পর্ব ২৩

424 30 13
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখা #AbiarMaria

#২৩

প্রিয়ন্তি বিকেল থেকে ছটফট করছে আসিফকে কল করার জন্য। কিন্তু কল করে কি বলবে?এইটুকুই খুঁজে পাচ্ছে না।ঘুরে ঘুরে ঘরে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে আবারও রেখে দিচ্ছে।শরীরের ঘাম,কপালের ঘাম সব মিলিয়ে প্রিয়ন্তি নিজের কাছে চরম অস্বস্তি লাগছে।আচ্ছা,ফ্যানে বাতাস নেই নাকি?এত গরম লাগছে কেন? নাকি প্রিয়ন্তির প্রেশার বেড়ে গেছে।টেনশন কমাতে বান্ধবী শায়লার নাম্বারে ডায়াল করে।

এই বিশাল নামের ছেলেটা প্রিয়ন্তিদের বিল্ডিং এ থাকে অনেক আগে থেকেই।ছেলেটা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।ওখানকার হোস্টেলে থাকে বলে প্রিয়ন্তিদের সাথে দেখা হয়নি খুব একটা। ইদানীং বাসায় একটু ঘন ঘন এসেই প্রিয়ন্তি বিশালের চোখে পড়ে গেছে।এই ছেলে অবাক একেবারে।এত সুন্দরী ওদের নিচতলায় থাকে,অথচ ও জানেই না? সুযোগ বুঝেই মেয়েটার সাথে খাতির করে ফেলেছে।প্রিয়ন্তিকে তার কাছে যথেষ্ট সহজ সরল লেগেছে।তবে প্রচন্ড অবাক হয়েছে যে,ওর এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে জানার পরে।তবুও সে হাল ছাড়তে রাজী নয়।মাঝে মাঝেই প্রিয়ন্তির সাথে কথা বলে।আর যখনই কথা বলে,তখনই প্রশংসা করতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছর পার করার পর বিশাল এতটুকু জানে যে,কোনো মেয়ের পিছে আঠার মতো লেগে থাকলে সে রেসপন্স করবেই,হোক আজ কিংবা কাল।

প্রিয়ন্তি এত কিছু জানেনা।সে একেবারে সরল মনে 'ভাইয়া ভাইয়া' ডেকে বিশালের সাথে কথা বলে।

এদিকে আসিফ সবার বাসায় মিষ্টি দিয়ে বাসাএ সামনে আসতেই ওর আব্বুর সাথে দেখা।ওদের বাসায় কিছু গেস্ট এসেছে।আসিফ বাসায় ঢুকতেই তারা মাছির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ল; যেন আসিফের রেজাল্টের উদ্দেশ্যে আনা মিষ্টি নয়,আসিফকেই তারা খেয়ে নেবে! বাঙালীদের রেজাল্টের সময় কোত্থেকে যে কত গুলো মানুষ চলে আসে! গত এক বছরেও হয়ত তারা একবারও ফোন দেয়নি।কিন্তু আত্মীয়ের ছেলের ফলাফল প্রকাশ হতেই তারা মিষ্টিমুখ করতে হাজির হয়েছে!

আসিফের মনে হয়,এরা হচ্ছে সব দুধের মাছি! বেচারা ফোন চার্জে দিয়ে বসে বসে সবার কান্ডকীর্তি দেখতে থাকে।তবে খুব বেশিক্ষণ এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সোজা ছাদে চলে গেল। সবার সামনে মেকি মেকি হাসি দিতে ওর খুব কষ্ট হচ্ছিল। বারবার অপরিচিত এক ছেলের সাথে প্রিয়ন্তির হেসে হেসে কথা বলার দৃশ্য মনে ভাসছে আর রাগে গা জ্বলছে।অথচ ও কিছুই করতে পারে নি! এই ছেলে কে?কেন প্রিয়ন্তি তার সাথে কথা বলছিল?এখানে কি চাই তার? আসিফ অস্থির হয়ে সিগারেট ধরায়।সিগারেট হাতে লাইটারটা মৃদু কাঁপছিল।আসিফ জোরে বুক ভরে ধোঁয়া নিয়ে নেয়।ওর মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।এটা গার্লফ্রেন্ড জাতীয় সমস্যা না যে বন্ধুদেরকে বলবে কিংবা ইগ্নোর করার চেষ্টা করবে।প্রিয়ন্তি ওর বাগদত্তা। আসিফ ভাবে,মেয়েটা সুন্দরী হয়েই যত সমস্যা হয়েছে,সবার নজরে পড়ে যাচ্ছে।সামনেই কলেজে ভর্তি হবে।তখন যদি এরকম ছেলেদের কথায় গলে গলে গল্প করে,তখন কি ওদের বিয়ে টিকবে? নাহ!এইসব মেনে নেয়া যায় না!

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Tempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang