গাড়ি সুন্দরবনের রাস্তায় গেল। বাজে তখন সন্ধ্যা ৬টা। আব্দুল মোবাইলে মেইল চেক করছিল। তারপর কাগজটি হেয়াকে দিল। আব্দুল জানালা খোলার পর হেয়া উড়ে চলে গেল।
ড্রাইভার বলল "কবুতারকে ছেড়ে দিলেন কেন, স্যার?"
"সে আড় থাকতে চাচ্ছিল না, তাই আর কি" মিথ্যা বলল আব্দুল।
ড্রাইভার চুপ হয়ে গেল। গাড়ি আস্তে আস্তে বনের পাহাড়ের যায়গায় চলে গেলো। অন্ধকার ছিল, তাই ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চায়ের দোকানের সামনে দাড়ালো। আব্দুলের জন্য খাবার আনতে গেলো কিন্তু আব্দুল বাতাস খাওয়ার জন্য বের হল। তবে এক নারিকেল আব্দুলের মাথায় পড়ে গেলো এমনভাবে যে তার মাথায় চার পাসে ফাটা আলুর সাথে মুর্গির চেহারা দেখা যাচ্ছিল। তবে সে অজ্ঞ্যান হয়ে গেলো। দশটি বড় বড় বানরের দলেরা আব্দুলের অজ্ঞ্যান শরীরকে পিঁপড়ার মতো তাকে কোলে কোলে নিয়ে গেলো। যখন ড্রাইভার বানরদের এই অবস্থা দেখল, সে অবাক হয়ে গেলো। সাথে থামানোর চেষ্টা করছিল। তবে সাথে সাথে বানর দৌড়াতে লাগলো।
কিন্তু ইয়া ভাই, কি হল! এই অবস্থা হলে ড্রাইভার সাহেব আর মাথায় কাজ করছিল না, উপরওয়ালাই তার মন কন্ট্রোল করে দিয়েছিল। এর মধ্যে কিছু মহিলা বানর ড্রাইভার সাহেবকে জোরে চুমু দিল। ড্রাইভার মনের ভিতরে ছি ছি করলো। তিন জন বানরের এসে এমনভাবে ড্রাইভারকে মার দিল যে ড্রাইভার বানরদের ফেলে সে গাড়ির ভিতরে ঢুকল। গাড়ি চালানোর সময় বানর গ্লাস ভাংতে লাগলো। তারপর ড্রাইভার সাহেব বানরদের তামিল সিনেমার হিরো মতো ঘুষি মেরে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে গেলো। তারপরে আব্দুলের অজ্ঞ্যান শরীরটি পিঁপড়ার মতো জঙ্গলে নিয়ে গেলো।
এখন ভোর হল, আব্দুল জ্ঞ্যান ফিরলো। সে দেখল ঘোলা আঁকারে বানর। বানরটি বলল "হ্যালো স্যার"
"আমি কোথাই? এই যায়গাটা রার?" বলল আব্দুল।
"স্যার, আমার মনে হয় আপনি শান্তিপারায় আসছেন..." বলল ঘোলা রানর।
"আপনি কি যুবা সাহেব?" জিজ্ঞ্যাসা করলো আব্দুল।
আব্দুল ঠিক মতো দেখে বানরের চেহেরা দেখল। সে দেখতে একদম গোলগোলা, পান্ডার মতো কান, ভাল্লুকের মতো মুখ, নাক একদম বড় গোল। তার ভুঁড়ি একদম মোটা। দেখতে একদম কিউট। কিন্তু তার কথার ধারণটি ছিল ১৯ সতকের ইংরেজদের মতো।
"আমি যুবা নই, স্যার। যুবা স্যার, কিছুক্ষন পর দরবারে আসবেন। আমার নাম ক্যাপ্রেন, ক্যাপ্টেন ক্যাপ্রেন। ইটস এ প্লেসার টু মিট ইউ, স্যার" বলল ঘোলা বানর।
"আপনার সাথে কথা বলে অনেক খুশি হলাম, বিলাত সাহেব" বলল আব্দুল।
হঠাত, আব্দুল দেখল যে বানররের দলেরা সম্মান দিয়ে মাথা নীচু করলো। এক বিশালাকায় বানর, তার কাঠের বানানোর লাঠি নিয়ে, রাজার মতো ভাব নিয়ে আসতে ছিল।। সবায় চিৎকার দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছিল "ও যুবা, আসছে যুবা। ধর্ম আগে কর্ম পরে! আসছে, জয় যুবা!"
যুবার চাল চলন একদম রাজা এবং কিছুটি পাগলা বিজ্ঞানীদের মতো। আব্দুল একদম চমকে গেলো।
"আচ্ছা, এই জুয়ান ছেলে কি, আমাদের অতিথি?" জিজ্ঞ্যাসা করলো যুবা যখন সে আব্দুলের দিকে তাকালো।
" সে তো আমাদের রক্ষাকর্তা!" খ্যাক খ্যাক করে হেসে বলল যুবা। তার কন্ঠ প্রায় বয়স্ক লোকদের মতো ছিল। যাইহোক, তার কথা শুনে সবায় তালি বাজালো।
"শুনেন, আপনার সাথে ঠিক মতো কথা হয় নিই। এভেন কি, দেখাও হয় নি, আমি কেমন করে হলাম এই রক্ষাকর্তা ? আমি তো কিছু করি নিই, তার সাথে আমার সে রকম আদ্ধ্যাতিক শক্তিও নেয়। আপনি তো আমার কথার সুযোগ দিচ্ছেন না" বলল আব্দুল।
"তোমাকে হেয়া বা তোমার মা, ক্রিস্টাল বলের কিছু কথা বলে নিই? হাইরে মানুষ, কত রঙের হতে পারে! রড় হয়ে ফাটা আলু হয়ে গেছ এবং উলটাপালটা খেয়ে খেয়ে মগজের গাছটাও নষ্ট হয়ে গেছে। মনে হয় তোমার মগজের গাছের পানি দিতে হবে আর পরিবেসের বায়ু দুশন থেকে বাচাইতে হবে" বলল যুবা।
"স্যার, কি বলেন, বুঝছি না। তবে এইটুকু বুঝছি যে আমার মগজ ঠিক করতে হবে না" বলল আব্দুল।
"ও, ব্যাপার বুঝছি। তোমার মা অনেক কিছু গোপন করে রেখেছিল। যদি সে বেঁচে থাকতো, তাহলে সে তোমাকে অবলার কিছু কথা বলতো। যাইহোক, আস্তে আস্তে বুঝে যাবা। মাত্র তো এসেছো, বাবা। আমি তোমার জন্য একটি বাঁশ দিয়ে বানানো তাম্বু ব্যাবস্থা করেছি। ওইখানে, তুমি বিশ্রাম করতে পারো, বাবা" বলল যুবা।
আব্দুলের মাথায় অনেক প্রশ্ন গরুর মতো ঘুরছিল। তার মা কেন ক্রিস্টাল বলের কথা বলে নিই? সে কেমন করে শান্তিপারার রক্ষাকর্তা হল? এমন কি, যুবার সাথে ঠিক মতো কথাও বলতে পারে নিই, কিন্তু বার বার অবলার অভিশাপ ও তাদের ত্রাঙ্কর্তার উপর উল্লেখ করছিল কেন? আমরা আব্দুলের মায়ের কথা আরো ভালো করে জানতে পারবো? এইটা কি আসলে অজানা অভিসাপ না অজানা আশির্বাদ?
ESTÁS LEYENDO
শান্তিপারা সমগ্র (Peaceland Trilogy Bangla Edition)
Fantasía1- বনের ডাক জীবনে কিছু বিষয় আছে যেমন ভালোবাসা ও অহংকার। এই দুই অনুভুতিকে আমরা ভাগ করতে পারি না কারণ আমাদের মতো মনুষ্য প্রাণীতা কিছুটা বিচিত্র ধরণের। আমি, আজকে যে বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি সেটা নিয়ে আমার মনে নানা রকম প্রশ্ন তৈরি হয়। আমরা, মানুষের মতো...