দশম পর্ব

46 0 0
                                    

১৯
আইজামদের বাড়ি দেখে সারাদিন মনে হয়নি, এই বাড়িতে গতকাল নতুন বউ এসেছে। পাড়া প্রতিবেশীদের কোনো ভীড় নেই। নিজের ঘরে অলস সময় কেটে গেলো বিপর্ণার। বাজার সদাই কেনাকাটায় ব্যস্ত আইজাম। দুপুরবেলা হোসেন পরিবার গাইবান্ধা এসে নতুন দম্পতিকে নিয়ে রংপুর ফিরে এলো। নিজের ঘর, নিজের বাড়িতে বিপর্ণার নিজেকে মেহমান মনে হচ্ছে। আশেপাশের সকলে সেই রাতের বেলায় চলে এসেছে বিপর্ণার জামাইকে দেখতে। আইজাম সবার সাথে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখা করেছে, কথা বলেছে। রান্নাঘরে মা, ভাবিকে সাহায্য করছে বিপর্ণা। পোলাও, জর্দা পোলাও, গরু, মুরগী, গলদা চিংড়ি, ডাল, ডিম, আলু ভাজি, বেগুন ভাজি কতো কতো পদের আয়োজন! তিনজন মানুষ দুপুর থেকে একনাগাড়ে কাজ করেও কূল পাচ্ছে না। কাজের ফাঁকে বিপর্ণার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে ওরা দুজন। বুঝতে পেরেও এতোক্ষণ এড়িয়ে গিয়েছিলো বিপর্ণা। কিন্তু এবার শাম্মী সরাসরি জানতে চাইলো,
- তারপর, কেমন লাগলো শ্বশুরবাড়ি?
- হুম। ভালো।
- আর জামাই?
- ভালো।
- বনিবনা হয়েছে?
- না হলে কি ফিরিয়ে নিয়ে আসবে?

বিপর্ণার বাঁকা কথায় শাম্মী মুচকি হাসলো। অভিমানী মেয়েটা এখনো রাগ পুষে রেখেছে৷ রাতে খাওয়া দাওয়ার পর বিপর্ণা ফিরে গেলো নিজের চিরচেনা ঘরটাতে। যেখানে ইতিমধ্যে আধিপত্য জমিয়েছে আইজাম৷ বিছানায় আধাশোয়া হয়ে শুয়ে বিপর্ণার পড়ার টেবিল থেকে নেওয়া উপন্যাসের একটি বই পড়ছিলো। বিপর্ণাকে ঘরে প্রবেশ করতে দেখে বই থেকে মাথা তুলে প্রশ্ন করলো,
- সাহিত্যে আগ্রহ আছে তোমার?
- টুকটাক পড়তাম।
- সংগ্রহে সব রোমান্টিক উপন্যাস।
- কারন আমার রোমান্টিক জনরার বই পড়তে ভালো লাগে। কোনো সমস্যা?
- নাহ। আমার কি সমস্যা হবে!
- রাত অনেক হয়েছে। ঘুমাবে এসো।
- আপনি শুয়ে পরুন। আমার ঘুম আসছে না।
- ওখানে টেবিল চেয়ারে বসে থাকলে কীভাবে ঘুম আসবে? বিছানায় এসে শোয়।
- আমি এখানেই ঠিক আছি৷
- এক বিছানায় শুতে সমস্যা? গতকাল আমরা এক বিছানাতেই ঘুমিয়েছি। তখন সমস্যা হয়নি?
- কারন ওটা আপনার ঘর ছিলো। আর এটা আমার ঘর।
- তো?
- বাদ দিন। আপনি বুঝবেন না।
- বুঝিয়ে বলো।

অলীককায়াWhere stories live. Discover now