#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখনীতে, #AbiarMaria#৮
"তুই কি সারারাত কান্না করেছিস?"
প্রিয়ন্তির চাচাতো বোনের কথায় প্রিয়ন্তি নিষ্প্রভ চোখে তাকে দেখে।মুখে কোনো অভিব্যক্তি না ফুটিয়ে বলল,
"খারাপ লাগছে?"
"নাহ,খারাপ লাগছে না।বরং আরও সুন্দর লাগছে।ভোরের শিশির ভেজা ফুলের পাপড়ি যেমন ভিজে সিক্ত হয়ে থাকে না?তেমনটা লাগছে"
প্রিয়ন্তি খুশি হবে নাকি কষ্ট পাবে তা নিয়ে নিশ্চিত না।চুপ করে চোখ বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে।ওর বোন ওর চোখ জোড়া সাজাতে সাজাতে বলল,
"এরকম সময়ে সবারই খারাপ লাগে।তোর তো একটু বেশিই লাগার কথা।ছেলেটা ছোট না হলে ঠিক বিয়ে হয়ে যেত।এত ভাবিস না,তোদের বিয়ে হয়ে যাবে।আপাতত নিজের পড়ালেখার দিকে নজর দে।"
প্রিয়ন্তি কিছু বলে না।চুপচাপ চেষ্টা করছে ওর চোখের পানি যেন কোনোভাবে বের হয়ে সাজ নষ্ট না করে ফেলে।সারারাত একটুও ঘুমাতে পারেনি।ওর বান্ধবী শায়লার সাথে রাতে কথা বলে অস্থিরতা আরও বেড়েছে।সবাই বলছে,আসিফের লক্ষণে প্রকাশ পাচ্ছে যে ও আসলে বিয়ে করবে না প্রিয়ন্তিকে।ছেলেটা সম্ভবত ওকে ভালোই বাসে না।তবে?আসিফের পরিবার যতক্ষণে ওদের বাসায় এসে পৌঁছেছে,ততক্ষণে দুপুরের তপ্ত রোদ কিছুটা বসে গেছে।সূর্য তেজ ছড়াতে ছড়াতে কিছুটা ক্লান্ত।দুপুরের খাবারের আগে আসার কথা থাকলেও ইসমাইল সাহেব কিছুতেই রাজী হননি।তিনি রাব্বানী সাহেবকে বলেছেন তারা দুপুরে এখানে খাবে না।তাই যেন এখন ঝামেলা না করেন।রাব্বানী সাহেব তবুও রান্না করেছেন।কারণ বাবুর্চি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল।আগের রাতে বিয়ে মানা করা হতে পারে,কাজী না ডাকা হতে পারে,কিন্তু মেহমান বা বাবুর্চিকে কি করে মানা করবে!তবে ওরা আসার পর নাস্তার ব্যবস্থা আগে করা হলো।আসিফদের বাড়ি থেকে মোট পনেরজন মানুষ এসেছে।এদিকে প্রিয়ন্তিদের বাড়িতেও বিশজনের মানুষ।
সবাই মিলে যখন বসলো,তখন একে অপরের সাথে পরিচিত হতে শুরু করে।এই প্রথম রাব্বানী আসিফকে দেখেন।ছেলেকে দেখে তার কাছে মনে হয়,এই ছেলে একটা নির্ঘাত রাজপুত্র।যেমন লম্বা,তেমন চেহারা।আজকে আসিফ পরেছে আকাশী রঙের সোনালী সুতোর কাজ করা পাঞ্জাবী।এর সাথে অফ হোয়াইট পাঞ্জাবী আর সোনালী দোপাট্টা।এই ছেলের সাথে যে কোনো বাবা তার মেয়েকে বিয়ে দিতে চাইবে।আর যদি ছেলে হয় প্রতিষ্ঠিত? তবে তো কোনো আপত্তি থাকার কথাই না!রাব্বানী সাহেব হাসিমুখে ভাবেন, ইসমাইল সাহেবের মতো বেয়াই পেলে কোনো সম্বন্ধ নষ্ট করার সুযোগ দেয়া যাবে না।তাছাড়া ছেলে যদি সত্যি সত্যি আর্মি বা নেভিতে টিকে যায়,তবে তো সোনায় সোহাগা! নিজের পরিবারকে তার ম্যানেজ করতে হবে।সব দিক থেকে পার্ফেক্ট একটা পরিবার কি এভাবে পাওয়া যায়?
YOU ARE READING
অপরিণত নিকাহনামা (Complete)
Romanceআসিফের সামনে বিয়ে।বাবার চড় খাওয়ার পর বিয়েতে মানা করার আর কোন উপায়ও নেই।বাবাকে নানাভাবে চেষ্টা করেও এই বিয়ে থামানো যাচ্ছে না। কেন বিয়ে থামাতে হবে?বিয়ে তো আসিফের ছয় মাসের প্রেমিকা প্রিয়ন্তির সাথেই।তবে কেন আসিফ এই বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করছে? কারণ প্রিয়ন্তি...