অষ্টম পর্ব

44 0 0
                                    

১৫

"একে তো নাচুনি বুড়ি, তার উপর ঢোলের বারি।"
কফি হাউসের হাঙ্গামার পর নাওয়া খাওয়া একপ্রকার ছেড়েই দিয়েছেন তামান্না৷ দিনরাত এক চিন্তায় অতিষ্ঠ হয়ে আছেন৷ ছেলে পক্ষ দেখতে এসে যদি এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়, তাহলে মেয়ের বিয়ে কীভাবে দিবেন! যেচে কেউ ঝামেলা যুক্ত পরিবেশে বিয়ে করতে নিশ্চয়ই চাইবে না। আহা রে! এতো ভালো ভদ্র ঘরের ছেলেটা হাত ফসকে বেড়িয়ে গেলো। তামান্নার মুখে সবসময় আফসোস লেগেই আছে। শুধু পারছেন না, এই নিয়ে মেয়েকে বকাবকি করতে। বাসিমের সাথে বিপর্ণার কোনো যোগাযোগ নেই এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। তবে যোগাযোগ হতে কতোক্ষণ! উঠতি বয়সের মেয়েরা বেপরোয়া, বেয়াদব, ক্ষেপাটে ছেলেকে বেশি পছন্দ করে। মারকুটে স্বভাবের প্রতি তাদের মনে দ্রুত আগ্রহ জন্মায়। অমোঘ টানে আটকা পরে চোরাবালিতে। ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকেন তামান্না। আজকে রাতে খাবার টেবিলে আরেকবার ইমরানকে প্রশ্ন করলেন,
- হ্যাঁ রে, ছেলেটার বাড়ি থেকে আর কোনো খবর আসেনি?

প্রতিদিন এক প্রশ্ন শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে গেছে ইমরান। বাড়িতে সবাই কমবেশি চিন্তা করছে। কিন্তু মায়ের চিন্তার মাত্রাটা অতিরিক্ত ভয়াবহ পর্যায়ের । মা হিসেবে একটু বেশি চিন্তা করাটা যদিও অস্বাভাবিক নয়। তাই সহ্য করে নেয় ইমরান।
- না মা। জানাবে বলেছিলো। এমন এক কান্ড ঘটে গেলো! এরপর নিজে থেকে কীভাবে যোগাযোগ করি বলো।

ভালো খারাপ যেভাবেই হোক, বিয়ের আলোচনায় ভাটা পরায় মনে মনে বেজায় খুশি বিপর্ণা। কিন্তু বাড়ির সবার চিন্তিত মুখের দিকে তাকিয়ে খারাপও লাগে। বায়েজীদ হোসেন কিছু বলেন না। আগের থেকে আরও বেশি চুপচাপ হয়ে গেছেন। বিপর্ণা চোরাচাহনিতে বাবার গম্ভীর মুখটি দেখে নিলো। মেয়ের প্রতি নিশ্চয়ই অসন্তুষ্ট হয়েছেন। কিন্তু এখানে বিপর্ণার দোষটাই বা কোথায়! দ্বিধা দ্বন্দ্বের মাঝে আটকা পরে আছে বিপর্ণা৷ বড্ড সাহস করে জানতে চাইলো,
- বাবা, তোমার কি মন খারাপ?

বিপর্ণার প্রশ্নে বাড়ির সকলে খানিকটা নড়েচড়ে বসলো। রাগী বায়েজীদ হোসেনকে কেউ ঘাটাতে যায় না। কিন্তু বাড়ির মেয়ের হিসাব বরাবরই আলাদা। বাবা যতোই রাগী হোক না কেনো, মেয়ের সাথে তার একটা উষ্ণ সম্পর্ক থাকবেই৷

অলীককায়াWhere stories live. Discover now