৪০

29 2 0
                                    

৭০

সময় তখন পোনে দশটা। চট্টগ্রাম শহরের ব্যস্ত একটি সড়ক ধীরে ধীরে জনমানবশূণ্য হতে শুরু করেছে। কি ভেবে যেনো প্রকৃতিও আজ নিজেকে ঢেকে নিয়েছে কুয়াশার চাদরে।

হঠাৎ করে শুরু হওয়া এই হাড় কাঁপানো শীতের কারনে শহরবাসী দ্রুত ফিরে গেছে নিজস্ব নীড়ে। কেউ হয়তো জড়োসড়ো হয়ে বসে চুমুক দিচ্ছে চায়ের কাপে। কেউ হয়তো কম্বল মুড়ে শুয়ে পরেছে বিছানায়।
দু হাতের তালু একসঙ্গে ঘষে তাপ উৎপন্ন করে আইজাম চেষ্টা করছে শীতের প্রভাব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার। গায়ে হুডি পরা থাকলেও সেটি কোনো সুরক্ষা দিতে পারছে না। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত যেকোনো ঋতুতে, যে কোনো সময়ে প্রয়োজন হয় এই পোশাকটির। তাই আরামদায়ক কাপড় দিয়ে তৈরী করা হয়েছে।

অন্ধকার সড়কের একপাশে আড়ালে রেখেছে বাইকটি। নিজেও দাঁড়িয়ে আছে গাছের আড়ালে। দূর থেকে একটি ট্রাককে আসতে দেখে সচেতন হলো। পেছনের নেমপ্লেট দেখে নিশ্চিত হয়ে মাস্ক পরে ঢেকে ফেললো মুখশ্রী। হুডির টুপি তুলে দিয়ে বাইক নিয়ে যেতে শুরু করলো ট্রাকটির পিছু পিছু।গতি বাড়িয়ে কখনো ট্রাকটিকে পেরিয়ে যাচ্ছে, কখনো চলে যাচ্ছে পেছনে।

ট্রাকটির ড্রাইভিং এরিয়ায় দুজন মানুষ থাকার কথা ছিলো। কিন্তু আইজাম দেখলো, সেখানে তিনজন বসে আছে। সম্পূর্ণ ফাঁকা একটি ট্রাক এর জায়গায় এই ট্রাকে কয়েকটি বড় প্যাকেট দেখা যাচ্ছে। ট্রাকের মেঝেতে বসে পাঁচজন ব্যক্তি। প্রত্যেকের হাতে জ্বলন্ত সিগারেট। আয়েশ করে তাতে টান দিচ্ছে।  শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এর থেকে সহজ পন্থা পুরুষ জাতির জানা নেই। নিজেদের মধ্যে গল্প করছে এবং কিছু একটা নিয়ে হাসাহাসি করছে।

কুয়াশা ঢাকা রাত্রে স্ট্রীটলাইটের আলো উজ্জ্বলতা ছড়াতে পারছে না। বাইকের হেডলাইটের আলোয় যতোটুকু দেখা যাচ্ছে তাতেই ভরসা করে আইজাম এগিয়ে যাচ্ছে।

এক হাতে পকেট হাতড়ে ব্লুটুথ ইয়ারফোনটি বের করে কানে সেট করলো। চোখের পলকে ট্রাকটি বামদিকের বাঁক ঘুরে দৃষ্টি সীমানার বাইরে চলে যেতে দেখে আইজামকে বাধ্য হয়ে মনযোগ দিতে হলো রাস্তার দিকে। ট্রাকের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর গ্রুপ কলে সবার আপডেট জানতে চাইলো। ওপাশ থেকে ভেসে এলো একেকটি কন্ঠস্বর।  “এন টু  (N2) অন পজিশন, ও থ্রি (O3) অন  পজিশন, জেড ফোর (Z4) অন  পজিশন....”

অলীককায়াWhere stories live. Discover now