পর্ব ২৬

438 33 3
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখা- #AbiarMaria

#২৬

ঝুম ঝুম করে হুট করেই আকাশ ভেঙে বৃষ্টি শুরু হলো। দশ মিনিট আগেও এক চিলতে বিকেলের সোনালী মিষ্টি রোদ এসে শহরের দালানগুলো গরম করে দিচ্ছিল। অথচ দশ মিনিটের মাঝে আকাশ অন্ধকার হয়ে এসেছে। বৃষ্টির গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে কমে যাওয়ায় আসিফ বাধ্য হয় বাইকের স্পিড কমিয়ে ফেলতে। ও ভেতর থেকে তাগাদা অনুভব করছে দ্রুত বাইক চালানোর। ছুটির দিনের বিকেল হওয়ায় আশেপাশে সারা সপ্তাহ ব্যস্ত থাকা মানুষের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে যারা আজ পরিবার কিংবা প্রিয়জনকে সময় দিতে বাসার গন্ডি পেরিয়েছে। আসিফ গতি কিছুটা গতি কমিয়ে বাইক ডানে ঘুরায়। হুট করে বৃষ্টি শুরু হবে তা আসিফ বুঝতে পারে নি।। বাইক নিয়ে গলি থেকে বের হতেই আকাশ কালো হওয়া শুরু করে।আসিফ আকাশের বেগতিক অবস্থা দেখে বাইকের গতি একবারে বাড়িয়ে দেয়। তবু বিধি বাম, বৃষ্টি ততক্ষণে শুরু হয়েই গেছে। আসিফের রেইন কোট না থাকায় পাঞ্জাবী যতটা সম্ভব পুরোটাই ভিজে গেছে। হেলমেট না থাকায় কপাল আর গাল বেয়ে পানি পাঞ্জাবির ভেতর প্রবেশ করছে। ওর ক্লোজ শট নিলে এখন যে কোনো নায়কের রোলে ওকে চালিয়ে দেয়া যাবে। কিন্তু নায়িকা? এই নায়িকাকে নিয়েই যত সমস্যা ওর।

দুপুরে সব অতিথিদের খাবার শেষ হওয়ার পর আসিফ বাবাকে বলে বেরিয়ে আসে। বারবার চেষ্টা করেও প্রিয়ন্তির নাম্বার খোলা পাচ্ছিল না। অন্য কোনো উপায় না দেখে এলাকার এক ভাইয়ের বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে প্রিয়ন্তিদের বাসার উদ্দেশ্যে। আসিফ জানে এখন বাসায় কেউ নেই, আর এটাই প্রিয়ন্তিকে সাইজ করার সুযোগ।

আরও প্রায় পনের মিনিট পর আসিফ প্রিয়ন্তিদের বাসার সামনে পৌঁছে। বৃষ্টি কিছুটা কমে গেলেও একেবারে থেমে যায়নি। আসিফ বাইক পার্ক করে সন্তর্পনে প্রেয়সীর ফ্ল্যাটের সামনে এসে বেল বাজায়। কয়েক সেকেন্ড পর আবার বেলে চাপ দেয়। আসিফ খেয়াল করে প্রিয়ন্তিদের দরজায় কোনো পিপ হোল নেই। থাকলে প্রিয়ন্তি যে কোনোভাবেই দরজা খুলত না এ ব্যাপারে নিশ্চিত। আসিফ আরও সেকেন্ড ত্রিশেকের মত অপেক্ষা করে আবার বেল চাপে। ভেতর থেকে প্রিয়ন্তির কন্ঠস্বর শোনা যায়। "আসছি" বলে প্রিয়ন্তি দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলতে খুলতে ও হাত খোপা করছিল। আসিফ দেখে হাত খোপা করেই প্রিয়ন্তি বুকের উপর থেকে প্রায় সরে যাওয়া ওড়না টেনে নিজেকে ঠিক করে। মুখ তুলে প্রিয়ন্তি ওর হবু বরকে দরজার বাইরে দেখতেই একেবারে জমে যায়। ভেতরে ভেতরে ওর তখন চিন্তার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আসিফকে দেখে কি করবে? দরজা আটকে দিবে? নাকি বাসায় ঢুকতে বলবে? প্রিয়ন্তির ভাবনা শেষ করার আগেই আসিফ দুম করে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে ফেলে। প্রিয়ন্তি কিছুটা পিছু হঁটে দাঁড়ায়। আসিফ এবার শক্ত মুখে ওর দিকে তাকিয়েই একেবারে এক টানে ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে নেয়। আচমকা হেঁচকা টানে কোলে তুলে নেয়ায় মনের অজান্তেই প্রিয়ন্তির মুখ দিয়ে উঁক করে আওয়াজ বেরিয়ে আসে।

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Onde histórias criam vida. Descubra agora