১- বন'এর ডাক

19 1 0
                                    


অফিস চার পাসে নিরিবিলি, কর্মচারিরা তাদের কাজ রবোটের মত করছিল। কেউ প্রজেক্ট নিয়ে, কেউ অন্য কাজ নিয়ে, কিন্তু তাদের নিষ্ঠুর এবং অলশ বস- আবদুল সবসময় সামাজিক যোগাযোগ অবথবা সেলফি নিয়ে ব্যাস্ত থাকতো। সে এতোটা অলশ ছিল যে তার কর্মচারিদেরকে না বুঝে কাজের চাপ দিত। তার আড়ালে, অফিসের চার পাসে আবদুলের আলসামী এবং অহংকারের জন্য বদনাম ছড়ায় যেত। আবদুল যখন অফিসে উপস্থিত হত তখন অফিসের সবায় ভীতিতে নীরব হয়ে সালাম জানিয়ে দিত। সামনে সম্মান কিন্তু আড়ালে অপমান-সত্যি কি না? হ্যা শুনতে দুঃখ লাগে কিন্তু আবদুল কখনো এটাকে গুরুত্ব দিত না। অফিস এরকম যে সব কিছু অগোছালো- চার পাসে ভাঙা এসি, অফিসের টেবিলগুলি নোংরা এবং এটা নিয়ে অনেক আঁচার-বিচার হয়ে ছিল কিন্তু আবদুল তার অহংকারের কারণে অফিসের পরিস্থিতিও ভুলে গেছিল।

"কি রে জোসেফ, কাজ কেমন যাচ্ছে? চা কফি খাবি নাকি?" বলল একজন অফিসের কর্মচারি।

"না রফিক, আমার এই এডটি শেষ করতে হবে! তাছাড়া স্যার আমারে মাইরা ফেলাবে" বলল জোসেফ।

"আরে, জোসেফ, তিনি তো তোমার এড দেখবে না কারণ তিনি সহজে কাজ দেখবে না, খালি মিটিং দিবে" বলল রফিক (কর্মচারিটি)।

হঠাট, আবদুল যখন উপস্থিত হল সবায় ভয়ে থমকে গেল। আবদুল রফিকের কাছে এমন ভাবে আসলো যে রফিকের লোম সিরসির করে উঠছিল।

"আড় বল, এখন কথা আটকায় যাচ্ছে কেন? ও, রফিক নাকি? তুইতো একটা গুলুগুলু বাচ্চা! তাই না? যাইহোক, তোমাকে আমি অফিস থেকে স্থগিত করে দিবো...বুঝনি ব্যাপারটা?" আবদুল মুচকি হেসে বলল।

রফিক এমনভাবে মন খারাপ হয়ে গেল যে সে অফিস থেকে বের হচ্ছিল। সবায় অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল।

"চল একটি বিদায়ের সেলফি তুলি" হেসে বলল আবদুল। আবদুল জোর করে রফিকের সাথে সেলফি তুলল। তারপরে রফিক ছোট বাচ্চাদের মতো কেঁদে অফিসের বাহিরে চলে গেল। তাদের 'বিদায় সেলফি' ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়ে গিয়েছিল। এই বিখ্যাত সেলফির কারণে অনেকের মনের আঘাত লেগেছিল। তাই তারা ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছিল, কিন্তু অনেকে মজার হিসাবে মনে করে তাকে ব্লক করে নেয়।

শান্তিপারা সমগ্র (Peaceland Trilogy Bangla Edition)Where stories live. Discover now