পর্ব ৩৫

559 30 3
                                    

#অপরিণত_নিকাহনামা
লেখা- #AbiarMaria

#৩৫

তিন সেশনের পর আসিফের নিজের প্রতি মোটামুটি কনফিডেন্স ফিরে আসে। এখন এই ডিফেন্সের জীবন এতটাও খারাপ লাগছে না, সর্বাবস্থায় অস্থির লাগার ভাবটাও কমে এসেছে। ডক্টর নন্দিতার প্রশংসা করতেই হয়, খুব সুন্দরভাবে তিনি আসিফকে হ্যান্ডেল করেছে। কারো মেন্টাল ব্রেক ডাউন টের পেলে তাকে ডক্টর নন্দিতা হেন্ডেল করেন। সাধারণত নতুন ক্যাডেটরাই তার কাছে বেশি আসে। এছাড়াও ডক্টরের কাজ হচ্ছে ক্যাডেট ও ট্রেইনিদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা। আসিফের অবশ্য এত তথ্যের প্রয়োজন নেই। শুধু ডক্টরকে দেখলে ও পলকহীন চাহনী ছুড়ে দেয়। ডক্টর নন্দিতা হেসে শেষ দিন বলেন,
"আমার মনে হয় আপনার আর এই সেশনের প্রয়োজন নেই। যে সমস্যা গুলো চলছে, এমন হাজার হাজার সমস্যা আসবে সামনে। শক্ত হাতে সেসবের মোকাবিলা করতে হবে। এটাই জীবন, এটাই বাস্তবতা। আশা করা যাচ্ছে, আমাকে আর আপনার প্রয়োজন হবে না!"

ডক্টর নন্দিতা হেসে চলে যান। আসিফকে ওর অফিসারের কাছে ফেরত আসতে হয়। ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম আসিফের দিকে ফিরে বলেন,
"ফিলিং কনফিডেন্ট?"
"ইয়েস স্যার!"
"আর ইউ গোইং হোম ইন দিস ভেকেশান?"
"ইয়েস স্যার!"
"গুড। নিজের কাজে যাও"
"স্যার!"
স্যালুট করে আসিফ সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। একটা কোর্সে ফেইল আসায় দুইদিন পর ওর বাড়িতে যাওয়ার কথা। আরও দুদিন এখানে থাকতে হবে। এবার ঠিক করেছে, প্রিয়ন্তি যেহেতু গ্রামে থাকবে, তাই ও বাসা থেকেই বেরুবে না। পুরো ভেকেশন ঘুমিয়ে কাটাবে।

দেখতে দেখতে ইদ এসে চলেও গেল। আসিফ পরদিন ট্রেনিং এ চলে যাবে বলে বিকেলে বেরুলো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে, অনেক দিন ধরে চায়ের কাপে ঝড় ওঠে না, আড্ডায় আড্ডায় চায়ের দোকান আর মুখরিত হয় না। হয়ত সেখানেও কেউ না কেউ থাকে, তবে সে মানুষগুলো আসিফ আর তার বন্ধুরা নয়। আসিফ বেশ প্রফুল্ল মনে চায়ের দোকানের দিকে রওনা দেয়। সেখানে ওর জন্য মোবারক,রাতুল, আসাদ অপেক্ষা করছে, এছাড়াও এলাকার আরো কয়েকজন বন্ধু আছে। অনেকদিন পর দেখা হওয়ার কারণে সবাই অনেকক্ষণ আড্ডায় মেতে থাকে। আড্ডায় আড্ডায় কখন একটা বিশাল সময় চলে গেছে, সে দিকে কারো খেয়াল থাকে না। হঠাৎ আসিফ বলে ওঠে,
"কিরে সামীর কোথায়?"
রাতুল বললো, "কেনো, তুই জানিসনা ঘটনা?"
"মানে? কি ঘটনা জানবো?"
মোবারক সিগারেটে টান দিয়ে বলে,
"গার্লফ্রেন্ডের বাসায় গেছিল। কেউ ছিলনা তখন ঘরে। আবেগে আবেগে কখন যে মেয়ের বাবা চলে আসছে ওর গার্লফ্রেন্ড আর ওর খেয়াল নাই! আঙ্কেলের কাছে ছিল আরেকটা চাবি। সেই চাবি দিয়ে ঘরে ঢুকে যা দেখা দেখলেন, তার পর আর কি! সামিরকে ধরে ওর পুরো পরিবারকে ডেকে নিয়ে অনেক অপমান করেন। তুই তো জানস ওদের পারিবারিক অবস্থা কেমন।"
"বলিস কি!ওর গার্লফ্রেন্ড কি তিন বছরের জুনিয়র মেয়েটা?"
"হ! আজকালকের মেয়েগুলা এত সেয়ানা! এই বয়সেই ওরা রুমডেট করতে শুরু করে দিছে। সামির আসলে মেয়েটারে অনেক ভালবাসত। এরপর কিছুদিন আমাদের সাথে বেশ দুঃখ শেয়ার করছিল। এখন আর খবর-টবর খুব একটা জানি না। ঘর থেকে বের হয়না শুনলাম!"
"বলিস কি! এটা কোন কথা? আমাদের ফ্রেন্ড হয়েও এরকম একটা কাজ করতে পারল?!"
রাতুল বলল,"তোর নিলয় এর কথা মনে আছে? সেই যে ছেলেটা চলত আমাদের সাথে? ওতো এ পর্যন্ত তিনটা গার্লফ্রেন্ড বদলে ফেলছে। সবগুলোর সাথে রুমডেট করা শেষ। মেয়েগুলোর বয়স জানিস?একটাও স্কুলের গন্ডি পারোয়নি,অথচ এর মধ্যে অপরিচিত ছেলের সাথে বিছানায় চলে যাচ্ছে!"

অপরিণত নিকাহনামা (Complete)Where stories live. Discover now