পর্ব ৩৪

388 29 4
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখা- #AbiarMaria

#৩৪

আসিফ বিএমএ এর অফিসে বসে ভাবছে কার নাম্বারে ডায়াল করবে। শেষ পর্যন্ত প্রিয়ন্তির নাম্বারে ডায়াল করল। কয়েক সেকেন্ড পরেই ফোন রিসিভ করে ওপাশে চিৎকার শুনতে পারল। না না, আসিফ ঘাবড়ায়নি, কারণ প্রিয়ন্তি খুশিতে চিৎকার করে উঠেছে। আসিফ ভুলেই গিয়েছিল আজ প্রিয়ন্তির মেট্রিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার দিন। ফোনের ওপাশ থেকে প্রিয়ন্তি খুশিতে গলা ফাটিয়ে বলছে,
"জানো, আমি তিনটাতে এ পেয়েছি! আর বাকি সবগুলোয় এ প্লাস! গুলিটা একেবারে কানের পাশ দিয়ে গেছে! আরেকটু হলে তো জিপিএ ফাইভ মিস হয়েই যাচ্ছিল! ভাগ্যিস! আমার এই বছরটা খুব খুব ভালো যাবে! উফ, বেবী, আমি খুব এক্সাইটেড!"

এপাশে বসে আসিফ হাসে। আশকারা দেয়ার ভঙ্গিতে বলল,
"আমিও তো এক্সাইটেড হয়ে যাচ্ছি এখন। তা এই এক্সাইটমেন্টের জন্য কি করা যায়?"
"কি করা যায় মানে? কি করবে? ওয়েইট, আমি একটা পার্টি দিব! তুমি ঢাকায় আসলেই পার্টি হবে"
"পার্টি? তাহলে ওখানে শুধু তুমি আর আমি থাকব। কারণ আমার এক্সাইটমেন্ট কমানোর জন্য তো শুধু তোমাকে হলেই হবে বেবী!"
"অসভ্য কোথাকার! মানে মুখে কিছু আটকায় না? ছি ছি ছি! আমার কান লাল হয়ে যাচ্ছে!"
"আচ্ছা? আমি সামনে থাকলে..."
প্রিয়ন্তি খট করে ফোন কেটে দেয়। আসিফ হেসে শোনা যায় না, এমনভাবে বলে,
"সামনে থাকলে হাসাতে হাসাতে কাঁদিয়ে চোখও লাল করে ফেলতাম! ইশ, কথা না শুনেই রেখে দিল মেয়েটা!"

তারপর অনেক কষ্টে পা টেনে উঠে দাঁড়াল। গতকাল সিনিয়রদের কাছে পানিসমেন্ট পেতে হয়েছিল ওর রুমমেটের একটা ভুলের কারণে। এখানে ভুলের মাফ হয় না, পানিসমেন্ট হয়। দুজনকেই দুইশবার ফ্রন্টরোল দিতে হয়েছে। এরপর ওর রুমমেটকে ওর কাঁধে নিয়ে এক ঘন্টা দৌড় এবং ওকে কাঁধে নিয়ে ওর রুমমেটকে দৌড়াতে হয়েছে। ঝামেলা হয়ে গেছে, শেষ দিকে ওর রুমমেট পা বেঁধে ওকে সহ পড়ে গেছে। তাও এমন এক যায়গায় পড়েছে যে সেখান থেকে ডান পা বিছরি ভাবে রাস্তায় আছড়ে পড়েছে। এত জোরে পড়েছে যে মোটা প্যান্টের উপর দিয়েই ওর হাঁটুর অনেকাংশ কেটে রক্ত বেরুতে শুরু করেছে। ওর রুমমেটের নাম ইয়াসিন। ইয়াসিনের ভাগ্য ভালো যে ওর নিজের কিছু হয়নি। কিন্তু আর কয়েক মিনিট বাকি মাত্র! ইয়াসিন থামতে পারবে না, তাই আবারও আসিফকে কাঁধে নিয়ে সে দৌড়াতে শুরু করেছে। কয়েক মিনিট পরে যখন সিনিয়রদের কাছে রিপোর্ট করতে গেল, তারা আসিফের হাঁটু থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়া দেখে কিছুই বলল না, শুধু মেডিকেলে যেতে বলে চলে গেল। আসিফ ততক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল নিজ পায়ে যতক্ষণ সিনিয়র অফিসার সামনে ছিল। তারা চলে যেতেই ও পা ভেঙে মাটিতে পড়ে গেল। আরও দুজন দৌড়ে এসে ওকে মেডিকেলে নিয়ে গেল।

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Where stories live. Discover now