সাহেব অফিসের জন্য বেরিয়ে যাওয়ার পরে আসিফ জুতো পরতে বসার ঘরে আসে।তার মা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন,
"কলেজ নেই আজ?"
"না"
"তাহলে কোথায় যাচ্ছিস?"
আসিফ উদ্ধতস্বরে বলে,
"বিয়ে তো দিচ্ছোই আমাকে।অন্তত ছেলের যে স্বাধীনতা আছে কয়দিন,এইটুকু উপভোগ করতে দাও?!আমি বের হচ্ছি"
রাফিদা খাতুন ছেলেকে ইচ্ছেমতো বকেন।এরকম কুলাঙ্গার পেটে ধরে তার জীবনে আর শান্তি এলো না!

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Nơi câu chuyện tồn tại. Hãy khám phá bây giờ