পর্ব ২৯

349 31 6
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখা- #AbiarMaria

#২৯

Suddenly it started raining,
Rain drops started falling on me,
And I realized,
I'm so alone to survive!

চার লাইন ডায়রীতে লিখে প্রিয়ন্তি জানালার সামনে উবু হয়ে কাঁদছে। বিশাল ছাদে যেমন ব্যবহার করেছে, ও তাকে ঠিকঠাক জবাব দিতে পারে নি। সবচেয়ে বড় সমস্যা এই ছেলে ওর বাসার উপরেই থাকে। ছাদে, রাস্তায়, সিঁড়িতে এমনকি বাসায় এসেও এমন সব কথা সে বলতে পারে যেটা ওর স্বাভাবিক জীবনে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। একটু আগে আসিফের টেক্সট এসেছে ওর কাছে-
"নিজের দেশের জন্য চলে যাচ্ছি,
তবুও জেনো, তোমার মনের দেশের যায়গাটা ছাড়ব না"
প্রিয়ন্তি ফোন বুকে চেপে ভাবছে, তুমি তো দেশের জন্য শত্রুর সাথে লড়াইয়ে প্রস্তুতি নিতে চলে গেছ, আমাকে রেখে গেছ দেশের মানুষের সাথে একা একা যুদ্ধ করতে। তোমার কাছে রাইফেল, স্টেন গান, ট্যাংক, কত কি আছে! আর আমার কাছে কি আছে? পছন্দের মানুষের সাথে সব ঠিক থাকা সত্ত্বেও প্রিয়ন্তির ইনসিকিউরিটি বেড়ে যাচ্ছে৷ আসিফ এত দূরে বসে কি ওর জন্য যুদ্ধ করতে পারবে? ওর সাথে থেকে জীবনটা আগাতে পারবে? কখনো ভুল বোঝাবুঝি হলে তা মেটাতে পারবে?

এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। পৌঁছে জানানো ছাড়া আসিফ এর মাঝে মাত্র একবার কল করেছিল। ওর ফোন এখন আর ওর কাছে নেই। প্রিয়ন্তি চাইলেও আসিফের কন্ঠ একবারও শুনতে পারবে না। আসিফ শুধু একবার ওকে এটুকুই জানিয়েছে যে, এখন থেকে কল দিতে হলে অফিস থেকে কল দিতে হবে। আর প্রতিদিন কল করাও সম্ভব না। আর্মির ট্রেনিং চলাকালে নিজের ফোন থাকে না। অফিস থেকেও নির্দিষ্ট সময় কথা বলতে পারবে। ওর মা মাঝে মাঝে কাঁদে, তাই প্রিয়ন্তিকে হয়ত সেভাবে ফোনও দিতে পারবে না। প্রিয়ন্তির কষ্টটা বেড়ে গেলেও এখানে ওর কিছুই করার নেই। বারবার রিগ্রেট হচ্ছে আসিফকে পছন্দ করা নিয়ে; পরক্ষণেই মনে হচ্ছে, Every great thing comes from sacrifice.

প্রিয়ন্তির এক দিন বাদে ক্যামিস্ট্রি পরীক্ষা। ওদের ক্লাসের সবার মতে, স্যারদের উপর এবার জ্বীনের আছর হয়েছে।তানাহলে ক্যামিস্ট্রি পরীক্ষা দিয়ে কি আর টেস্ট শুরু হয়?শুরু থেকেই ওদেরকে প্রেসার কুকারে রাখবে, আবার শেষদিন পদার্থবিজ্ঞান।মানে প্রেশার কুকারের মত সিটি বাজাতে বাজাতে ওরা পরীক্ষা দেয়া শুরু এবং শেষ করবে। আসিফের চিন্তা বাদ দিয়ে প্রিয়ন্তি বইয়ের দিকে মনোযোগ দেয়। পড়তে পড়তে আচমকা কিছু একটা ওর জানালার গ্রিলে আঘাত হানল। চমকে ওঠে হাতের কলমটা ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। একবার কলমের দিকে তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দেখে জানালার বাইরে থেকে কি আসলো? প্রিয়ন্তির জানালার সাথেই বারান্দা। বারান্দা থেকে পাশের বাসার ছাদ দেখা যায়। পাশের বাসার মানুষগুলো একতলা করে আর উপরে তুলতে পারেনি তাদের বাড়িটা। সেই খালি ছাদে বিশাল আরেকটা ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। বিকেলের রোদ এসে বিশালের উপর পড়ছে। প্রিয়ন্তি দাঁড়াতেই দুজনের চোখে চোখ পড়ল।

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Where stories live. Discover now