ঊনবিংশ পর্ব

53 1 0
                                    

৩৪

চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অদৃশ্য কায়া। ঘোর অন্ধকারে কারো নজরে না আসে তারা। কায়াবিহীন বস্তু যে, তাকে সবাই বলে অশরীরী। এখানে কোনো অশরীরী নেই। থাকলে নিজেই হয়তো পালিয়ে বাঁচতে চাইতো। আমাবস্যার এই আঁধার কেমন গা ছমছমে। দূর হতে করুণ কন্ঠে ডেকে উঠে কুকুরটা৷ ওর ডাকের সুর কেটে উঠতে না উঠতে আরেকপাশ থেকে অন্য একটু কুকুর ডেকে উঠলো। রাস্তার ধারে বড় কড়ই গাছটার সাথে যে চায়ের দোকানটা ওখানে ওদের একজন সঙ্গী থাকে। এরপর ওর সায় দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো সায় এলো না। ওদের দলে মোট দশজন। দিনের বেলা এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় খাদ্যের সন্ধানে। রাত নামতেই সবাই একসাথে হয়ে পাড়ায় টহল দেয়। অপরিচিত কোনো ব্যক্তির সাধ্য নেই ওদের টপকে পাড়ায় প্রবেশ করে। এই তো আর কিছুক্ষণ পর চৌরাস্তায় একখানে হওয়ার কথা ছিলো। সবাই পৌছে গেলেও চায়ের দোকানের সেই কুকরটা এলো না। সঙ্গীরা হয়তো দূর্ঘটনার আভাস পেয়েছে। করুণ স্বরে ডেকে উঠছে ক্ষণে ক্ষণে। পাড়া টহলের দায়িত্ব এড়িয়ে ওরা এগিয়ে আসছে চায়ের দোকানটির দিকে। বিচক্ষণ চোখগুলো কারো উপস্থিতির ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে অনেক আগেই। এখন শুধু স্বচক্ষে দেখা বাকি।
কড়ই গাছটির পেছনের গাঢ় অন্ধকারটি সামান্য নড়ে উঠলো। ডানদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
- কুকুরের পালটা একদিকেই আসতেছে৷ এখন কি হবে?
সুক্ষ্ম অন্ধকারে আরেকটি গাঢ় অন্ধকার নড়াচড়া করলো না। নিজ স্থানে অটল দাঁড়িয়ে থেকে বললো,
- আসতে দে৷
- ওর সঙ্গীর খোঁজে আসতেছে মনে হয়। ওরে তো মাইরা ফালাইছি। দেখে ঘেউ ঘেউ শুরু করে দিলে কেস খেয়ে যাবো বস।
- এই চুপ কর তো। এক কুত্তার বাচ্চার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে মশা প্রায় গিলে খাইতেছে তবুও শালার খবর নাই৷ তুই পরে আছিস আরেক কুত্তা নিয়ে৷ শালা মরলো কোন জায়গায়? এখনো আসে না কেন?
- আসতেছে হয়তো। ঘরে নতুন বউ রাইখা রাতে বেশিক্ষণ বাইরে থাকবে না।

দুজনের কথার মাঝে দূর অন্ধকার হতে একটি মোটরসাইকেলের আওয়াজ ভেসে এলো। মৃদু আওয়াজ তবুও সুনশান রাতে ওদের কানে ঠিকই পৌছে গেছে।
- বসরে তাড়াতাড়ি ফোন দে। কুত্তাগুলা আসার আগেই কেটে পরি।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now