ষষ্ট পর্ব

44 0 0
                                    

১১

বিপর্ণাদের বাড়িতে ঘটন-অঘটন সবকিছু ঘটে রাতের বেলা। কারন আলোচনা করার জন্য সবাইকে একসাথে সেই রাতের বেলাতেই পাওয়া যায়৷ ইমরান শান্তভাবে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করলো। খাবার টেবিলেও কিছু বললো না। খাওয়া শেষে ইমরুল ঘরে যেতেই পেছন পেছন ইমরানও গেলো। অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে বললো,
- ভাই, চলো মোড়ের দোকান থেকে চা খেয়ে আসি।

রাতেরবেলা চা খাওয়ার অভ্যাস ইমরুলের নেই। সে কথা সবাই জানে। শাম্মী ঘরেই ছিলো। ইমরানের কথায় অবাক হলেও কিছু বললো না। ইমরুলও বিনাবাক্যে ইমরানের সাথে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো।
রাত প্রায় দশটা বাজে। রাস্তাঘাটে তেমন মানুষজন নেই৷ দু ভাই পাশাপাশি হাঁটছে। নীরবতা ভেঙে ইমরান বললো,
- শুনলাম বিপর্ণার জন্য ছেলের খোঁজ চলতেছে?
- তেমন কিছু না। মা কয়েকদিন ধরে বলতেছিলো। আমরা দেখাদেখি শুরু করিনি। এর মাঝে দু একজনের প্রস্তাব আসছিলো।
- তার মধ্যে বাসিম একজন?
- তুই ওকে চিনিস?
- চিনতাম না। তোমরা যে আমার বোনের জন্য ছেলে দেখতেছো সেটাও জানতাম না।
- আহা! রাগ করতেছিস কেন? ওমন সিরিয়াস কিছু হলে তোকে নিশ্চয়ই বলতাম। দুটো প্রস্তাবই ছেলে পক্ষ থেকে এসেছে।
- আরেকজন কে?
- একজন পুলিশ। গাইবান্ধায় বাড়ি। আপাতত দুজনকেই না করে দেওয়া হয়েছে।
- তোমরা না করে দিলা আর ওরা মেনে নিলে ঝামেলা হতোই না।
- কীসের ঝামেলা?
- বাসিম ছেলেটা বিপর্ণার উপর নজরদারী করতেছে। আজকে ক্যাম্পাসে ডেকে জানতে চেয়েছে, ওকে না করে দেওয়ার কারন কি? ছেলেটা খুব একটা সুবিধার না ভাই। খোঁজ খবর নিয়ে ভালো রিপোর্ট পেলাম না। রাজনীতি করে। তবুও মানা যেতো। কয়েক মাস আগে পীরগঞ্জে ছাত্রলীগের ছেলেরা একটা ঝামেলা করছিলো। সেখানে বাসিমও ছিলো। এমনিতেই প্রচুর উগ্র৷ সারাদিন বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি আর ফুটবল খেলা ছাড়া কাজের কাজ কিছু করে না। সেসবের ভয় আমি পাচ্ছি না। একদিন ভালোমতো ধমক দিলে আর ঝামেলা করার সাহস পাওয়ার কথা না। কিন্তু ছেলেটা একটু জেদি, ত্যাদড় টাইপের। যেটা বিপর্ণার জন্য ক্ষতিকারক। রাস্তাঘাটে কথাবার্তা বললে মানুষজনের নজরে পরে যাবে। তাছাড়া শুনলাম আজকাল আমাদের বাড়ির সামনেও বেশ ঘুরাঘুরি করে। এদিকে তোমরা বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজতেছো। লোকজন খোঁজ করলে পাড়া প্রতিবেশীরাই বলবে বাসিমের সাথে রিলেশন আছে। কিছু না করেও বদনাম হতে হবে বিপর্ণাকে। ব্যাপারটা খুব সহজে মেটার নয়।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now